Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪
Vehicle Theft Racket

থানা থেকেই গাড়ি ‘চুরি’, কোর্টের রোষে উর্দিধারীরা

তদন্তে নেমে পুলিশ তিনটে গাড়ি উদ্ধার করে এবং নিম্ন আদালতে দেওয়া রিপোর্ট অনুযায়ী বাজেয়াপ্ত ওই গাড়িগুলি বাগুইআটি থানা চত্বরে রেখে দেয়।

কলকাতা হাই কোর্ট।

কলকাতা হাই কোর্ট। —ফাইল চিত্র।

শেষ আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০২৪ ০৯:১৯
Share: Save:

খোদ থানা থেকেই ‘চুরি’ গিয়েছে গাড়ি। তা-ও আবার তিন-তিনটি! বাজেয়াপ্ত করা গাড়ি নাকের ডগা থেকে চুরি হলেও পুলিশ কিছুই করতে পারেনি। অভিযোগ, গাড়ির মালিক নিজের সম্পত্তি ফেরত পাওয়ার আর্জি জানালে তবে পুলিশ এফআইআর করে। বাগুইআটি থানার এমন ‘কীর্তি’ দেখে বৃহস্পতিবার রীতিমতো বিস্মিত কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ। তাঁর পর্যবেক্ষণ, নিজেদের দোষ ঢাকতে পুলিশ এফআইআর করেছে। এ নিয়ে বিধাননগরের নগরপালের বিস্তারিত রিপোর্ট তলব করেছেন তিনি। ১২ ডিসেম্বর মামলার পরবর্তী শুনানিতে নগরপালের রিপোর্ট এবং কেস ডায়েরি জমা দিতে বলেছেন বিচারপতি।

প্রসঙ্গত, গত কয়েক দিন ধরেই বিধাননগর কমিশনারেটের একের পর এক থানার নানা ‘কীর্তি’ কোর্টের সামনে আসছে। নিউ টাউন, রাজারহাট, নারায়ণপুর থানা সম্পর্কে একাধিক কড়া পর্যবেক্ষণও দিয়েছেন বিচারপতি। এ বার সেই তালিকায় নয়া সংযোজন বাগুইআটি। এ দিন তাঁর পর্যবেক্ষণ, ‘‘গোটা কমিশনারেটই একেবারে গিয়েছে।’’ বিচারপতির নির্দেশ, বিধাননগরের নগরপালকে ২০১৭ সাল থেকে এখনও পর্যন্ত বাগুইআটি থানার সমস্ত আইসি ও অন্য আধিকারিকদের ভূমিকা ও আচরণের রিপোর্ট জমা দিতে হবে। কী ভাবে পুলিশের অজান্তে থানা থেকে তিনটে গাড়ি চুরি গেল, তার পর্যাপ্ত তদন্ত করতে হবে নগরপালকে। কোনও আধিকারিক জড়িত থাকলে তাঁর নাম ও তাঁর বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ করা হয়েছে— তা-ও জানাতে হবে কোর্টকে।

চুরি যাওয়া ওই গাড়িগুলির মালিকের নাম পাপুন ভট্টাচার্য। তাঁর আইনজীবী তীর্থঙ্কর ঢালি জানান যে, ২০১৭ সালে পাপুন বাগুইআটি থানায় অভিযোগ করেন, তাঁর ব্যবসার কাজে ব্যবহৃত পাঁচটি গাড়ি চুরি হয়েছে। তদন্তে নেমে পুলিশ তিনটে গাড়ি উদ্ধার করে এবং নিম্ন আদালতে দেওয়া রিপোর্ট অনুযায়ী বাজেয়াপ্ত ওই গাড়িগুলি বাগুইআটি থানা চত্বরে রেখে দেয়। ২০২১ সালে নিম্ন আদালতে গাড়ি ফিরে পেতে আবেদন করেন পাপুন। কিন্তু নিম্ন আদালতের নির্দেশে বাজেয়াপ্ত ওই গাড়ি ফেরত পাওয়ার কথা থাকলেও থানার তরফে কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি। পাপুন ফের আদালতে আবেদন করলে রিপোর্ট তলব করে নিম্ন আদালত। সেই রিপোর্টে পুলিশ জানায় যে, গাড়িগুলি চুরি গিয়েছে এবং এফআইআর রুজু করা হয়েছে। তীর্থঙ্করের অভিযোগ, থানা চত্বর থেকে গাড়ি চুরির প্রয়োজনীয় তদন্ত করছে না পুলিশ। বাগুইআটির তৎকালীন আইসি-র আইনজীবী কোর্টে জানান যে, ২০২১ সালে বদলির সময়ে সব নথি হস্তান্তর করেন তাঁর মক্কেল। সব পক্ষের বক্তব্য শুনে বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, এই ঘটনার দায় এড়াতে পারে না সংশ্লিষ্ট থানার পুলিশ। থানা চত্বর থেকে কী ভাবে গাড়ি চুরি হল, তার জবাবদিহি করতে হবে থানায় কর্মরত আধিকারিকদের।

বিধাননগর কমিশনারেটের ডিসি (বিমানবন্দর) ঐশ্বর্যা সাগর বলেন, ‘‘বিষয়টি জানতে পেরেই মামলা রুজু করেছি। আমিও এখানে নতুন এসেছি। বাগুইআটি থানার আইসি-ও নতুন এসেছেন।’’ পুলিশ সূত্রের খবর, নতুন আইসি অমিতকুমার মিত্র গত ফেব্রুয়ারিতে দায়িত্বে আসার পরে বিষয়টি কমিশনারেটের নজরে আনেন। তার পরে গত মার্চে মামলা রুজু হয়। অতীতে বাগুইআটি থানার বিরুদ্ধে অভিযোগ পেয়েও তদন্তে অনীহার একাধিক অভিযোগ উঠেছিল। এমনকি ২০২২ সালে দুই ছাত্রের খুনের ঘটনাতেও বাগুইআটি থানার বিরুদ্ধে একই অভিযোগ ওঠে।

অন্য বিষয়গুলি:

Bidhannagar Police Commissionerate Calcutta High Court
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy