ক্যানিংয়ে সন্দীপ ঘোষের সেই বাংলো। —নিজস্ব চিত্র।
আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের একটি বাংলোর হদিস মিলল দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিংয়ে। ক্যানিং-২ ব্লকের ঘুটিয়ারি শরিফের নারায়ণপুর মৌজায় কয়েকশো বিঘা ফাঁকা জমির মাঝেই মাথা তুলেছে সবুজরঙা দোতলা একটি বাংলো। বাংলোর উপরে লেখা ‘সঙ্গীতাসন্দীপ ভিলা’। বাংলোটির চারদিকে রয়েছে লম্বা পাঁচিল। স্থানীয়দের একাংশের দাবি, এই বাংলোটি সন্দীপের। পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে ‘ডাক্তারবাবুকে’ এই বাংলোতে আসতেও দেখছেন তাঁরা।
সন্দীপের স্ত্রীর নাম সঙ্গীতা ঘোষ। স্থানীয়দের বক্তব্য, স্ত্রী এবং নিজের নাম মিলিয়ে বাংলোটির নাম দিয়েছিলেন সন্দীপ। বাংলো এবং বাংলো সংলগ্ন এলাকায় রয়েছে কয়েকশো বিঘা জমি। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, একটি বেসরকারি সংস্থা কয়েকটি প্লটে বিভক্ত করে জমিগুলি বিক্রি করছে। ওই সংস্থাই দুই বিঘা জমির উপরে বাংলোটি তৈরি করেছিলেন, যেটি পরে কেনেন সন্দীপ। বাংলোর পাশে কয়েক বিঘা জমিতে খামারবাড়ি তৈরি করেছেন স্থানীয় কয়েক জন যুবক। স্থানীয় এক বাসিন্দার কথায়, “বেশ কয়েক বছর আগে বাংলোটি তৈরি হয়। মাঝেমধ্যে ডাক্তারবাবুকে আসতে দেখেছি। শুনেছিলাম উনি কলকাতার আরজি কর হাসপাতালের অধ্যক্ষ।”
সন্দীপ কখন বাংলোয় আসতেন, এই প্রশ্নের উত্তরে স্থানীয় ওই বাসিন্দা বলেন, “সকাল ১০টা নাগাদ আসতেন। আবার ৪টে-সাড়ে ৪টে নাগাদ চলে যেতেন। ডাক্তারবাবুর বাবা এবং স্ত্রীকেও আসতে দেখেছি।” প্রসঙ্গত, আরজি কর হাসপাতালে দুর্নীতির মামলায় গত সোমবার সিবিআই গ্রেফতার করেছে সন্দীপকে। আলিপুরের বিশেষ আদালত সন্দীপকে আট দিন সিবিআই হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে। শুক্রবার সকালে সন্দীপের বেলেঘাটার বাড়িতে হানা দিয়ে তল্লাশি অভিযান শুরু করেছে ইডি। মনে করা হচ্ছে, আর্থিক দুর্নীতি মামলার তদন্তে এ বার নামতে চলছে এই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাটিও।
গত ৯ অগস্ট আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনার পর থেকেই তৎকালীন অধ্যক্ষ সন্দীপের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে নানা মহলে। তদন্তভার হাতে পাওয়ার পর গত ১৫ অগস্ট তাঁকে প্রথম বার তলব করে সিবিআই। সেই দিন হাজিরা দেননি সন্দীপ। পরদিন অবশ্য সল্টলেকের রাস্তা থেকে সিবিআইয়ের গাড়িতে ওঠেন তিনি। সেই গাড়িতে সিবিআইয়ের এক আধিকারিকও ছিলেন। সন্দীপ যান সিজিও কমপ্লেক্সের সিবিআই দফতরে। তার পর থেকে এক দিন বাদ দিয়ে টানা ১৫ দিন তাঁকে সিজিও কমপ্লেক্সে জিজ্ঞাসাবাদ করে সিবিআই। দৈনিক ১০ থেকে ১৪ ঘণ্টা পর্যন্ত সিবিআই দফতরে থাকতে হয়েছিল সন্দীপকে। কেবল ২৫ অগস্ট সকালে সন্দীপের বেলেঘাটার বাড়িতে হানা দিয়েছিল সিবিআইয়ের একটি দল। ওই দিন সন্দীপকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় তাঁর বাড়িতেই। প্রসঙ্গত, সন্দীপের বিরুদ্ধে হাসপাতালের বহু বিষয় নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ করেছিলেন আরজি করের প্রাক্তন ডেপুটি সুপার আখতার আলি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy