রাস্তার পাশে পড়ে আছে কাটা গাছের ডাল। নিজস্ব চিত্র
স্থানীয় বাসিন্দাদের প্রতিবাদের মুখে পড়ে রাস্তার ধারের গাছের ডাল কাটা বন্ধ রাখতে বাধ্য হল পূর্ত দফতর।
শুক্রবার সকালে বসিরহাটের মধ্যমপুরে এই ঘটনায় উত্তেজনা ছড়ায়। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার বসিরহাট থেকে টাকি হয়ে হাসনাবাদ যাওয়ার টাকি রোডের পাশে মধ্যমপুর এলাকায় গাছ কাটা শুরু হয়। কদম, পাইন, আম, শিরিষ, অশ্বত্থ গাছের মোটা ডাল কাটা হয়েছে। পরিবেশের ক্ষতি হতে দেখে ক্ষোভ দানা বাঁধে এলাকায়।
এ দিন সকালে ইছামতী বিজ্ঞান কেন্দ্রের সদস্যেরা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। পথচলতি মানুষও তাতে সামিল হন। টাকি রাস্তার উপরে গাছের গুঁড়ি ফেলে শুরু হয় অবরোধ। পুলিশ ও পূর্ত দফতরের মহকুমা আধিকারিক ঘটনাস্থলে আসেন।
কেন গাছ না লাগিয়েই বড় বড় গাছ কাটা হচ্ছে, জনতা তা জানতে চায়। পূর্ত দফতরের আধিকারিক ও ঠিকাদারকে ঘেরাও করে বিক্ষোভ চলে। ততক্ষণে রাস্তার পাশে থাকা গাছের ডাল কতটা কাটা হবে, পূর্ত দফতরের দেওয়া সেই ছবি ঠিকাদার ইব্রাহিম গাজির কাছ থেকে জনতার হাতে চলে এসেছে। তাতে স্পষ্ট বলা হয়েছে, রাস্তার উপরে থাকা ডাল ছাঁটতে হবে। কিন্তু সেই নির্দেশের তোয়াক্কা না করে রাস্তা থেকে দূরে থাকা বড় বড় ডাল কাটা হচ্ছে দেখে ক্ষোভে ফেটে পড়ে জনতা।
পূর্ত দফতরের মহকুমা আধিকারিক রাজেন্দ্রপ্রসাদ মণ্ডল বলেন, ‘‘বসিরহাটের ত্রিমোহণী থেকে টাকি হয়ে হাসনাবাদ পর্যন্ত ১৫ কিলোমিটার রাস্তার দু’পাশে থাকা গাছের যে সব ডাল রাস্তার উপরে পড়েছে, তা কাটার জন্য ৬,৪৫০ টাকায় টেন্ডার ডাকা হয়েছে। টেন্ডারে বলা হয়েছে, ছোট ডাল নিয়ে বাকি বড় ডাল দফতরে পাঠাতে হবে।’’
আধিকারিকের মুখে এই কথা শুনে লোকজনের ক্ষোভ আরও বাড়ে। তাদের বক্তব্য, ১৫ কিলোমিটার রাস্তার পাশে কয়েকশো গাছ আছে। কয়েক লক্ষ টাকার ডাল কী ভাবে মাত্র ৬,৪৫০ টাকায় টেন্ডার হল? গাছ ছাঁটাইয়ের নামে গাছের চারপাশের সব বড় ডাল কেটে আসলে গাছকে মৃত্যুর মুখেই ঢেলে দেওয়া হচ্ছে। ইছামতী বিজ্ঞান কেন্দ্রের সভাপতি পার্থ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ডাল ছাঁটার নামে তো গাছ কাটা শুরু হয়েছে। লক্ষ লক্ষ টাকার ডাল সামান্য টাকায় টেন্ডার করা হয়েছে। এ নিয়ে দুর্নীতি বন্ধ করে দোষীদের শাস্তি দিতে হবে।’’ রণজিৎ মুখোপাধ্যায়, আনার হোসেন মণ্ডল, রাশিদল বারি, ভুলু মণ্ডলরা বলেন, ‘‘পরিবেশের ক্ষতি করে গাছ ছাঁটার নামে যে ভাবে মুড়িয়ে কাটা হচ্ছে, তাতে গাছের মৃত্যু অবশ্যম্ভাবী। এটা মেনে নেওয়া যায় না।’’
পুলিশের কাছে ইছামতী বিজ্ঞান কেন্দ্রের পক্ষে লিখিত অভিযোগও দায়ের করা হয়েছে। বিক্ষোভের জেরে শেষ পর্যন্ত ডাল কাটা বন্ধ করা হয়। পরবর্তি সময়ে গাছের ছবি তুলে তবেই ডাল কাটার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। কেন রাস্তার উল্টো দিকে থাকা বড় ডাল কাটা হচ্ছিল, তা তদন্ত করে দেখার সিদ্ধান্তও নিয়েছেন পূর্ত দফতরের মহকুমা আধিকারিক। কিন্তু ডাল ছাঁটার নামে কেন বড় বড় ডাল কাটা হচ্ছিল, তা নিয়ে দফতরের কর্তারা মন্তব্য করতে চাননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy