Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Inspection

ভোটের মুখে পরিদর্শন, বিধি ভাঙার অভিযোগ

বাগদায় অনেক নদী, খাল, বিল, বাঁওর আছে। পাকা সেতু না থাকায় মানুষ কোথাও বাঁশের সাঁকো, কোথাও কাঠের সাঁকো তৈরি করে যাতায়াত করেন। কোথাও আবার নদীতে সাঁকো না থাকায় নৌকায় যাতায়াত করতে হয়।

সাঁকো পরিদর্শন করছেন নারায়ণ গোস্বামী।

সাঁকো পরিদর্শন করছেন নারায়ণ গোস্বামী। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বাগদা শেষ আপডেট: ০৩ জুলাই ২০২৪ ০৮:৫৬
Share: Save:

বাগদার একাধিক এলাকায় সোমবার নদী, বাওড়ের উপর তৈরি বাঁশ ও কাঠের সাঁকো পরিদর্শন করলেন উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সভাধিপতি নারায়ণ গোস্বামী। এই সব এলাকায় কংক্রিটের সেতু তৈরির দাবি দীর্ঘদিনের। পাকা সেতু তৈরির লক্ষ্যেই এই পরিদর্শন বলে ইঙ্গিত মিলেছে নারায়ণের কথায়। তবে উপনির্বাচনের মুখে জেলা সভাধিপতির এই পরিদর্শন ঘিরে নির্বাচনী বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে।

বাগদায় অনেক নদী, খাল, বিল, বাঁওর আছে। পাকা সেতু না থাকায় মানুষ কোথাও বাঁশের সাঁকো, কোথাও কাঠের সাঁকো তৈরি করে যাতায়াত করেন। কোথাও আবার নদীতে সাঁকো না থাকায় নৌকায় যাতায়াত করতে হয়। বর্ষায় জল বাড়লে খেয়া পারাপার বন্ধ হয়ে যায়। অতীতে সাঁকো ভেঙে জখম হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ভোটের আগে পাকা সেতু তৈরি নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলি প্রতিশ্রুতি দেয়। কিন্তু ভোট মিটলে সেতু আর হয় না।

আগামী ১০ জুলাই বাগদা বিধানসভার উপনির্বাচন। তার আগে সোমবার বাগদা বিধানসভার বেশ কিছু সাঁকো পরিদর্শন করেন নারায়ণ গোস্বামী। অন্যান্য জায়গার সঙ্গে তিনি গিয়েছিলেন সিন্দ্রাণী এলাকায় রাঘবপুর বাঁওড়ে। সেখানে মানুষের পাঁকা সেতুর দাবি দীর্ঘদিনের। স্থানীয় বাসিন্দা নিমাই দাস বলেন, “নড়বড়ে সাঁকো দিয়ে যাতায়াত করতে হয় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে। কয়েক বছর আগে সাঁকো ভেঙে বাইক নিয়ে পড়ে গিয়েছিলাম। হাসপাতালে ভর্তি ছিলাম। আমরা চাই পাকা সেতু হোক।”

রাঘবপুর বাওড়ের উপর কয়েক বছর আগে পাকা সেতুর শিলান্যাস হয়েছিল। পরে কাজ হয়নি। নারায়ণ বলেন, “উপেন বিশ্বাস বাগদার বিধায়ক থাকাকালীন রাঘবপুর বাঁওড়ের উপর সেতু তৈরির জন্য বিধায়ক তহবিল থেকে ৩২ লক্ষ টাকা অনুমোদন করেছিলেন। টেন্ডার হয়। পরে ঠিকাদার এবং ইঞ্জিনিয়াররা এসে দেখেন ৩২ লক্ষ টাকায় সেতুর এক চতুর্থাংশ কাজও করা সম্ভব নয়। তখন প্রকল্পটি বাতিল হয়েছিল।” বাগদার কাশীপুর, চরমণ্ডল, দিয়ারা, রাঘবরপুর, ঝুপা, হাদিখালি, বাগী-সহ বিভিন্ন এলাকায় মূলত কোদালিয়া এবং ইছামতী নদীর উপরেই পাকা সেতুর দাবি রয়েছে।

নারায়ণ এ দিন কয়েকটি সাঁকো ঘুরে বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। পরিদর্শনের রিপোর্ট মুখ্যমন্ত্রী জমা দিতে বলেছেন। এখন নির্বাচনী বিধি কার্যকর হয়েছে। ফলে ভেবে চিন্তে কথা বলতে হচ্ছে। তবে জেলা সভাধিপতি যখন কোনও প্রকল্প দেখতে যান, ধরে নেওয়া যায় আজ বা কাল ইতিবাচক কিছু ঘটবে।”

বাগদার উপনির্বাচনে বাম প্রার্থী গৌর বিশ্বাস বলেন, “বাগদার মানুষের তৃণমূল সম্পর্কে ধারণা খুবই খারাপ। সে কারণে ভোটের মুখে মানুষকে সেতু তৈরির মিথ্যে প্রতিশ্রুতি দিতে হচ্ছে। বহু বছর ধরে আমরা সেতুগুলির দাবি করছি। তখন মনে পড়েনি তৃণমূল নেতাদের। এখন ভোটের সময় সেতু পরিদর্শন করে নির্বাচন বিধি লঙ্ঘন করেছেন জেলা সভাধিপতি।” বিজেপির বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি দেবদাস মণ্ডল বলেন, “নির্বাচনী আচরণ বিধি চলছে। জেলা সভাধিপতি কী করে এখন সেতু পরিদর্শন করতে পারেন? তৃণমূল ১৩ বছর ক্ষমতায় আছে। এত দিন সেতু তৈরির কথা মনে পড়েনি? বাগদার মানুষকে ভাঁওতা দিয়ে লাভ নেই। কারণ তাঁরা জেনে গিয়েছেন তৃণমূল সরকার সেতুগুলি তৈরি করবে না।”

নির্বাচন বিধি নিয়ে নারায়ণ বলেন, “আমি পরিদর্শন করেছি মাত্র। কোনও প্রতিশ্রুতি দিইনি। আচরণ বিধি লঙ্ঘন হয়নি।”

অন্য বিষয়গুলি:

Inspection Law violation Bagdah
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy