Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
Death

হাসপাতাল চত্বরেই বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু ভবঘুরের

এলাকার মানুষ জানাচ্ছেন, সকাল থেকেই হাসপাতালের মূল প্রবেশদ্বারের কাছে রাস্তার উপরে পড়েছিলেন বৃদ্ধা। গায়ের উপরে মাছি ভনভন করছিল। তবে কেউ সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেননি।

An image of Death

হাসপাতাল চত্বরে পড়ে আছে ভবঘুরের নিথর দেহ। ছবি: সামসুল হুদা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ভাঙড় শেষ আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৯:৩৬
Share: Save:

হাসপাতাল চত্বরেই বিনা চিকিৎসায় মারা গেলেন এক ভবঘুরে। বেশ কয়েক ঘণ্টা ধরে সেখানেই পড়ে থাকল নিথর দেহ।

ঘটনাটি ভাঙড় ২ ব্লকের জিরেনগাছা ব্লক হাসপাতালের। শনিবার সকাল ৭টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত হাসপাতাল চত্বরে পড়ে ছিল বছর সত্তরের অজ্ঞাতপরিচয় ওই ভবঘুরের দেহ। পরে পুলিশ দেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তে পাঠায়। পরিচয় জানার চেষ্টা চলছে।

এলাকার মানুষ জানাচ্ছেন, সকাল থেকেই হাসপাতালের মূল প্রবেশদ্বারের কাছে রাস্তার উপরে পড়েছিলেন বৃদ্ধা। গায়ের উপরে মাছি ভনভন করছিল। তবে কেউ সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেননি। রোগী, তাঁদের আত্মীয়-পরিজন, চিকিৎসক, নার্স— কেউ ফিরেও তাকাননি। খবর পেয়ে দ্রুত পৌঁছন সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরা। তাঁরা ছবি তুলতে গেলে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠে হাসপাতালে কর্তব্যরত এক সিভিক ভলান্টিয়ার ও এক হাসপাতালের চতুর্থ শ্রেণির কর্মীর বিরুদ্ধে। সাংবাদিকদের মোবাইল ফোন কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হয় বলেও অভিযোগ। ছবি মুছে ফেলার জন্য চাপ দেওয়া হয়।

খবর পেয়ে আসে কাশীপুর থানার পুলিশ। এক পুলিশ অফিসারও গাড়ি থেকে নেমে সংবাদমাধ্যমের কর্মীদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ। প্রতিবাদ করতে গেলে স্থানীয় বাসিন্দা দেবদাস মণ্ডল নামে এক রোগীর আত্মীয়কে পুলিশ জামার কলার ধরে গাড়িতে তোলে। পরে সাধারণ মানুষের চাপে পড়ে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

পুলিশ ও হাসপাতাল কর্মীদের এমন অমানবিক আচরণ দেখে ক্ষুব্ধ এলাকার মানুষ। তাঁদের দাবি, সকালের দিকেও বেঁচে ছিলেন বৃদ্ধা। সেবা-যত্ন পেলে বেঁচেও যেতে পারতেন। আতিয়ার গাজি নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘আমি হাসপাতালে ঢোকার সময়ে দেখি ওই বৃদ্ধার দেহ পড়ে আছে। ডাক্তার দেখানোর তাড়া ছিল বলে হাসপাতালে ঢুকে যাই। হাসপাতালের কর্মীদের বৃদ্ধার কথা জানাই। তাঁরা কথা কানে তোলেননি। সঠিক সময়ে চিকিৎসা হলে হয় তো বাঁচানো সম্ভব হত।’’

হাসপাতালের দাবি, যতক্ষণ না পর্যন্ত রোগীর পরিবার-পরিজনের কেউ ইমারজেন্সিতে এসে নাম নথিভুক্ত করেন, ততক্ষণ কর্তৃপক্ষের কিছু করার থাকে না। তা ছাড়া, রাস্তায় কোনও দেহ পড়ে থাকলে পুলিশে মামলা হয়। সে ক্ষেত্রে আগ বাড়িয়ে হাসপাতালের কিছু করার থাকে না। যাঁরা অভিযোগ করছেন, তাঁরা কেন সঠিক সময়ে ওই রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে এলেন না, খাবার দিলেন না, সে প্রশ্ন তুলছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সাংবাদিক নিগ্রহের প্রসঙ্গে কর্তৃপক্ষের দাবি, অনেকেই সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে মহিলা ওয়ার্ডে ঢুকে ছবি তোলেন। পরিচয়পত্র দেখতে চাইলে তাঁরা দেখান না। ফলে ছবি তোলার ক্ষেত্রে আপত্তি জানানো হয়।

হাসপাতালের বিএমওএইচ হিরন্ময় বসু বলেন, ‘‘এটা ঠিক যে এক বৃদ্ধার দেহ পড়েছিল। আমাদের কর্মীরা খবর পেয়ে পুলিশকে জানান। সেই মতো পুলিশের উপস্থিতিতে দেহ উদ্ধার করা হয়। নিয়ম মেনেই সমস্ত কাজকর্ম করা হয়েছে।’’কোনও রকম গাফিলতির অভিযোগ মানতে চাননি তিনি।

অন্য বিষয়গুলি:

Death Bhangar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy