মাঠ দখল করে নির্মাণের অভিযোগ খতিয়ে দেখছেন বিডিও ও আরাবুল ইসলাম। নিজস্ব চিত্র।
খেলার মাঠ জবরদখল করে বেআইনি নির্মাণ হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলছেন মানুষ। ভাঙড় ২ ব্লকের নিউ বামনঘাটা এলাকার একটি জলাজমি সংস্কার করে খেলার মাঠ হিসেবে ব্যবহার হত। একটি ক্লাবের ছেলেমেয়েরাও মাঠ ব্যবহার করতেন। সম্প্রতি সেই মাঠ জবরদখল করে বেআইনি নির্মাণ হচ্ছে বলে অভিযোগ। স্থানীয় ক্লাব ও মানুষ প্রতিবাদ করার চেষ্টা করলে স্থানীয় রাজনৈতিক দলের কিছু নেতার পক্ষ থেকে ভয় দেখানো হয়েছে বলেও অভিযোগ উঠছে।
ভাঙড় ২ ব্লকের বামনঘাটা পঞ্চায়েত এলাকার অধিকাংশ জমি ওয়েটল্যান্ডের এক্তিয়ারভুক্ত। জলাভূমি আইন অনুযায়ী সেখানে নির্মাণ করা যায় না। প্রশাসনের নজর এড়িয়ে নির্মাণ হচ্ছে কী ভাবে, এ নিয়ে প্রশাসনের কাছেও সদুত্তর নেই।
কলকাতা লেদার কমপ্লেক্স থানার আইসি প্রশান্ত ভৌমিক বলেন, ‘‘আমাদের কাছে এ বিষয়ে কেউ কোনও লিখিত অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’’
ভাঙড় ২ বিডিও কার্তিকচন্দ্র রায় বলেন, ‘‘খেলার মাঠ দখল করে নির্মাণ হচ্ছে বলে খবর পেয়েছি। পুরো বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে। সেই মতো ব্যবস্থা নেব।’’ ভাঙড় ২ পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি আরাবুল ইসলাম জানান, এ ধরনের অনৈতিক কাজ তাঁরা মানবেন না। বৃহস্পতিবার বিডিও এবং আরাবুল এলাকায় গিয়েছিলেন। বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট দফতরের সঙ্গে তিনি কথা বলবেন বলে জানিয়েছেন আরাবুল।
বাসন্তী হাইওয়ে থেকে ঢিলছোড়া দূরত্বে বামনঘাটা-সোনারপুর রাস্তার পাশে ওয়েটল্যান্ডের এক বিঘা জমিতে খেলাধুলা হয়। প্রতি বছর ওই মাঠে জগদ্ধাত্রী পুজোও হয়। রাতারাতি সেই মাঠ এক প্রোমোটার কিছু নেতার সঙ্গে হাত মিলিয়ে জবরদখল করে নির্মাণ শুরু করেছেন বলে অভিযোগ। স্থানীয় এক শিক্ষক বলেন, ‘‘ছোট থেকে আমরা এই মাঠে খেলাধুলা করে বড় হয়েছি। এখনও অনেকে খেলাধুলো করে। সবুজ ধ্বংস করে বেআইনি নির্মাণ হচ্ছে।’’ স্থানীয় বাসিন্দা, তথা স্থানীয় ক্লাবের সদস্য ভবেন খাঁ বলেন, ‘‘আমরা চাই না এলাকার খেলার মাঠ এ ভাবে জবরদখল করে বেআইনি নির্মাণ করা হোক। আমরা চাই, অবিলম্বে নির্মাণ ভেঙে খেলার মাঠ ফিরিয়ে দেওয়া হোক।’’
কী ভাবে, কার অনুমতিতে পঞ্চায়েত এলাকায় জলাভূমি জবরদখল করে নির্মাণ হচ্ছে?
বামনঘাটা পঞ্চায়েতের প্রধান অমরেশ মণ্ডল বলেন, ‘‘ওয়েটল্যান্ডের জমিতে কাজ করার অনুমতি আমরা দিতে পারি না। তা ছাড়া, ওয়েটল্যান্ডের জমির ব্যাপারে আমরা মাথাও ঘামাই না। পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে কোনও ব্যবস্থাও নিতে পারি না।’’ তাঁর কথায়, ‘‘ওই জমিতে কোথাও বেআইনি ভাবে নির্মাণ হচ্ছে কি না, তা আমাদের পক্ষে দেখা সম্ভব নয়। প্রশাসনের উচিত বিষয়টি দেখা।’’
স্থানীয় বাসিন্দা রঞ্জিত মণ্ডলের অভিযোগ, শাসকদলের মদতে নির্মাণ হচ্ছে। ওয়েটল্যান্ড দফতরে অভিযোগ জানানো হলেও এখনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এ বিষয়ে সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য তুষার ঘোষ বলেন, ‘‘ওয়েটল্যান্ডের জমিতে এ ভাবে নির্মাণ করা যায় না। আমরা প্রতিবাদ জানাচ্ছি। নির্মাণ বন্ধের জন্য প্রশাসনের সব স্তরে অভিযোগ জানাব।’’ বামনঘাটার বিজেপি নেতা সুকুমার বরের কথায়, ‘‘এই সরকারের আমলে সবই সম্ভব। ওয়েটল্যান্ডের জমি রাতারাতি জবরদখল করে নির্মাণ করা হচ্ছে।’’
ভাঙড় ২ বিএলআরও আমিনুল ইসলাম দাবি করেছেন, বিষয়টি তাঁর জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখবেন।
কে কবে খোঁজ নেবেন, তারপরে আদৌ কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না, জানেন না স্থানীয় মানুষ। তবে এই পরিস্থিতিতে বিতর্কিত জমিতে নির্মাণ থেমে নেই— জানালেন স্থানীয় মানুষ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy