ক্যানিং মহকুমা হাসপাতাল। —ফাইল চিত্র।
পরীক্ষামূলক ভাবে কেন্দ্রীয় ‘রেফারেল’ পদ্ধতি ইতিমধ্যেই চালু করেছে স্বাস্থ্যভবন। সোনারপুরের হাসপাতালে তা পরীক্ষামূলক ভাবে চালুও হয়েছে। এ বার ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালও এই পদ্ধতির আওতাভুক্ত হল।
শুক্রবার ক্যানিং মহকুমা হাসপাতাল থেকে প্রথম এই পদ্ধতি ব্যবহার করে রোগীকে স্থানান্তরিত করা হয় অন্য হাসপাতালে। হেলথ ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম (এইচএমআইএস) পোর্টালে এমআর বাঙুর হাসপাতালে ওই রোগীর নাম নথিভুক্ত করা হয়। এরপরে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতাল থেকে রোগীকে সেখানে নিয়ে যান পরিবারের সদস্যেরা।
শ্রীকান্ত দাস নামে বাসন্তী ব্লকের নফরগঞ্জ এলাকার এক বাসিন্দার ব্রেন স্ট্রোক হয়। মাথায় রক্ত জমে গিয়ে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। পরিবারের সদস্যেরা শুক্রবার দুপুরে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে রোগীকে আনেন। কিন্তু যে ধরনের চিকিৎসা প্রয়োজন ছিল, তা ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে নেই। প্রাথমিক চিকিৎসার পরে রোগীকে এই বিশেষ পদ্ধতি ব্যবহার করে কলকাতার হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয় বলে হাসপাতাল সূত্রের খবর।জুনিয়র ডাক্তারদের ১০ দফা দাবির মধ্যে অন্যতম হল, কেন্দ্রীয় ‘রেফারেল’ ব্যবস্থা। আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের বক্তব্য, রাজ্যের প্রতিটি হাসপাতাল ও মেডিক্যাল কলেজে কেন্দ্রীয় ভাবে ‘রেফারেল’ এই ব্যবস্থা (রোগীকে অন্যত্র স্থানান্তর করার প্রক্রিয়া) চালু করতে হবে। এর ফলে এক হাসপাতাল থেকে অন্য হাসপাতালে স্থানান্তরিত হওয়া রোগীদের ভোগান্তি কমবে বলে দাবি তাঁদের। কেন্দ্রীয় পোর্টালের মাধ্যমে রেফারেল ব্যবস্থা পরিচালিত হওয়ার কারণে স্পষ্ট ভাবে জানা যাবে, কোন হাসপাতালে বর্তমানে কতগুলি শয্যা ফাঁকা রয়েছে। বিভ্রান্তি কম ছড়াবে, সমন্বয়হীনতা কমবে বলে দাবি তাঁদের। আর এর ফলে রোগীকে নিয়ে পরিজনের এক হাসপাতাল থেকে অন্য হাসপাতালে দৌড়ে বেড়াতে হবে না বলে আশা করা হচ্ছে। রোগীদের সুবিধার্ধে প্রতিটি হাসপাতাল ও মেডিক্যাল কলেজে কতগুলি বেড ফাঁকা রয়েছে, তা জানানোর জন্য একটি করে ডিজ়িটাল মনিটর রাখার দাবিও তুলেছেন আন্দোলনরত জুনিয়র চিকিৎসকেরা। যদিও সেই পদ্ধতি এখনও চালু হয়নি। তবে কেন্দ্রীয় রেফারেল ব্যবস্থা ইতিমধ্যে পরীক্ষামূলক ভাবে চালু হয়েছে।
ইতিমধ্যেই এই পদ্ধতি অবলম্বনের জন্য হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক, নার্স, রোগী সহায়কদের বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালের সুপার পার্থসারথি কয়াল বলেন, “রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশ মেনে আমারও এই হাসপাতালে এই বিশেষ পদ্ধতি চালু করেছি। যাতে রোগীদের হয়রানি কমে, সে কারণে এই বিশেষ পদ্ধতি পরীক্ষামূলক ভাবে ব্যবহার শুরু হয়েছে। আশা করি, ভাল ফল অবশ্যই মিলবে।”
তবে এই পদ্ধতি কার্যকর করতে আরও বেশি কর্মী প্রয়োজন বলে দাবি জরুরি বিভাগের চিকিৎসকদের। তাঁদের দাবি, ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালের মতো গুরুত্বপূর্ণ হাসপাতাল, যেখানে সুন্দরবনের প্রত্যন্ত এলাকার সাত-আটটি ব্লকের মানুষ নির্ভরশীল, জরুরি বিভাগে অহরহ মুমূর্ষু রোগী আসেন— সেখানে এই পোর্টালে গিয়ে সমস্ত তথ্য আপলোড করতে যথেষ্ট সময় লাগছে। সেই সময়ে অন্যান্য রোগীদের চিকিৎসার জন্য দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক চিকিৎসক বলেন, ‘‘কর্মী বাড়িয়ে এই পদ্ধতি ব্যবহার করতে হবে। না হলে জরুরি বিভাগের রোগীদের চিকিৎসা সামলে এই পদ্ধতি ব্যবহার যথেষ্ট সমস্যার।”
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy