এই স্কুলেই ভোটকেন্দ্র করা হয়েছিল ২০১৮ সালে। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক
গত পঞ্চায়েত ভোটের দিন ধূলনি গ্রামে বুথের বাইরে মারধর খেয়েছিলেন বাগদা ব্লকের কোনিয়াড়া ১ পঞ্চায়েতের তৎকালীন তৃণমূল প্রধান সুশান্ত দাস। জখম অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়। সে বারও ভোটে লড়েছিলেন। তবে বিজেপি প্রার্থীর কাছে পরাজিত হন।
কিডনির সমস্যায় ভুগছিলেন আগে থেকেই। সুশান্তের ছেলে রাজদীপ বলেন, “বাবার কিডনির অস্ত্রোপচার হয়েছিল, সুগার ছিল। পঞ্চায়েত ভোটের ওই ঘটনার পর থেকে বাবা আরও বেশি অসুস্থ হয়ে পড়েন। ২০২১ সালে করোনায় মারা যান তিনি।”
সুশান্তের বাড়ি কলমবাগান বাজার এলাকায়। মঙ্গলবার রাজদীপ বললেন, “এ বার হয় তো আমরা আর ভোটই দিতে যাব না। বাবা নিজের পরিবারকে সময় না দিয়ে মানুষের জন্য কাজ করতেন। তারপরেও তাঁকে প্রহৃত হতে হয়েছিল। রাজনীতি নিয়ে আমাদের আর কোনও আগ্রহ নেই। আমাদের যা ক্ষতি হওয়ার তা তো হয়েই গিয়েছে।” ভোটে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ফিরুক এটাই চান রাজদীপ।
ধূলনি প্রফুল্লকুমার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সে বছর ভোটগ্রহণ কেন্দ্র হয়েছিল। এ দিন সেই চত্বরে গিয়ে দেখা মিলল এক ব্যক্তির। তিনি বললেন, “গত বার ভোটের আগে পর্যন্ত আমরা টিভিতেই কেবল ভোট-সন্ত্রাস দেখেছি। কিন্তু সে বারই প্রথম চোখে দেখলাম, ছাপ্পা, বোমাবাজি কাকে বলে।” সুকুমার সর্দার নামে এক গ্রামবাসীর কথায়, “প্রশাসনের উচিত, ভোটারদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।”
কী হয়েছিল ২০১৮ সালে পঞ্চায়েত ভোটের দিন?
গ্রামবাসীরা জানালেন, সকাল থেকে ভোটপর্ব শান্তিতেই চলছিল। সাড়ে ১১টার পর থেকে অটো নিয়ে বহিরাগতেরা এসে দাপাদাপি শুরু করে। অভিযোগ, তাদের হাতে উইকেট, লাঠি, আগ্নেয়াস্ত্র ছিল। বুথে ঢুকে সকলকে হুমকি দিয়ে ছাপ্পা ভোট দিতে শুরু করে দুষ্কৃতীরা। স্কুলের মাঠে বোমাবাজি করে।
স্থানীয় মহিলাদের নেতৃত্বে অনেকে রুখে দাঁড়ান। বহিরাগতদের তাড়া করে কিছু লোককে বাঁশ দিয়ে পেটানো হয়। সুশান্তকেও মারধর করা হয়। স্থানীয় কিছু মানুষ তাঁকে উদ্ধার করেন। বহিরাগতদের কয়েকটি অটোতে আগুন ধরিয়ে দেন উত্তেজিত গ্রামবাসী। পরে দুষ্কৃতীরা গাড়িতে আগ্নেয়াস্ত্র এনে গ্রামে হামলা চালানোর চেষ্টা করে। মহিলারা রাস্তায় গাছ ফেলে পথ বন্ধ করে দেন।
গত পঞ্চায়েত ভোটে সন্ত্রাসের দায় তৃণমূলের উপরে চাপিয়েছে বিজেপি। স্থানীয় বিজেপি নেতা গৌতম মৃধা বলেন, “ধূলনি গ্রামে বনগাঁ শহরের এক তৃণমূল নেতা অটো করে দুষ্কৃতীদের পাঠিয়েছিলেন ভোট লুট করতে। লাঠি, হকিস্টিক, বোমা, আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে তারা বুথে ঢুকে ছাপ্পা ভোট দেয়। পরে গ্রামের মানুষ পাল্টা প্রতিরোধ করেন। ভোটের পরেও তৃণমূলের সন্ত্রাসে আমাদের অনেকে ঘর ছাড়া হয়েছিলেন।” তাঁর দাবি, কোনিয়াড়া পঞ্চায়েত জুড়ে সন্ত্রাস চালিয়েছিল তৃণমূল। বোমায় তৃণমূলেরই এক জনের হাত উড়ে গিয়েছিল। অভিযোগ অস্বীকার করে বাগদা পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি তৃণমূলের তরুণ ঘোষ বলেন, “গত পঞ্চায়েত ভোটে তৃণমূল ও বিজেপির সংঘর্ষ হয়েছিল। তবে বিজেপির লোকজন প্রথমে হামলা করে। আমাদের তৎকালীন প্রধান-সহ কয়েক জন জখম হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy