প্রতীকী ছবি।
বেআইনি ভাবে কন্যাসন্তান হস্তান্তরের অভিযোগে তার বাবা এবং এক দম্পতির বিরুদ্ধে তদন্তে নেমেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বকুলতলা থানা।
পুলিশ সূত্রে খবর, কুলতলির এক ব্যক্তি তাঁর দু’মাসের কন্যাসন্তানকে বকুলতলার এক দম্পতিকে ‘দান’ করেছিলেন। স্থানীয় সূত্রে খবর পেয়ে পুলিশ ও জেলা চাইল্ড লাইন শিশুটিকে উদ্ধার করে। শুক্রবার দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটি শিশুটিকে কলকাতার একটি হোমে রাখার নির্দেশ দেন।
জেলা চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির চেয়ারপার্সন অনিন্দিতা বন্দ্যোপাধ্যায় টামটা বলেন, ‘‘দু’মাসের ওই কন্যাসন্তান এক দম্পতিকে দিয়েছিলেন তার বাবা। দানপত্র লেখা হয়েছিল স্ট্যাম্প পেপারে। এ ভাবে সন্তান হস্তান্তর বেআইনি। পুলিশকে বিষয়টি তদন্ত করতে বলা হয়েছে।’’
বকুলতলা থানার এক আধিকারিক বলেন, ‘‘ওই দম্পতির দাবি, তাঁরা কন্যা সন্তানটি দত্তক নিয়েছেন। কিন্তু এ ভাবে দত্তক নেওয়া যায় না। দত্তক নেওয়ার সরকারি নিয়ম রয়েছে।’’ তিনি জানান, ওই দম্পতি এবং শিশুটির বাবার বিরুদ্ধে ‘জুভেনাইল জাস্টিস অ্যাক্ট’-এর ৮০ নম্বর ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। তাঁদের নোটিস পাঠিয়ে ডাকা হবে। তাঁদের কাছে কী নথি রয়েছে তা দেখাতে বলা হবে।
দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা চাইল্ড লাইনের কো-অর্ডিনেটর অভিজিৎ বসু জানান, স্থানীয় সূত্রে তাঁরা জানতে পারেন, গত ৭ মে বকুলতলার এক দম্পতিকে নিজের কন্যাসন্তান দান করেছেন কুলতলির এক ব্যক্তি। দ্রুত ঘটনার কথা বকুলতলা থানায় জানানো হয়। শুক্রবার চাইল্ড লাইনের প্রতিনিধি ও পুলিশ ওই দম্পতির বাড়ি থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করে। হাসপাতালে শারীরিক পরীক্ষার পরে, তাকে নিয়ে যাওয়া হয় জেলা চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির কাছে।
পুলিশ জানায়, অর্থের বিনিময়ে ওই ব্যক্তি তাঁর কন্যাকে দান করেছিলেন কিনা, তা স্পষ্ট নয়। তবে এ বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হবে। পুলিশের দাবি, প্রাথমিক খোঁজখবরে জানা গিয়েছে, শিশুটির বাবা এবং ওই দম্পতি পরস্পরের দূর সম্পর্কের আত্মীয়। অভিযুক্ত তিন জন এবং শিশুটির মায়ের সঙ্গে কথা বলেছে পুলিশ।
পুলিশের দাবি, শিশুটির জন্মের পরেই তাকে স্বামীর কাছে রেখে চলে গিয়েছিলেন মা। পরে, তিনি দ্বিতীয় বিয়ে করেন। শিশুটির বাবাও দ্বিতীয় বিয়ে করেছেন। এখন শিশুটির বাবা এবং মা—কেউই তাকে রাখতে ইচ্ছুক নন। সে কারণেই মেয়েকে ‘দান’ করেছিলেন তার বাবা।
পুলিশ জানায়, যে দম্পতি শিশুটিকে নিয়েছিলেন, তাঁরা দাবি করেছেন, তাঁদের দুই পুত্রসন্তান রয়েছে। নেই কন্যাসন্তান। তাঁরা একটি কন্যাসন্তান চান। সে কারণেই শিশুটিকে তাঁরা ‘দত্তক’ নিয়েছেন। এক পুলিশ আধিকারিক বলেন, ‘‘আমরা তাঁদের বক্তব্য শুনেছি। কিন্তু ওই দাবিগুলিও খতিয়ে দেখতে হবে। সে কারণেই তাঁদের নোটিস পাঠানো হবে।’’
রাজ্য নারী ও শিশুকল্যাণ দফতর সূত্রে খবর, করোনা-পর্বে অনেক নাবালক-নাবালিকা তাদের বাবা, মা অথবা দু’জনকেই হারিয়ে কার্যত অনাথ হয়ে গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে বেআইনি ভাবে শিশু হস্তান্তরের আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। দফতরের তরফে প্রত্যেক জেলায় এ নিয়ে নজরদারি চালাতে বলা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy