Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Sanskrit

সংস্কৃতে মজে নিলুফা-সামসুরেরা

বুধবার থেকে শুরু হওয়া ‘নবদ্বীপ বঙ্গবিবুধ জননী সভা’ পরিচালনায় কথ্য সংস্কৃত ভাষাশিক্ষার পাঠক্রমে ইতিমধ্যে ২০৬ জন নাম নথিভুক্ত করিয়েছেন।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়
নবদ্বীপ শেষ আপডেট: ০৯ জানুয়ারি ২০২০ ০১:২৬
Share: Save:

সংস্কৃতে কথা বলা শেখানো বা ‘স্পোকন সংস্কৃত’-র প্রথম দিনের ক্লাস। ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে প্রাথমিক পরিচয়পর্বে ‘ভারতী চতুষ্পাঠী সংস্কৃত মহাবিদ্যালয়’-এর অধ্যাপক বললেন, ‘মম নাম গৌতম শতপথী।’ এর পর তিনি প্রত্যেককে একই ভাবে নাম বলতে বললেন। তখনই পর-পর শোনা গেল— মম নাম রোশনি খাতুন, মম নাম নিলুফা ইয়াসমিন, মম নাম সামসুর শেখ!

বুধবার থেকে শুরু হওয়া ‘নবদ্বীপ বঙ্গবিবুধ জননী সভা’ পরিচালনায় কথ্য সংস্কৃত ভাষাশিক্ষার পাঠক্রমে ইতিমধ্যে ২০৬ জন নাম নথিভুক্ত করিয়েছেন। তার মধ্যে ২১ জন শিক্ষার্থী মুসলিম। দেশ জুড়ে বিভেদকামী শক্তির বাড়বাড়ন্তের এই দুঃসময়েও সংস্কৃত চর্চায় ধর্মের ভেদাভেদ মুছে যাওয়ায় উচ্ছ্বসিত আয়োজকেরা।

কেন্দ্রীয় শ্রমিক সংগঠনের ডাকা ধর্মঘটের দিন আদৌ কেউ ক্লাস করতে আসবেন কিনা, সে বিষয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলেন তাঁরা। কিন্তু তাঁদের আশঙ্কাকে উড়িয়ে দিয়ে সকাল ন’টার সময় উপস্থিত হয়েছিলেন ১৫০ জন। সেই দলেই ছিলেন নিলুফা, রোশনিদের মতো ১৬ জন মুসলিম শিক্ষার্থী। প্রসঙ্গত, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়-সহ রাজ্যের একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে সংস্কৃত বিভাগে প্রায় প্রতি বছরই বেশ কিছু মুসলিম পড়ুয়া ভর্তি হন। একাধিক কলেজে সংস্কৃত পড়ান মুসলিম অধ্যাপক বা অধ্যাপিকা।

লক্ষ্মীপুরের বাসিন্দা নিলুফা আর সামসুর সংস্কৃত এমএ-র দ্বিতীয় বর্ষের পড়ুয়া। জানালেন, আরও ভাল করে সংস্কৃত জানতে তাতে কথা বলা শিখতে এসেছেন। এত বিষয় থাকতে সংস্কৃত কেন? সংস্কৃত শিখে লাভ হবে? শিক্ষার্থীরা জানালেন, পরিচিত অনেকে সংস্কৃত পড়ে শিক্ষকতা বা অধ্যাপনা করছেন।বিদেশেও সংস্কৃতের চাহিদা বাড়ছে।

আত্মবিশ্বাসের চাহনি নিয়ে নিলুফা-সামসুরেরা বলেন, “আমাদের কাছে বাংলা বা ইতিহাসের মতো সংস্কৃত একটা বিষয়। এর মধ্যে অন্য কোনও সঙ্কীর্ণ ধারণার জায়গা নেই। এই ভাষায় আমাদের বহু পরিচিত উচ্চশিক্ষার সুযোগ পেয়েছেন এবং চাকরি করছেন। সংস্কৃতকে বেছে নিয়েছি ভবিষ্যতে পেশার জন্য।” অধ্যাপক গৌতম শতপথীর কথাতেও, “আমাদের কলেজ থেকে পাশ করা শাবানা খাতুন, বনি শেখ এখন বেদান্ত নিয়ে পিএইচডি করছে। নাসির শেখ কাটোয়ার হাইস্কুলে শিক্ষকতা করছে। নেট পাশ করছে জনা তিনেক।” কিন্তু সংস্কৃত পঠনের মধ্যে কিছুটা বেদ, বেদান্ত, গীতা, পুরাণ-ও পড়তে হয়। নিলুফা, রোশনিরা বলেন, “পাঠ্য বিষয়ের কোনও ধর্ম হয় না। গীতা-পুরাণকে আমরা পাঠ্যবই হিসাবেই দেখি।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Sanskrit Nabadwip
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy