‘অম্বেডকর, অম্বেডকর করা এখন ফ্যাশন হয়ে দাঁড়িয়েছে’—বলে সংসদে অমিত শাহের মন্তব্যকে হাতিয়ার করে নতুন করে বিজেপিকে দলিত-বিরোধী প্রমাণ করতে চাইছে কংগ্রেস। সেই হাতিয়ারে আরও ধার বাড়িয়ে আজ রাহুল গান্ধী মহারাষ্ট্রের পরভণীতে হাজির হলেন। গত ১০ ডিসেম্বর পরভণীতে অম্বেডকরের মূর্তির সামনে রাখা সংবিধানের প্রতিলিপি নষ্ট করার ঘটনাকে ঘিরে হিংসা ছড়ায়। সেই হিংসায় পরে ধৃত আইনের ছাত্র সোমনাথ সূর্যবংশীর জেল হেফাজতে মৃত্যু হয়। আজ লোকসভার বিরোধী দলনেতা তথা কংগ্রেস সাংসদ রাহুল অভিযোগ তুলেছেন, দলিত বলেই ওই তরুণকে মেরে ফেলা হয়েছিল। আরএসএসের মতাদর্শ থেকে এই রকম অবিচার হয়।
রাহুল আজ পরভণীতে সোমনাথের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন। সেখানে তিনি একই সঙ্গে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফডণবীস ও আরএসএস-কে নিশানা করেছেন। রাহুলের অভিযোগ, তিনি পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছেন। ময়না তদন্তের রিপোর্ট দেখেছেন। ভিডিয়ো, ছবি দেখেছেন। তাঁর মতে, সোমনাথের মৃত্যু ১০০ শতাংশ ‘হেফাজতে অত্যাচারের ফলে’ মৃত্যুর ঘটনা।ফডণবীস পাল্টা অভিযোগ তুলেছেন, রাহুলের পরভণী সফর রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেপ্রণোদিত। তরুণের মৃত্যুর ঘটনায় বিচারবিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তদন্তে কাউকে দোষী পাওয়া গেলে কঠোর শাস্তি হবে। তবে সিসি ক্যামেরার ফুটেজে জেলে কোনও অত্যাচারের প্রমাণ মেলেনি। দিল্লিতে বিজেপির সদর দফতর থেকে রবিশঙ্কর প্রসাদ বলেন, ‘‘অম্বেডকরের প্রতি কংগ্রেসের ভালবাসা হঠাৎ করে বেড়ে গিয়েছে। এ সব কংগ্রেসের নাটক ছাড়া কিছু নয়।’’ অমিত শাহের বিরুদ্ধে ‘মিথ্যে অভিযোগ’ তোলার জন্য বিজেপি রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিজেপির দাবি, ক্ষমা চান রাহুল।
উল্টো দিকে, রাহুল পাল্টা অভিযোগ তুলেছেন, মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী মিথ্যে বলছেন। পরভণীর হিংসায় নিহত বিজয় ওয়াকোড়ের পরিবারের সঙ্গেও রাহুল দেখা করেছেন। অম্বেডকর বিতর্ক নিয়ে দেশ জুড়ে আজ কংগ্রেস নেতারা সাংবাদিক সম্মেলন করেন। আগামী কাল কংগ্রেস দেশ জুড়ে অম্বেডকরসম্মান মিছিল করবে। আজ সিপিএম, সিপিআই, সিপিআই (এম-এল) লিবারেশন, আরএসপি, ফরওয়ার্ড ব্লক— এই পাঁচ বাম দলও অম্বেডকরের বিরুদ্ধে ‘অপমানজনক’ মন্তব্যের জন্য শাহের ইস্তফার দাবি তুলেছে। বামেরা ৩০ ডিসেম্বর দেশ জুড়ে বিক্ষোভ দেখাবে।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)