অস্বাস্থ্যকর: মিনাখাঁয় ঝড়ে ঘর নষ্ট হওয়ায় বাইরে চলছে শিশুদের রান্না।
পর পর প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতি পরে এখনও সুন্দরবন এলাকায় মেরামত হয়নি বহু অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র। এ মাসের মাঝামাঝি সেন্টার শুরু হয়ে ফের রান্না করা খাবার দেওয়া শুরু হয়েছে। কিন্তু কেন্দ্রের পরিকাঠামো ঠিকঠাক করা না হলে কাজে সমস্যা হতে পারে বলে আশঙ্কা আছে নানা মহলে।
মহকুমা প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, করোনা আবহে প্রায় দু’বছর ধরে বন্ধ ছিল সন্দেশখালি, হাড়োয়া, মিনাখাঁ, বসিরহাট, হাসনাবাদ হিঙ্গলগঞ্জ-সহ বিভিন্ন এলাকার হাজার দু’য়েক অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র। ওই সব এলাকার উপর দিয়ে আমপান, ইয়াসের মতো প্রবল ঘূর্ণিঝড় বয়ে গিয়েছে। সন্দেশখালি ১ ব্লকের প্রায় ৫০টি, ২ ব্লকে প্রায় ২০টি, মিনাখাঁর ৩০টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের বেশ ক্ষতি হয়। এখনও ওই সব অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলি মেরামত করা হয়নি।
সন্দেশখালি ১ ব্লকে প্রায় সাড়ে তিনশো অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র আছে। তার মধ্যে শ’দেড়েকের স্থায়ী ঘর থাকলেও বাকিগুলির নিজস্ব স্থায়ী ঘর নেই। মিনাখাঁয় ৩৩৬টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের মধ্যে ১৭০টির নিজস্ব ঘর আছে। স্থায়ী ঘর না থাকায় কোনও ব্যক্তির বাড়িতে, ক্লাবে, প্রাথমিক স্কুল চত্বর ব্যবহার করে কোনও রকমে বাচ্চাদের মিড ডে মিল দেওয়া হয়।
অধিকাংশ এলাকায় স্থায়ী ঘর না থাকায় অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলিতে পড়াশোনা করানো এবং খাবার বিলির সমস্যা আছে। হাতে গোনা কয়েকটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের পরিকাঠামো ভাল। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলি শুরু হয়েছে। সেই মতো বিভিন্ন কেন্দ্রে সাফাইয়ের কাজ হয়েছে। একটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের কর্মী সুনীতা দাস বলেন, ‘‘সরকারি নির্দেশ মতো আমরা প্রতি মাসে শিশু এবং প্রসূতি মা এবং অভিভাবকদের নিয়ে বৈঠক করি। করোনা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চাল, ডাল, আলু অভিভাবকের হাতে তুলে দেওয়া হয়। এই সমস্ত অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে সোম-বুধ-শুক্র শিশুদের আনাজ, খিচুড়ি দেওয়া হত।’’ তিনি জানান, মায়েদের জন্য বরাদ্দ ১০০ গ্রাম চাল, ডাল ৫০ গ্রাম। তেল ২ গ্রাম। নুন ২ গ্রাম। আনাজ ৫২ পয়সায়। সয়াবিন ২০ পয়সা। আলু ২০ পয়সা। অর্ধেক ডিম আড়াই টাকা। শিশুদের জন্য চাল বরাদ্দ ৬০ গ্রাম। ডাল ২০ গ্রাম। তেল ১ গ্রাম। নুন ২ গ্রাম। আনাজ ২৬ পয়সা। সয়াবিন ১৫ পয়সা। আলু ১০ পয়সা। অর্ধেক ডিম আড়াই টাকা। ৩ থেকে ৬ বছরের শিশুদের জন্য ১ টাকার ছাতু বা চিনি দেওয়া হয় মঙ্গল-বৃহস্পতি-শনিবার।
অনেক অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের কর্মীদের প্রশ্ন, বাজারদর যে ভাবে বেড়েছে, তাতে এই টাকায় পুষ্টিকর খাবার দেওয়া যাবে তো? বসিরহাটের চাইল্ড ডেভলপমেন্ট প্রোজেক্ট অফিসার মলয় চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমার অধীনে ৪৬৪টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের পরিকাঠামো মোটামুটি ঠিক আছে।’’ সন্দেশখালি ১ ব্লকের সিডিপিও অমিত সিংহ বলেন, ‘‘আমার ব্লকে কয়েকটি সেন্টার ভেঙেচুরে গিয়েছে। বিষয়টি জেলায় জানিয়েছি। জেলা থেকে টাকা এলে মেরামতির কাজ শুরু করতে পারব।’’ সমস্যা হলেও সরকারি বরাদ্দের মধ্যেই খাবারের ব্যবস্থা করতে হবে বলে জানান আধিকারিকেরা। তবে পরিকাঠামোর উন্নয়ন যে অনেক কেন্দ্রের জন্য জরুরি, তা মানছেন তাঁরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy