Advertisement
১৮ জানুয়ারি ২০২৫
Coronavirus in West Bengal

বারান্দায় থাকত রোগী, এখন বেড ফাঁকা

ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে বর্তমানে ৪০ জন চিকিৎসক ও ১০২ জন নার্স রয়েছেন।

ক্যানিং মহকুমা হাসপাতাল চত্বর। নিজস্ব চিত্র

ক্যানিং মহকুমা হাসপাতাল চত্বর। নিজস্ব চিত্র

প্রসেনজিৎ সাহা
শেষ আপডেট: ৩০ জুন ২০২০ ০৩:৪৩
Share: Save:

কিছু দিন আগেও রোগীদের ভিড়ে নড়াচড়া করা যেত না। তবে মাস তিনেক হল ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালের সেই চেনা ছবি উধাও। করোনা পরিস্থিতিতে হাসপাতালে আসা রোগীর সংখ্যা অনেকটাই কমেছে। হাসপাতাল সূত্রের খবর, গত এক মাসে সংখ্যাটা সব থেকে কম।

ক্যানিং, গোসাবা, বাসন্তী ব্লক-সহ সুন্দরবনের একটা বড় অংশের মানুষের অন্যতম ভরসা এই হাসপাতাল। খাতায় কলমে শয্যা সংখ্যা ১৬৮। তবে অন্তর্বিভাগে কমবেশি শ’তিনেক রোগীর চিকিৎসা চলত নিয়মিত। সেখানে এখন ১২৫-১৩০ জন রোগী ভর্তি আছেন। পাশাপাশি বহির্বিভাগে চিকিৎসার জন্য রোজ আসতেন বারোশো থেকে পনেরোশো রোগী। গত তিন মাসে সেই সংখ্যাটাই কমে দাঁড়িয়েছে চারশোয়।

হাসপাতাল সূত্রের খবর, অসুস্থ হয়ে রোগীরা হাসপাতালে ভর্তি হলেও সামান্য সুস্থবোধ করলেই বাড়ি ফিরতে চাইছেন। চিকিৎসকেরা রাজি না হলে কার্যত বন্ডে সই করে নিজেদের দায়িত্বে হাসপাতাল থেকে চলে যাচ্ছেন অনেকে। হাসপাতালের এক চিকিৎসকের কথায়, “করোনা আতঙ্কেই হাসপাতালে কমেছে রোগীর সংখ্যা। আগে যেখানে হাসপাতালে রোগীদের ভিড় লেগেই থাকত, সেখানে বর্তমানে সেটা অনেকটাই ফাঁকা। সব থেকে বড় কথা, আগে সম্পূর্ণ সুস্থ না হয়ে হাসপাতাল থেকে রোগীরা ফিরতেই চাইতেন না। সেখানে এখন সামান্য সুস্থ হলেই তাঁরা বাড়ি ফিরতে চাইছেন।”

ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে বর্তমানে ৪০ জন চিকিৎসক ও ১০২ জন নার্স রয়েছেন। এই পরিকাঠামো নিয়ে প্রচুর পরিমাণ রোগীদের চাপ সামাল দেওয়া কিছু দিন আগেও যথেষ্ট মুশকিল হত। কিন্তু করোনা সংক্রমণের পর থেকে বর্তমানে সেই চাপ অনেকটাই কমেছে বলেই দাবি করছেন হাসপাতালের নার্সরা। সম্প্রতি ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালের এক চিকিৎসক করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পরে রোগীর সংখ্যা আরও কমেছে।

পাশাপাশি ক্যানিং শহরে করোনা আক্রান্তের সন্ধান মিলতে শুরু করায় হাসপাতালেও ভিড় কমতে শুরু করেছে। হাসপাতালের এক কর্মী জানান, অন্তঃবিভাগে শুধুমাত্র প্রসূতি বিভাগেই রোগীর সংখ্যা সেভাবে কমেনি। বাকি পুরুষ বিভাগ, মহিলা বিভাগ, আইসোলেশান ওয়ার্ড সবেতেই রোগীর সংখ্যা কমেছে।

হাসপাতাল সুপার অর্ঘ্য চৌধুরী বলেন, ‘‘আগের তুলনায় রোগীর সংখ্যা বেশ খানিকটা কমেছে। আগে নির্দিষ্ট ওয়ার্ডে রোগীদের রাখার জায়গা হত না। বাধ্য হয়ে বারান্দা বা অন্যত্র রাখতে হত অতিরিক্ত রোগীদের। বর্তমানে হাসপাতালের অনেক বেড ফাঁকাই আছে।”

চিকিৎসকরা জানান, সামান্য কাটাছেঁড়া বা দুর্ঘটনায় যে সমস্ত রোগীরা হাসপাতালে আসতেন, তাঁদের অনেকেই এখন হাসপাতালে না এসে বাড়িতে ঘরোয়া চিকিৎসা করছেন। এ ছাড়া, অন্যান্য সমস্যায় অনেকেই ফার্মেসি থেকে ওষুধ কিনে খাচ্ছেন। কিন্তু এতে বিপদের আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে বলে দাবি চিকিৎসকদের।

ক্যানিং হাসপাতালের অনেক চিকিৎসক ও নার্স ক্যানিং স্টেডিয়ামে তৈরি অস্থায়ী কোভিড হাসপাতালেও কাজ করছেন। ফলে মানুষের মধ্যে একটা আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। এর জেরেও ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা অনেকটা কমেছে বলে মনে করছেন চিকিৎসকদের একাংশ।

হাসপাতালে চাপ কমলেও গত কয়েক মাসে এলাকার গ্রামীণ চিকিৎসকদের কাছে রোগীদের ভিড় বেশ বেড়েছে। হাসপাতালে এলে করোনা সংক্রমণ বাড়তে পারে, সেই ভয়েই রোগীরা ভিড় জমাচ্ছেন বলেই দাবি গ্রামীণ চিকিৎসকদের। ক্যানিংয়ের হেড়োভাঙা এলাকার গ্রামীণ চিকিৎসক আশরাফ হালদার বলেন, “গত বেশ কিছু দিন ধরেই রোগীদের আনাগোনা বেড়েছে আমাদের কাছে। তবে জটিল কিছু দেখলে তাঁদের হাসপাতালে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।”

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus in West Bengal Coronavirus
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy