Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
TMC

জল্পনা বাড়িয়ে এ বার ‘রায়সাহেব’-এর দরবারে বিজেপি-র বাবু মাস্টার, জল মাপছে তৃণমূল

রাজ্যে বিধানসভা ভোটের আগে গেরুয়া শিবিরে যোগদান করেছিলেন বাবু মাস্টার। সিপিএম এবং তৃণমূল ঘুরে তিনি গিয়েছিলেন বিজেপি-তে।

মুকুল রায়ের সঙ্গে বৈঠক বাবু মাস্টারের।

মুকুল রায়ের সঙ্গে বৈঠক বাবু মাস্টারের। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ জুন ২০২১ ১৬:২০
Share: Save:

এ বার দলবদলের জল্পনা উস্কে দিলেন উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের প্রাক্তন কর্মাধ্যক্ষ ফিরোজ কামাল গাজি ওরফে বাবু মাস্টার। ভোটের আগে আচমকাই তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি-তে যোগ দিয়েছিলেন বাবু। জল্পনা বাড়িয়ে দিয়ে এ বার সেই বাবু বিজেপি ছেড়ে সদ্য তৃণমূলে যোগ দেওয়া মুকুল রায়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন শনিবার। মুকুলের দলবদলের পর, তাঁর সঙ্গে বাবুর এই বৈঠক অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। সেই সূত্রেই জোরালো হচ্ছে বাবুর ফের দলবদলের সম্ভাবনা। দলবদলুদের জন্য অবশ্য ‘ধীরে চলো’ নীতি নিয়েছে তৃণমূল। এমনটাই জানা গিয়েছে জোড়াফুল শিবির সূত্রে।

রাজ্যে বিধানসভা ভোটের আগে গেরুয়া শিবিরে যোগদান করেছিলেন বাবু মাস্টার। সিপিএম এবং তৃণমূল ঘুরে তিনি গিয়েছিলেন বিজেপি-তে। যদিও পদ্মশিবিরে যোগদানের পর থেকে তিনি থিতু হতে পারেননি তেমন ভাবে। কারণ, বাবুকে দলে নেওয়া নিয়ে দু’ভাগ হয়ে গিয়েছিল রাজ্য বিজেপি। মত ছিল না সঙ্ঘেরও। বিজেপি-র আদি পর্বের নেতাদের বক্তব্য, সিপিএম এবং তৃণমূলে থাকার সময়ে তাঁদের বহু কর্মীর উপরে অত্যাচারের অভিযোগ রয়েছে বাবুর বিরুদ্ধে। কিন্তু সেই আপত্তি টেকেনি। ‘নব্যদের চাপে’ই বিজেপি-তে যোগ দেন বাবু।

ভোটের ঠিক আগেই, এ হেন বাবু মিনাখাঁয় হামলার মুখে পড়েন। বিজেপি অভিযোগ তোলে, বাবুর গাড়ি লক্ষ্য করে গুলি এবং বোমা ছুড়েছে তৃণমূল। জখম অবস্থায় কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাঁকে। তাঁর শরীরের একাধিক জায়গায় বোমার স্‌প্লিন্টারও বিঁধে যায়। ওই হাসপাতালে তাঁকে দেখতে যান বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং শঙ্কুদেব পণ্ডা। বাবুর উপর হামলার বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক তরজাও শুরু হয় তৃণমূল এবং বিজেপি-র মধ্যে।

সেই বাবু-ই শনিবার রায়সাহেবের দরবারে। যে ঘটনা ঘিরে তাঁর রাজনৈতিক গতিপথ নিয়ে নতুন করে জল্পনা শুরু হয়েছে। ভোটের আগে হামলার মুখে। ভোটের পর একদা ‘দোর্দণ্ডপ্রতাপ’ বাবু অবশ্য ছিলেন ‘নীরব’। দীর্ঘ দিন পর মুকুল-সাক্ষাৎ ফের প্রাসঙ্গিক করে তুলল তাঁকে। তবে দলবদলুদের তৃণমূলে যোগদানের ক্ষেত্রে ‘আগে এলে আগে সুযোগ’, এমন মনোভাব যে পোষণ করা হচ্ছে না তা বার বার স্পষ্ট করে দিয়েছেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বরং তাঁদের যে বাছাই করে নেওয়া হবে তা স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে জো়ড়াফুল শিবিরের তরফে। অন্তত ২১ জুলাই ‘শহিদ দিবস’-এর আগে পর্যন্ত দলবদলুদের জন্য দরজা খুলবে না বলেই তৃণমূল শিবির সূত্রে খবর। বাবুও সেই দলেই পড়েন। রাজনৈতিক পুনর্বাসন নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এখনও তৃণমূলের অন্দরে হয়নি। আবার বিজেপি-র এই সব নেতা-কর্মীদের দলে নেওয়ার ক্ষেত্রেও তৃণমূলের নিচুতলারও অনেক বাধা আছে। কারণ, কিছু দিন আগে পর্যন্ত এই দু’পক্ষই তো ময়দানে লড়াই করেছে একে অপরের বিরুদ্ধে।

মুকুলের সঙ্গে সাক্ষাৎ নিয়ে অবশ্য এখনও পর্যন্ত উত্তর ২৪ পরগনার ওই শিক্ষক নেতা বাবুর কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। আনন্দবাজার অনলাইনের তরফে তাঁর সঙ্গে বার বার যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। তবে ফোন তোলেননি কেউই।

বাম আমলেই উত্থান বাবু মাস্টারের। তৎকালীন মন্ত্রী গৌতম দেবের হাত ধরে উঠে আসেন পেশায় স্কুলশিক্ষক ওই নেতা। অনেকের মতে, সে সময় উত্তর ২৪ পরগনার হিঙ্গলগঞ্জের রাজনীতিতে বাঘে-গরুতে জল খেত বাবু মাস্টারের প্রভাবে। তৃণমূল হয়ে সেই বাবুই যোগ দিয়েছিলেন বিজেপি-তে। কিন্তু শনিবার মুকুলের সঙ্গে তাঁর বৈঠক নতুন জল্পনা উস্কে দিল।

অন্য বিষয়গুলি:

BJP TMC mukul roy
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE