রঙিন শাড়ি দিয়ে কোনও রকমে তৈরি হয়েছে তাঁবু। ভিতরে বছর পাঁচেকের ছেলেকে নিয়ে মশারি টাঙিয়ে ঘুমানোর চেষ্টা করছিলেন রেবা হালদার নামে এক মহিলা। গায়ে রোদ পড়ায় কিছুতেই ঘুমোতে চাইছিল না ছেলে।
ইন্দিরা আবাস যোজনায় টাকা না মেলায় এ ভাবেই কোনও রকমে মাথা গোঁজার জায়গা করে নিয়েছেন মথুরাপুর ১ ব্লকের অনেকে। কেউ শাড়ি দিয়ে আবার কেউ বস্তার ছাউনি দিয়ে বাসা বেঁধেছেন। প্রথম কিস্তির টাকা পেয়ে নিজেদের ঘর ভেঙে নতুন ঘর তৈরি করছিলেন মানুষ। কিন্তু দ্বিতীয় কিস্তির টাকা না মেলায় সেই ঘর শেষ করতে পারেননি কেউই। ফলে কোনও রকমে বসবাস করতে হচ্ছে তাঁদের।
ওই ব্লকের মোট ১০টি পঞ্চায়েতে প্রায় আড়াই লক্ষ মানুষের বাস। এখানকার বেশির ভাগ মানুষের প্রধান জীবিকা কৃষি। দিনমজুরি করেও অনেকে সংসার চালান। বেশির ভাগ টালির বাড়ি, খড়ের ছাউনির ঘর ছিল। সেই ঘরগুলির অবস্থা সরেজমিন তদন্ত করার পরে ইন্দিরা আবাস যোজনার উপভোক্তার তালিকায় নাম ওঠে অনেকের। প্রথম কিস্তির টাকাও পান।
ওই প্রকল্পের একটি বাড়ি নির্মাণের জন্য ৭০ হাজার টাকা দেওয়া হয়। চারটি কিস্তিতে টাকা দেওয়ার কথা। প্রথম কিস্তির ১৭ হাজার টাকা পাওয়ার পরে অনেকেই নিজেদের বাড়ি ভেঙে নতুন ভাবে তৈরি করতে শুরু করেছিলেন। কিন্তু দ্বিতীয় কিস্তির টাকা না মেলায় কাজ মাঝপথেই বন্ধ হয়ে যায়।
মথুরাপুর ১ বিডিও মুজিবর রহমান বলেন, ‘‘ইন্দিরা আবাস যোজনা প্রকল্পের কাজ কী অবস্থায় রয়েছে, তা খতিয়ে দেখার জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। পর্যবেক্ষণের পরে যাঁরা টাকা পাননি, শীঘ্রই তাঁদের দ্বিতীয় কিস্তির টাকার ব্যবস্থা করা হবে।’’ লক্ষ্মীনারায়ণপুর উত্তর পঞ্চায়েতের দিনমজুর কিশোর হালদার জানান, বাড়ি তৈরির কাজ বন্ধ রাখতে হয়েছে। কারণ হাতে এখন আর টাকা নেই। ছেলে, বউমা, নাতি, নাতনি নিয়ে দিন কাটাতে হচ্ছে খোলা আকাশের নীচে। কোনও রকমে ছাউনি দেওয়া হয়েছে। বর্ষায় বিপদ বাড়ে। শুধু বৃষ্টিতে ভিজতে হয় তা নয়, পাশাপাশি পোকামাকড়েরও ভয় থাকে। ত্রিপল ঢাকা দিয়ে এক সঙ্গে সকলকে কোনও রকমে বসে থাকতে হয়।
মথুরাপুর ১ ব্লকের সিপিএম নেতা রহিচ মোল্লা বলেন, ‘‘এই এলাকায় প্রথম কিস্তির টাকা হাতে পেয়েছে ৬০০-৭০০টি পরিবার। অথচ তাঁরা দ্বিতীয় কিস্তির টাকা পাননি।’’
কেন টাকা পেলেন না ওই সমস্ত দুঃস্থ পরিবার?
বিডিও বলেন, ‘‘নির্বাচনের জন্য কিছু কিছু কাজ আটকে ছিল।’’ সে কারণেই সমস্যা তৈরি হয়েছে বলে দাবি করেছেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy