—প্রতীকী চিত্র।
রাজ্য জুড়েই বাড়ছে ডেঙ্গি। এই পরিস্থিতিতে ডেঙ্গি পরীক্ষার কিট (এনএস ১) পাচার চক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত এলাকায়। সাম্প্রতিক সময়ে ডেঙ্গি কিট পাচারের চেষ্টার একাধিক ঘটনা সামনেও এসেছে। পুলিশ ও বিএসএফের
হাতে কয়েকজন পাচারকারী গ্রেফতারও হয়েছে। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে কয়েক লক্ষ টাকার কিট।
পুলিশ প্রশাসনের কর্তারা মনে করছেন, এ রাজ্যের পাশাপাশি বর্ষায় বাংলাদেশেও ডেঙ্গির প্রকোপ ছড়িয়েছে। সে কারণেই ও দেশে ডেঙ্গি পরীক্ষার কিটের চাহিদা বেড়েছে। তা ছাড়া, পাচারকারীদের জেরা করে পুলিশ জানতে পেরেছে ভারত থেকে বাংলাদেশে কিট নিয়ে যেতে পারলে লাভ অনেক বেশি হয়।
স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারাও বিষয়টি নিয়ে ওয়াকিবহাল। স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তার কথায়, ‘‘ডেঙ্গি কিট পাচারের ঘটনার কথা শুনেছি। বিভিন্ন বেসরকারি ল্যাবরেটরি থেকে কিট কিনতে পাওয়া যায়। ওদেশে ডেঙ্গি পরীক্ষার খরচও অনেক বেশি। এখানে যদি ডেঙ্গি পরীক্ষার জন্য ১০০ টাকা খরচ হয়, বাংলাদেশে খরচ পড়ে ১ হাজার টাকা।’’
কিট পাচার রুখতে পুলিশের পক্ষ থেকে সীমান্ত এলাকায় নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। বনগাঁর এসডিপিও অর্ক পাঁজা বলেন, ‘‘এ সব ক্ষেত্রে আমাদের সোর্স ইনফরমেশনের উপর অনেকটাই নির্ভর করতে হয়। পাশাপাশি সন্দেহজনক কাউকে দেখলে তল্লাশি করা হচ্ছে।’’ সীমান্তে বসবাসকারী বাসিন্দারা জানালেন, গরু পাচার কার্যত বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর পাচারকারীরা এখন আকারে ছোট জিনিস যেমন, সোনার বিস্কুট, গাঁজা, কাফ সিরাপ, ডেঙ্গি কিট এ সব পাচারের উপর নজর দিয়েছে। কারণ পুলিশ বিএসএফের নজর এড়িয়ে ছোট জিনিস পাচার করা তুলনায় সহজ। তাঁরা আরও জানান, ডেঙ্গি কিট পাচার চক্রের সদস্যেরা নানা টোপ দিয়ে গ্রামের চাষি, বেকার যুবকদের এ কাজে লাগানোর চেষ্টা করে। তাঁদের বলা হয়, সীমান্তে থাকা কাঁটাতারের ওপারে ডেঙ্গি কিটের ব্যাগ ছুঁড়ে ফেলতে হবে। কাজ হাশিল হলেই মিলবে টাকা। পরে পাচারকারীরা এসে সেই ব্যাগ নিয়ে যায়।
এ দেশে চিকিৎসা করিয়ে দেশে ফিরছিলেন ঢাকার বাসিন্দা এক মহিলা। তাঁর কথায়, ‘‘আমাদের দেশে ঢাকা-সহ গ্রামীণ এলাকাতে ডেঙ্গির প্রকোপ ছড়িয়ে পড়েছে। অনেকের মৃত্যুও হয়েছে। খুবই দুঃশ্চিতার মধ্যে রয়েছি।’’
ঢাকার বাসিন্দা এক বৃদ্ধের কথায়, ‘‘চিকিৎসার বিষয়ে
আমাদের এদেশের অনেকেই ভারতের উপর নির্ভরশীল। এ দেশের ডেঙ্গি কিটের চাহিদাও আমাদের দেশে প্রচুর।’’
সম্প্রতি পেট্টাপোল থানার পুলিশের কাছে খবর এসেছিল, এক বাংলাদেশি পাচারকারী পেট্রাপোল সীমান্ত দিয়ে এ দেশ থেকে ডেঙ্গির কিট পাচার করার চেষ্টা করছে। ওই পাচারকারী আগেও এই কাজ করেছে। পুলিশ পেট্রাপোল সীমান্তে নজরদারি বাড়ায়। পাচারকারী সীমান্ত এলাকায় আসতেই তাকে হাতেনাতে পাকড়াও করা হয়। ধৃতের নাম মহম্মদ সোহেল রানা। বাড়ি বাংলাদেশের বেনাপোল থানার সাদিপুর এলাকায়। তার কাছ থেকে ৬৮ প্যাকেট ডেঙ্গির কিট আটক করা হয়। এক একটি প্যাকেটে ২৫টি করে কিট ছিল, যার মূল্য প্রায় ৪ লক্ষ টাকা। পুলিশ জানায়, আটক করা কিটের প্যাকেটে লেখা ছিল, ‘ফর সেল ইন ইন্ডিয়া ওনলি’ (শুধুমাত্র ভারতে বিক্রির জন্য)।
ধৃতকে জেরা করে পুলিশ জানিয়েছে, ২০২২ সালের নভেম্বর মাস থেকে ওই দুষ্কৃতী কয়েক বার ভারতে এসেছিল বৈধ পাসপোর্ট ও ট্যুরিস্ট ভিসা নিয়ে। প্রতি বারই সে ডেঙ্গির কিট কলকাতা থেকে কিনে বাংলাদেশে পাচার করেছে। এ বারই প্রথম ধরা পড়ল। পুলিশের দাবি, ধৃত জানিয়েছে বাংলাদেশে এই কিটের চাহিদা বিপুল। লাভও অনেক বেশি। আটক ৬৮ প্যাকেট কিট বাংলাদেশে বিক্রি হত ১২-১৫ লক্ষ টাকায়। কয়েক দিন আগে পেট্রাপোল সীমান্ত এলাকায় দু’টি পৃথক ঘটনায় প্রায় ৯ লক্ষ টাকার ডেঙ্গি পরীক্ষার কিট-সহ দুই বাংলাদেশিকে আটক করেছিল বিএসএফ। পাচারকারীরা
কিটগুলি বাংলাদেশে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy