ক্যানিংয়ের তালদি বাজারে বন্ধ দোকানপাট। নিজস্ব চিত্র
যত দিন যাচ্ছে, ক্যানিং মহকুমায় লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। ইতিমধ্যেই একশো ছাড়িয়েছে আক্রান্তের সংখ্যা। বেশ কয়েকজনের মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে।
প্রশাসন সূত্রের খবর, সোমবার পর্যন্ত ক্যানিং মহকুমায় ১১৭ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। যার মধ্যে ৩৫ জন ইতিমধ্যেই সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। ৭৬ জন এখনও অসুস্থ। করোনায় আক্রান্ত হয়ে ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। ক্যানিং ১ ও ২ ব্লকে আক্রান্তের সংখ্যা সর্বাধিক। ক্যানিং ১ আক্রান্ত ৪১। ২ ব্লকে সংখ্যাটা ৪৭।
অন্য দিকে, গোসাবা ব্লকে এখনও পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা যথেষ্ট কম। এ পর্যন্ত এই ব্লকে মাত্র ৫ জন আক্রান্ত হয়েছেন করোনায়। যার মধ্যে গোসাবা ব্লক স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তাও রয়েছেন। চারিদিকে নদী দিয়ে ঘেরা দ্বীপাঞ্চল হওয়ায় গোসাবায় এখনও সংক্রমণ সে ভাবে ছড়াতে পারেনি বলে দাবি চিকিৎসকদের। তবে সাবধান না হলে এই সংক্রমণ দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে সময় লাগবে না বলে দাবি তাঁদের। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গোসাবা হাসপাতালের এক চিকিৎসক বলেন, “ব্লকের সঙ্গে সড়ক পথে সরাসরি যোগাযোগ না থাকার কারণেই এখানে সংক্রমণ এখনও কম। তবে সঠিক স্বাস্থ্যবিধি মেনে সচেতনতা অবলম্বন না করলে এই দ্বীপাঞ্চলেও দ্রুত ছড়াবে সংক্রমণ।’’বাসন্তীতে ৩৫ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানিয়েছে ব্লক স্বাস্থ্য দফতর। যে ভাবে সংক্রমণ বাড়ছে, তাতে আগামী দিনে ক্যানিং মহকুমার অবস্থা ভয়ানক হতে পারে বলে মনে করছেন স্বাস্থ্য আধিকারিকেরা। পরিস্থিতি সামাল দিতে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার নির্দেশও দিচ্ছেন তাঁরা।
ক্যানিং মহকুমার অতিরিক্ত মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক পরিমল ডাকুয়া বলেন, “গত কয়েক দিনে সংক্রমণের সংখ্যা যথেষ্ট বেড়েছে। সাবধানতা অবলম্বন না করলে ক্রমশ পরিস্থিতি জটিল হবে। সমস্ত স্বাস্থ্যবিধি অবশ্যই সকলকে মেনে চলতে হবে।’’
পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য ইতিমধ্যেই বাসন্তী, ক্যানিং, জীবনতলা, গোসাবা বাজার এলাকায় ব্যবসায়ীরা নিজেদের উদ্যোগে বাজার এলাকায় লকডাউন ঘোষণা করেছেন। ক্যানিং মহকুমায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু বেড়ে চলায় সেই দেহগুলি সৎকারের জন্য ক্যানিং ১ ব্লকে মাতলা নদীর চরে তৈরি ‘বৈতরণী’ প্রকল্পে তৈরি বৈদ্যুতিক চুল্লিটি ব্যবহার করা যায় কিনা, তা খতিয়ে দেখতে শুরু করেছেন প্রশাসনের আধিকারিকেরা। মঙ্গলবার ক্যানিং পশ্চিমের বিধায়ক শ্যামল মণ্ডল, জেলা পরিষদের ক্ষুদ্র, কুটিরশিল্প ও বিদ্যুৎ দফতরের কর্মাধ্যক্ষ শৈবাল লাহিড়ি সংশ্লিষ্ট দফতরের আধিকারিকদের নিয়ে এই বৈদ্যুতিক চুল্লি পরিদর্শনও করেন। শ্যামল বলেন, “দিনের পর দিন যে ভাবে করোনায় আক্রান্ত হয়ে এই এলাকায় মানুষের মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে, সে কারণে দ্রুত যাতে এই বৈদ্যুতিক চুল্লিটিকে দেহ সৎকারের জন্য খুলে দেওয়া যায়, তার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’’
এ দিকে, দিনের পর দিন করোনা আতঙ্কে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে কমেছে রোগীর সংখ্যা। ১৬৩ শয্যার এই হাসপাতালে সাধারণ সময়ে ২৫০ রোগী ভর্তি থাকেন। কিন্তু গত কয়েক মাসে সেই সংখ্যাটা যথেষ্ট কমেছে। আর গত কয়েক দিনে আরও কম মানুষ আসছেন হাসপাতালে সংক্রমণ ছড়ানোয়। বর্তমানে ৮০ জন রোগী ভর্তি আছেন সেখানে। প্রায় ৬০ জনই প্রসূতি। হাসপাতাল সূত্রের খবর, গত কয়েক দিনে এই হাসপাতালের বেশ কয়েকজন চিকিৎসক, নার্স করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। সে কারণেই হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা কমেছে বলে মনে করা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy