বাদুড়িয়ার নার্সিংহোম এবং রাজ্যের কিছু হোম ও নার্সিংহোম থেকে শিশু পাচার কাণ্ড সামনে আসতেই হুগলির মতো ব্যারাকপুরের নার্সিংহোম ও মেয়েদের হোমগুলিতে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নিল ব্যারাকপুর মহকুমা প্রশাসন।
ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার তন্ময় রায়চৌধুরী ইতিমধ্যেই সমাজকল্যাণ দফতরের কাছে ব্যারাকপুর কমিশনারেটে থাকা মেয়েদের হোম, নার্সিংহোম-সহ শিশু ও মেয়েদের নিয়ে কাজ করে এমন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার তালিকা চেয়েছেন। তবে তালিকা আসার আগেই পুরসভা ও থানাগুলিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এলাকার হোম, নার্সিংহোম ও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা সম্পর্কে বিস্তারিত রিপোর্ট তৈরি করতে হবে। নার্সিংহোমগুলির মধ্যে যেগুলি নিয়ে বেশি অভিযোগ সেগুলি স্বাস্থ্য দফতরের নজরে আনতেই এই ব্যবস্থা বলে জানিয়েছেন পুলিশ কর্তারা।
কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে
•নার্সিংহোম এবং মেয়েদের আবাসিক হোমগুলির পরিকাঠামো খতিয়ে দেখা।
•নথি ও কাগজপত্র দেখার পাশাপাশি আবাসিকদের সঙ্গে কথা বলে পরিষেবা ও পরিকাঠামোর বিষয়ে জানা।
•নার্সিংহোমে গিয়ে এলাকার বাসিন্দা বা ভর্তি হওয়া রোগীর আত্মীয়দের অভিযোগ থাকলে সেই অভিযোগ কী ধরনের এবং তা কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা খতিয়ে দেখা।
•নার্সিংহোমগুলির পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে সরকারি পরিকাঠামো কাজে লাগানো হচ্ছে। স্বাস্থ্য দফতর ও প্রশাসনের উদ্যোগে লাগাতার নজরদারি। কিন্তু হঠাৎ মহকুমা প্রশাসন এমন সিদ্ধান্ত নিল কেন?
ব্যারাকপুরের মহকুমাশাসক পীযূষ গোস্বামী জানান, উত্তর ২৪ পরগনার জেলারই আর এক প্রান্ত বাদুড়িয়ার নার্সিংহোমকে ঘিরেই এমন কাণ্ড হল। অনেক গরিব মানুষের বাস ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে। তা ছাড়া, যে ভাবে শিল্পাঞ্চলে নার্সিংহোম গজিয়ে উঠেছে, সেগুলিরও কাগজপত্র খতিয়ে দেখা উচিত। পীযূষবাবুর কথায়, ‘‘ঘিঞ্জি শিল্পাঞ্চলে ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে ওঠা নার্সিংহোমগুলিতে নজর রাখা হচ্ছে। এরপরে তাদের পরিকাঠামোও খতিয়ে দেখা হবে।’’
এ দিকে, ব্যারাকপুরের নার্সিংহোমগুলির পরিকাঠামো ও পরিষেবা খতিয়ে দেখতে স্বাস্থ্য দফতর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে বলে জানিয়েছেন উত্তর ২৪ পরগনার সহকারী মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অপূর্ব দাস-ও। তিনি বলেন, ‘‘যে নার্সিংহোমগুলির বিষয়ে ইতিমধ্যেই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ জানতে চেয়েছেন, সেগুলির ফাইল খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’ নার্সিংহোমগুলির প্রসব সংক্রান্ত ব্যবস্থা ও সে জন্য প্রয়োজনীয় সরকারি যে বিধি-নিয়ম আছে, তা মানা হচ্ছে কিনা সে বিষয়ে বেশি নজর দিতে অভিযান চালানোর কথাও ভাবছে প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতর।
ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটে বেশ কিছু হোম রয়েছে যেখানে ছোট মেয়েদের রাখা হয়। অনাথ মেয়েদের সঙ্গে দুঃস্থ পরিবারের মেয়েরাও সেখানে থাকে। বাইরের জগত থেকে এই হোমগুলির আবাসিকেরা কার্যত বিচ্ছিন্ন। বাইরের কাউকে যেমন ওই হোমের চৌহদ্দিতে ঢুকতে দেওয়া হয় না, তেমনি ওখানে থাকা শিশু ও মেয়েরা হোম কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া বাইরে বেরোতে পারে না। সরকার স্বীকৃত নয় এমন হোমগুলির সম্পর্কে এ বার পুলিশ কমিশনার নিজেই খোঁজ-খবর শুরু করেছেন। ওই হোমগুলির কর্তৃপক্ষকে চলতি সপ্তাহেই ডেকে পাঠানোর সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে যে সংস্থাগুলি ওই হোমে শিশুকন্যাদের নিয়ে কাজ করে, তাদের সঙ্গেও যোগাযোগ শুরু করেছে প্রশাসন। পুলিশ কমিশনার বলেন, ‘‘নার্সিংহোম ও হোমগুলির পরিকাঠামো নিয়ে আমরা পদক্ষেপ করছি। বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রাসঙ্গিক বলেই জরুরি এই পদক্ষেপ। আশা করব সকলেই স্বচ্ছতা বজায় রাখবেন।’’ না হলে প্রশাসন থেকে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy