নির্বাচনের আগেই প্রায় ‘দশে দশ’ পেয়ে গিয়েছে শাসকদল। ডায়মন্ড হারবার বিধানসভা এলাকায় পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি বা জেলা পরিষদে প্রায় সব ক’টি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছে তারা। কিন্তু এর মধ্যে বিরোধীরা আদালতের দ্বারস্থ হয়ে শাসকদলের প্রতিনিধিদের এই প্রায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হওয়ার পথে কাঁটা দিয়েছেন। এ বার শাসকদলের প্রতিনিধিরা প্রহর গুনছেন, বিরোধীরা যদি মনোনয়ন জমা করতে পারেন, তা হলে তাঁদের আবার ‘মাঠে’ নামতে হবে। বিরোধীদের মনোনয়নপত্র জমা না করা প্রসঙ্গে শাসকদলের দাবি, বিরোধীরা প্রার্থীই দিতে পারেনি। তা ছাড়া, এত উন্নয়ন হয়েছে, ভোটে দাঁড়ানোর কী দরকার?
ডায়মন্ড হারবার ১ ব্লকে রয়েছে ৮টি পঞ্চায়েত, ২২টি পঞ্চায়েত সমিতি, ২টি জেলা পরিষদ। ২০১৩ সালে বোলসিদ্ধি কালিনগর, নেতড়া, ধনবেড়িয়া কানপুর ও বাসুলডাঙা— এই চারটি পঞ্চায়েতই ছিল সিপিএমের দখলে। পঞ্চায়েত সমিতির ১০টি ও জেলা পরিষদের ১টি আসনও তাদের দখলে ছিল। ডায়মন্ড হারবার ২ ব্লকের ৮টি পঞ্চায়েতের মধ্যে সিপিএম জিতেছিল নুরপুর, মাথুর, সরিষা, ভাদুড়া, কামারপোল ও পাতড়া পঞ্চায়েত মিলিয়ে মোট ৬টিতে। পঞ্চায়েত সমিতির ২৪টি আসনের মধ্যে ১০টিইতেই জিতেছিল সিপিএম। জেলা পরিষদের ২টি আসনও তাদের দখলে ছিল। প্রসঙ্গত, গত পাঁচ বছরে এলাকায় বিজেপিরও বাড়বাড়ন্ত হয়েছে।
ডায়মন্ড হারবার বিধানসভা এলাকায় পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতির জন্য মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার ব্যবস্থা ছিল ডায়মন্ড হারবার ১ ও ২ বিডিও অফিসে। জেলা পরিষদের প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য নির্ধারিত ছিল মহকুমা প্রশাসন ভবন।
বিরোধীদের অভিযোগ, মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় ওই সব অফিসের সামনের এলাকা চলে গিয়েছিল শাসকদলের দখলে। কোথাও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে দাপাদাপি, কোথাও লাঠি, হকি স্টিক, রড উঁচিয়ে হামলা হয়েছে বলে অভিযোগ। মনোনয়ন জমা দিতে এসে হামলায় মাথা ফেটেছে বিরোধীদের। বিরোধীদের অভিযোগ, সবটাই হয়েছে পুলিশের নাকের ডগায়। পুলিশ ছিল নীরব দর্শকের ভূমিকায়।
মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার দিন উচ্চ আদালতের নির্দেশে একদিন বেড়েছে। সেই প্রসঙ্গে ডায়মন্ড হারবারের সিপিএমের নেতা সমর নাইয়ার বক্তব্য, ‘‘পুলিশ, প্রশাসন এবং শাসকদলের বাহিনী যে ভাবে একজোট হয়ে বিরোধীদের উপরে সন্ত্রাস চালিয়েছে, তা অকল্পনীয়।’’
বিজেপির জেলা সহ-সভাপতি সুফল ঘাটু বলেন, ‘‘আমরা সোমবার দল বেঁধে মনোনয়ন জমা দিতে যাব। তবে জানতে পেরেছি, শাসকদলের হয়ে যাঁরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছেন তাঁরা এবং অনুদান পাওয়া বিভিন্ন ক্লাব থেকে আসা লোকজন অফিসের সামনে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করবেন। এ বারও যদি আমরা মনোনয়ন জমা দিতে না পারি, তবে আন্দোলনের পথে এগোব।’’
পুলিশের বক্তব্য, আদালতের রায় মেনেই সব পক্ষের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। ডায়মন্ড হারবারের মহকুমা শাসক শান্তনু বসু বলেন, ‘‘মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া নিয়ে কারও কোনও অভিযোগ থাকলে ব্যবস্থা নেব। এখনও পর্যন্ত তেমন কোনও অভিযোগ পাইনি। আগেও কোনও সমস্যা ছিল না। নতুন করে কোনও সমস্যা হবেও না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy