ফাইল চিত্র
চাহিদা আকাশছোঁওয়া। কিন্তু ধাক্কাটা জোগানে। তার ফলে করোনা-আতঙ্কে হাহাকার শুরু হয়েছে হ্যান্ড-স্যানিটাইজ়ার এবং মাস্ক নিয়ে। ছবিটা সর্বত্রই এক, শহর থেকে শুরু করে গাঁ-গঞ্জের বাজার— নাই নাই রব। কোনও কোনও দোকানে যা-ও বা মিলছে, তার দাম সাধারণের নাগালের বাইরে। হাহাকারের চারিয়ে যাচ্ছে আতঙ্ক। দুই ২৪ পরগনার বাজারগুলিতে এক চাহিদার তালিকায় পয়লা নম্বরে রয়েছে এ দু’টি পণ্য।
বসিরহাটে গত দু’সপ্তাহ ধরে হ্যান্ড-স্যানিটাইজ়ার ও এন-৯৫ মাস্কের চাহিদা শুরু হয়েছে। দেশে করোনাভাইরাসের থাবা যত চওড়া হচ্ছে, আতঙ্ক ততই বেশি ছড়াচ্ছে। তাই গঞ্জের ওষুধের দোকানেও দু’বেলা মানুষ মাস্কের জন্য হত্যে দিয়ে পড়ে থাকছেন।
ধুলোর হাত থেকে নাক বাঁচাতে যে সাধারণ মাস্ক ব্যবহার করা হয়, তা-ও এখন প্রায় অমিল। এন-৯৫ মাস্ক না মেলার জন্য অনেকেই সেই মাস্ক কিনছেন। চাহিদা বাড়তে থাকায় চড়চড়িয়ে দাম বাড়ছে তারও। ৩০-৫০ টাকার মাস্ক বিক্রি হচ্ছে ৬০-৮০ টাকায়।
হিঙ্গলগঞ্জ বাজারের বেশ কয়েকটি দোকানে খোঁজ নিয়ে দেখা গেল, হ্যান্ড-স্যানিটাইজ়ার নেই। এন-৯৫ মাস্ক তো দূর, সাধারণ মাস্কও নেই বেশিরভাগ দোকানে। সাহেব গাজী নামে এক দোকান মালিক বলেন, ‘‘গত দু’সপ্তাহ ধরে মাস্ক ও হ্যান্ড-স্যানিটাইজ়ার আমরাই পাচ্ছি না। দু’-এক দিনের মধ্যে ফের যাব। জানি না, পাওয়া যাবে কিনা।’’
সাহেব জানান, আগে হ্যান্ড-স্যানিটাইজ়ার মাসে দশ-পনেরোটা বিক্রি হতো। আর করোনা-আতঙ্কে রোজ ১০-১৫ জন ফিরে যাচ্ছেন।
বাজারের এক ওষুধের দোকানে হ্যান্ড-স্যানিটাইজ়ার রয়েছে। কিন্তু তা এক লিটারের। দোকানের মালিক দীনবন্ধু ঘোষ বলেন, ‘‘গত কয়েকদিনে ছোট মাপের যত হ্যান্ড-স্যানিটাইজার ছিল, বিক্রি হয়ে গেছে। তবে বড় হ্যান্ড-স্যানিটাইজ়ার কেউ নিতে চাইছে না।’’ একই ছবি দেখা গেল হাসনাবাদেও। হ্যান্ড-স্যানিটাইজ়ার এবং মাস্কের খোঁজে অনেককে ফিরে যেতে দেখা গেল।
ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের বিভিন্ন শহরেও হ্যান্ড-স্যানিটাইজ়ার এবং মাস্ক নিয়ে কালোবাজারি শুরু হয়েছে বলে অভিযোগ।
বেশিরভাগ দোকানে মাস্ক নেই। কোনও দোকানে থাকলেও এন-৯৫ মাস্কের দাম ৫০০ টাকা থেকে শুরু।
কাঁচরাপাড়ার বাসিন্দা শ্যামসুন্দর সরকার বললেন, ‘‘গত সপ্তাহে যে মাস্ক ৩০০ টাকা দিয়ে কিনেছিলাম, রবিবার তারই দাম ৫৫০ টাকা চাইছে। চাইলেও বাড়ির সকলের জন্য মাস্ক কিনতে পারছি না। যা হওয়ার হবে।’’
কালোবাজারির অভিযোগ অবশ্য মানছেন না ওষুধ ব্যবসায়ীরা। ব্যারাকপুরের এক ওষুধ ব্যবসায়ী জানান, তাঁদেরকেই চড়া দামে মাস্ক কিনতে হচ্ছে। ফলে বেশি দামে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন তাঁরা।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগর এলাকায় মাস্ক এবং স্যানিটাইজ়ারের চাহিদা তুঙ্গে। ওষুধের দোকানের কর্মীরা জানান, এন-৯৫ মাস্ক মিলছে না। ফলে সাধারণ মাস্কই রাখতে হচ্ছে। তাও চাহিদা বেশি হওয়ায় জোগান দিয়ে ওঠা যাচ্ছে না। ৩০-৪০ টাকা দামের মাস্ক বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকায়।
দক্ষিণ বারাসত এলাকার এক বিক্রতার কথায়, ‘‘যে মাস্ক মাসে ২-৩টিও বিক্রি হতো না, তারই চাহিদা দিনে ৩০০-৪০০ টা। অত জোগান নেই।
একই ভাবে বিকোচ্ছে স্যানিটাইজ়ারও। বিক্রেতারা জানান, খুব বেশি মানুষ স্যানিটাজ়ার কিনতেন না। এখন অনেকেই চাইছেন। নিমেষে শেষ হয়ে যাচ্ছে সব। স্যানিটাইজ়ার না পেয়ে অনেকে হ্যান্ড-ওয়াশ কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।
ডায়মন্ড হারবারের ওষুধ দোকান গুলিতে মাস্ক কেনার হিড়িক দেখা গিয়েছে।
দোকানদাররা জানান, আপাতত যতটা মজুত ছিল তা বিক্রি হচ্ছে। দাম ৫০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy