Advertisement
২৪ ডিসেম্বর ২০২৪
Coronavirus in West Bengal

পরীক্ষা করাচ্ছেন না অনেকে, বনগাঁ শহরে আক্রান্তের সংখ্যা ১০০ ছাড়াল

শহরের সচেতন বাসিন্দাদের অভিযোগ, লালারস দিয়ে এসে রিপোর্ট আসার আগেই অনেকেই বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়ছেন। পরে জানা যাচ্ছে তাঁরা করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বনগাঁ শেষ আপডেট: ১৭ অগস্ট ২০২০ ০৪:৫১
Share: Save:

ওষুধ নিতে এসেছিলেন এক যুবক। জ্বর, সর্দি-কাশিতে ভুগছেন। স্বাদ-গন্ধ নেই। ওষুধ দোকানি তাঁকে বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে যেতে বলেন। কিন্তু তাতে তিনি রাজি হননি।

বনগাঁ শহরের ঘটনা। করোনার উপসর্গ থাকলেও অনেকেই হাসপাতালে যেতে চাইছেন না করোনা পরীক্ষার জন্য। এক ওষুধ দোকানির কথায়, ‘‘হাসপাতালে যেতে বললে অনেকেই অনিচ্ছা প্রকাশ করছেন। বলছেন, আমার করোনা হবে না। হাসপাতালে যেতে কেউ কেউ ভয়ও পাচ্ছেন।’’

শহরের বাসিন্দারা বলেন, ‘‘শহরের কিছু মানুষের মধ্যে সচেতনতার অভাব আছে। জ্বর, সর্দি-কাশি হলেও মানুষ লালারস পরীক্ষা করাচ্ছেন না। বাড়িতে থেকে ওষুধের দোকান থেকে ওষুধ কিনে খাচ্ছেন। লালারস পরীক্ষা করালে করোনা পজ়িটিভ হলে কোনও হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে, পারিপার্শ্বিক চাপ এবং সামাজিক ভাবে বয়কট হওয়ার আশঙ্কা থেকে মানুষ উপসর্গ নিয়েও বাড়ি বসে থাকছেন। এর ফলে সংক্রমণ আরও বেশি করে ছড়িয়ে পড়ছে। এ বিষয়ে মানুষকে সচেতন করতে হবে।’’

শহরের সচেতন বাসিন্দাদের অভিযোগ, লালারস দিয়ে এসে রিপোর্ট আসার আগেই অনেকেই বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়ছেন। পরে জানা যাচ্ছে তাঁরা করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। উপসর্গ থাকলেও লালারস পরীক্ষা না করাটা এলাকার মানুষের এবং নিজের পরিবারের জন্য বিপজ্জনক বলেই মনে করছেন চিকিৎসকেরা। উপসর্গ থাকা এক ব্যক্তির কথায়, ‘‘হাসপাতালে গেলে ভর্তি করে নিতে পারে। তা ছাড়া, লালারস পরীক্ষায় পজ়িটিভ এলে কোথায় পাঠিয়ে দেবে ঠিক নেই। পরিবারের উপরেও নানা চাপ আসতে পারে। এ সব ঝক্কি কেন নিতে যাব। তা ছাড়া, দিনের দিন পরীক্ষা করা হয় না।’’ ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের বনগাঁ শহরের সম্পাদক আশিসকান্তি হীরা বলেন, ‘‘ভয় এবং নিরাপত্তাহীনতার কারণে অনেকে এমন করছেন। তাঁরা মনে করছেন, করোনা পজ়িটিভ হলে কোথাও ধরে নিয়ে যাবে। পরিবারের সঙ্গে সম্পর্ক থাকবে না। তবে তাঁদের বোঝা দরকার, অন্তত পরিবারের লোকজনকে রক্ষা করতে দ্রুত চিকিৎসা শুরু করা জরুরি। এতে মৃত্যুর হার কমবে। চিকিৎসা দেরি করে শুরু করলে মৃত্যুর হার বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।’’ উপসর্গ থাকলে লালারস পরীক্ষা করতে হবে বলে তিনি জানান।

বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালের সুপার শঙ্করপ্রসাদ মাহাতো বলেন, ‘‘রোজ হাসপাতালে কম করে ১০০ জনের করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা রয়েছে। লালারস এবং র্যা পিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষার মাধ্যমে তা করা হচ্ছে। উপসর্গ নিয়ে কেউ হাসপাতালের জরুরি বিভাগ বা বহির্বিভাগে এলে তাঁরও করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’’

এ দিকে, বনগাঁ শহরে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ১০০ ছাড়িয়ে গেল। নিয়মিত ভাবে এখানে মানুষ নতুন করে আক্রান্ত হচ্ছেন। এত কিছুর পরেও কিছু মানুষ সচেতন নন। বনগাঁর পুরপ্রশাসক শঙ্কর আঢ্য বলেন, ‘‘রবিবার পর্যন্ত বনগাঁ শহরে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১২৮ জন। এর মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ৫২ জন। চিকিৎসাধীন ৭২ জন। ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।’’ পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার শহরের ১১ জন বাসিন্দা নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। শনিবার বনগাঁ থানার ৩ জন পুলিশ অফিসার করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন আইসি মানস চৌধুরী। দমকল এবং পুরসভার পক্ষ থেকে থানা চত্বর জীবাণুমুক্ত করা হয়েছে।

শঙ্কর বলেন, ‘‘মানুষকে সচেতন করতে লাগাতার প্রচার কর্মসূচি চলছে। স্বাস্থ্যকর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে মানুষকে সচেতন করছেন। শরীরের তাপমাত্রা মাপছেন। কেউ অসুস্থ থাকলে লালারস পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। লালারস পরীক্ষার রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত পরিবারের লোকজনকে বাড়িতে থাকতে বলা হচ্ছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus in West Bengal Bangaon
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy