Advertisement
২১ জানুয়ারি ২০২৫
Bangladesh Unrest

সংখ্যালঘু মেয়েদের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ, দাবি বাংলাদেশিদের

সীমান্তের এ পারে যাঁরা আসছেন ইদানীং, অনেকেই জানাচ্ছেন, সে দেশের উদ্বেগজনক পরিস্থিতির কথা। সংখ্যালঘু মহিলাদের ব্যক্তি স্বাধীনতার উপরে হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ তুলছেন তাঁদের অনেকে।

অভিযোগ, বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি দিয়ে বলা হচ্ছে, মহিলারা যেন বাড়ি থেকে না বেরোন।

অভিযোগ, বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি দিয়ে বলা হচ্ছে, মহিলারা যেন বাড়ি থেকে না বেরোন। —প্রতীকী চিত্র।

সীমান্ত মৈত্র  
শেষ আপডেট: ০৮ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৯:০৯
Share: Save:

উদ্বেগ কমছে না বাংলাদেশি সংখ্যালঘুদের। দেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপরেও বিশেষ ভরসা রাখতে পারছেন না তাঁরা। সীমান্তের এ পারে যাঁরা আসছেন ইদানীং, অনেকেই জানাচ্ছেন, সে দেশের উদ্বেগজনক পরিস্থিতির কথা। সংখ্যালঘু মহিলাদের ব্যক্তি স্বাধীনতার উপরে হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ তুলছেন তাঁদের অনেকে। তাঁরা জানাচ্ছেন, বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি দিয়ে বলা হচ্ছে, মহিলারা যেন বাড়ি থেকে না বেরোন।

শুক্রবার বাংলাদেশের ফরিদপুর থেকে এ দেশে এসেছেন মা এবং তাঁর তরুণী মেয়ে। যাবেন গড়িয়ায়। পেট্রাপোল সীমান্তে বসে তরুণী বললেন, ‘‘আমরা মেয়েরা এত দিন দেশে যে স্বাধীনতা ভোগ করতাম, এখন সে পরিস্থিতি মনে হচ্ছে পাল্টে যাচ্ছে। নিজেদের ইচ্ছে মতো বাড়ির বাইরে বেরোতে পারতাম। এখন ব্যক্তি স্বাধীনতার উপরে হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে।’’ তরুণীর মায়ের কথায়, ‘‘বাড়ি বাড়ি গিয়ে বলা হচ্ছে, মহিলারা যেন বাড়ির বাইরে না বেরোন। মহিলাদের রাতে বাড়ির বাইরে দেখলে বলা হচ্ছে, এত রাতে বাইরে কী দরকার!’’ কারা বলছে এ সব? নাম বলতে চাননি দু’জনেই। এ প্রশ্নের উত্তরে মা-মেয়ে বললেন, ‘‘আপনারা বুঝে নিন, কারা এমন হুমকি দিতে পারে!’’

বরিশালের এক বাসিন্দার কথায়, ‘‘যে সব সংখ্যালঘু মানুষের উপরে ওদের রাগ, মূলত তাঁদের পরিবারের মহিলাদের হেনস্থা করা হচ্ছে।’’ খুলনা থেকে এ দেশে এসেছেন এক প্রবীণ। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের দেশে মিছিল করে স্লোগান দিয়ে বলা হচ্ছে, আমরা সবাই তালিবান। দেশটা হবে আফগান। ২০০১ সালেও এই রকম মিছিল হয়েছিল দেশে।’’ তিনিও জানালেন, গোপালগঞ্জে ‘নিদান’ দেওয়া হয়েছে, সংখ্যালঘু মহিলাদের বাইরে বেরোতে গেলে বোরখা পরতে হবে। দেশটা তালিবানি শাসনের দিকে চলে যাচ্ছে বলে আক্ষেপ তাঁর।

ঢাকা থেকে চিকিৎসা করাতে এসেছেন এক বৃদ্ধ। বললেন, ‘‘দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করার স্বদিচ্ছা দেখতে পাচ্ছি না। দেশের ইতিহাসকে ওরা ধ্বংস করতে চাইছে। আমার মতো যারা চোখের সামনে দেশটাকে স্বাধীন হতে দেখেছে, তাদের কাছে এ সব সহ্য করা কঠিন।’’ নড়াইলের এক বৃদ্ধার কথায়, ‘‘মন খুলে কথা বলা যাচ্ছে না, নানা রকম ফতোয়া জারি করা হয়েছে। জানি না, আর কত দিন দেশে থাকতে পারব!’’

বাংলাদেশের নানা প্রান্তে ভারতীয় পণ্য বয়কটের ডাক দেওয়া হয়েছে বলেও সূত্রের খবর। এ দেশ থেকে শাড়ি কিনে বাংলাদেশে ফিরছিলেন এক মহিলা। তাঁর আশঙ্কা, ‘‘খাদ্য সহ নানা ভারতীয় পণ্যের উপরে আমরা নির্ভরশীল। এ দিকে, দেশের কিছু মানুষ আওয়াজ তুলেছেন, ভারতীয় পণ্য বয়কট করতে হবে। ভারতীয় জিনিসপত্র পোড়ানোও হচ্ছে কোথাও কোথাও। জানি না, শাড়িটা বাড়ি পর্যন্ত নিয়ে যেতে পারব কিনা। পথে লুট হয়ে যেতে পারে!’’ বাংলাদেশি সংখ্যালঘুরা সকলেই চাইছেন, ভারত সরকার যেন তাঁদের পাশে দাঁড়ায়। সকলেই ফিরে পেতে চান তাঁদের ‘সোনার বাংলা।’

অন্য বিষয়গুলি:

Bangladesh Unrest Minority Right
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy