সোমবার সকাল থেকে সুন্দরবনে বাঘগণনার কাজ শুরু হল। সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের পাশাপাশি লাগোয়া দক্ষিণ ২৪ পরগনা বনভূমিতেও শুরু হয়েছে সুমারির কাজ। সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের উপ ক্ষেত্র-অধিকর্তা (ডেপুটি ফিল্ড ডিরেক্টর) জোন্স জাস্টিন প্রথম ধাপে পুরো ব্যাঘ্রপ্রকল্প এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনা বনবিভাগের নির্বাচিত কয়েকটি অংশে বসানো হবে ট্র্যাপ ক্যামেরা। পরবর্তী পর্যায়ে বসবে দক্ষিণ ২৪ পরগনা বনবিভাগের অন্তর্গত অন্য বাদাবন অঞ্চলগুলিতে। চূড়ান্ত পর্বে প্রতিটি ছবি মিলিয়ে শরীরের ডোরাকাটা দাগের ধরন দেখে প্রত্যেক বাঘকে আলাদা ভাবে শনাক্ত করা হবে। জানা যাবে বাঘের প্রকৃত সংখ্যা।
বৃহস্পতিবার সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্প কর্তৃপক্ষের অধীন সজনেখালি রেঞ্জ অফিসে বনকর্মীদের ট্র্যাপ ক্যামেরা বসানোর প্রশিক্ষণপর্ব সম্পন্ন হয়েছিল। ৫০ জন বনকর্মী ওই কর্মশালায় অংশ নেন। প্রসঙ্গত, ২০২২ সালে দেশজুড়ে বাঘের সংখ্যা নির্ণয় করা হয়েছিল। সুন্দরবনে ১০১টি বাঘ রয়েছে বলে জানা গিয়েছিল। প্রতি চার বছর অন্তর সারা দেশে বাঘসুমারি হয়ে থাকে। তবে প্রতি বছর সুন্দরবনে ব্যাঘ্র প্রকল্প কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে বাঘের সংখ্যা নির্ধারণের কাজ চলে। এ বারও সেই কাজ শুরু হয়েছে।
আরও পড়ুন:
ব্যাঘ্র প্রকল্প কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, এ বার জঙ্গলে ৭৩২টি জায়গা চিহ্নিত করা হয়েছে ক্যামেরা বসানোর জন্য। প্রতি জায়গায় দু’টি করে, মোট ১৪৬৪টি ইনফ্রা রে প্রযুক্তিসম্পন্ন স্বয়ংক্রিয় ক্যামেরা বসানো হবে। পঁয়ত্রিশ দিন বাদে ক্যামেরা খোলা হবে। জাস্টিন বলেন, ‘‘জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত টানা ছবি ওঠার পর ক্যামেরাগুলি তুলে আনা হবে জঙ্গল থেকে। দ্বিতীয় দফায় জানুয়ারির ১৪ তারিখে বাঘের সন্ধান পেতে পাতা হবে ট্র্যাপ ক্যামেরা।’’
আরও পড়ুন:
দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিভাগীয় বনাধিকারিক (ডিএফও) মিলন মণ্ডল বলেন, ‘‘দক্ষিণ ২৪ পরগনা ডিভিশনের অন্তর্গত বাদাবনের মধ্যে মাতলা, রায়দিঘি এবং রামগঙ্গা রেঞ্জে বাঘের বসবাস। এর মধ্যে মাতলা রেঞ্জে ট্র্যাপ ক্যামেরা বসানোর কাজ সোমবার থেকে শুরু হয়েছে। সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্প এবং মাতলা রেঞ্জের রাজ শেষ হওয়ার পরে জানুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে রামগঙ্গা এবং রায়দিঘি রেঞ্জে ক্যামেরা বসানোর কাজ শুরু হবে।
আরও পড়ুন:
বিগত কয়েক বছর ধরেই সুন্দরবনে বাঘেদের দেখা বারে বারে পাচ্ছেন সুন্দরবন ভ্রমণে আসা পর্যটকরা। গত কয়েক বছরে বাঘেদের সংখ্যাও বেশ কিছু বৃদ্ধি পেয়েছে তা গত বাঘসুমারির রিপোর্ট থেকে স্পষ্ট। এবারও সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্প ও ২৪ পরগনা বনবিভাগের এলাকায় যে বাঘ গননার কাজ শুরু হতে চলেছে তার ফল যথেষ্ট ভালো হবে বলে আশাবাদী বন আধিকারিকেরা।