Advertisement
E-Paper

গিরিশ পার্কে ব্যবসায়ীকে খুন করে ট্রলিতে দেহ ভরে পাড়ি! ঠনঠনিয়া কালীবাড়ির কাছে ধৃত দ্বিতীয় খুনি

মঙ্গলবার গভীর রাতে কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ের উপরে একটি অ্যাপ ক্যাবের ডিকি থেকে একটি ট্রলি ব্যাগ উদ্ধার করে পুলিশ। ট্রলি খুলে দেখা যায় সেলোটেপ লাগানো একটি বস্তা। সেটি খোলার পর মেলে এক ব্যক্তির দেহ

trolley

নীল রঙের ট্রলি ব্যাগে ব্যবসায়ীর দেহ ভরে গাড়িতে উঠেছিলেন খুনিরা। —নিজস্ব চিত্র।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ মার্চ ২০২৫ ১১:০১
Share
Save

উত্তর কলকাতার গিরিশ পার্ক এলাকায় ব্যবসায়ীকে খুন করে ট্রলি ব্যাগে তাঁর দেহ ভরে প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা হয়েছিল। উত্তর ২৪ পরগনার ঘোলায় কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ের উপর ট্রলির ভিতরে দেহ উদ্ধারের ঘটনায় এমনই তথ্য পেল পুলিশ। ইতিমধ্যে ঠনঠনিয়া কালীবাড়ির অদূরে একটি বাড়ি থেকে গ্রেফতার হয়েছেন খুনে অভিযুক্ত দ্বিতীয় ব্যক্তি। জানা গিয়েছে খুন হওয়া ব্যক্তির পরিচয়ও। পুলিশ সূত্রের খবর, ৮ লক্ষ টাকার জন্য খুন করা হয় ভাগারাম দেবাসী নামে ওই ব্যবসায়ীকে।

মঙ্গলবার গভীর রাতে কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ের উপরে একটি অ্যাপ ক্যাবের ডিকি থেকে একটি ট্রলি ব্যাগ উদ্ধার করে পুলিশ। ট্রলি খুলে দেখা যায় সেলোটেপ লাগানো একটি বস্তা। সেটি খোলার পর মেলে এক ব্যক্তির দেহ। মুখে সেলোটেপ এবং গলায় ক্ষতচিহ্ন ছিল তাঁর। ওই ঘটনায় অ্যাপ ক্যাবের এক যাত্রীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তবে দ্বিতীয় যাত্রী পুলিশকে দেখে পালিয়েছিলেন। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে তাঁকে ঠনঠনিয়া কালীবাড়ির অদূরে মুক্তারাম স্ট্রিট এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতের নাম কৃশপাল সিংহ।

জানা গিয়েছে, মৃত ভাগারাম রাজস্থানের বাসিন্দা। বড়বাজারে কাপড়ের ব্যবসা করতেন তিনি। থাকতেন গিরিশ পার্ক এলাকায়। ব্যবসায়িক সূত্রে তাঁর পরিচয় কৃশপাল এবং করণ সিংহের সঙ্গে। পুলিশি তদন্তে উঠে এসেছে, অভিযুক্তদের কাছ থেকে প্রায় ৮ লক্ষ টাকা নিয়েছিলেন ভাগারাম। কিন্তু ওই টাকা ফেরত দিতে তিনি টালবাহানা করছিলেন। তারই হেস্তনেস্ত করতে মঙ্গলবার গিরিশ পার্ক এলাকায় ভাগারামের কাছে যান কৃশপাল ও করণ। সেখানে কফিতে বিষ মিশিয়ে ভাগারামকে খাওয়ান তাঁরা। ভাগারাম কফি খেয়ে অচৈতন্য হয়ে গেলে তাঁকে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়। তার পর গলার নলিও কাটা হয়। এর পর নীল রঙের একটি ট্রলি ব্যাগে ভাগারামের দেহ ভরে প্রথমে অভিযুক্তেরা চলে যান দমদম নাগেরবাজার এলাকায়। রাত ৯টা নাগাদ অ্যাপ ক্যাব ভাড়া করে দেহ তুলে নদিয়ার দিকে পাড়ি দেন তাঁরা।

খুনিদের পরিকল্পনা ছিল কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ের কাছে কোনও একটি নির্জন জায়গায় ট্রলিটি ফেলে পালিয়ে যাওয়ার। তবে অ্যাপ ক্যাবের চালকের জন্য তাঁদের ওই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হয়নি। মাঝরাস্তায় হঠাৎ গাড়ি থামাতে বলায় কৌতূহলী হয়ে পড়েন রাহুল অধিকারী নামে গাড়িচালক। তাঁর দাবি, কেন গাড়ি থামানো হল, এ নিয়ে প্রশ্ন করায় তাঁকে নানা কথা বলেন করণ ও কৃশপাল। তাঁদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হচ্ছিল। সেই সময় টহলরত পুলিশ ভ্যান থেকে নেমে পুলিশকর্মীরা গাড়িটির কাছে এগোতেই কৃশপাল দৌড়ে পালান। ঘটনাক্রমে ট্রলির মধ্যে দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ট্রলির মধ্যে মেলে নগদ ৬৫ হাজার টাকা এবং রক্তমাখা অস্ত্রও। গ্রেফতার হন করণ। তাঁকে থানায় নিয়ে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার পর বিভিন্ন তথ্য পান তদন্তকারীরা। এর পর মোবাইল ফোনের টাওয়ার লোকেশন ট্র্যাক করে কৃশপালকে মুক্তারামবাবু স্ট্রিটে গিয়ে পাকড়াও করেছে পুলিশ।

ওই অ্যাপ ক্যাবের চালক জানিয়েছেন, কিছু দিন আগে কুমোরটুলিতে ট্রলি থেকে মহিলার দেহ উদ্ধারের ঘটনার কথা তিনি জানেন। তাই দুই যাত্রীর ট্রলি ব্যাগে কী রয়েছে, জানতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর প্রশ্নের জবাব পাননি। বরং কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়েতে তাঁর সঙ্গে যখন তর্কাতর্কি হয়, তখন অভিযুক্তেরা তাঁকে কিছু টাকা দিতে চান মুখ বন্ধ করার জন্য। তিনি অস্বীকার করেন। সেই সময় সেখানে উপস্থিত হয় পুলিশ।

প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ মনে করছে, পরিকল্পনা করেই ব্যবসায়ীকে খুন করা হয়েছে। দেহ কোথায় গায়েব করার জন্য কোথায় নিয়ে যাওয়া হবে, তা আগেই ঠিক করেছিলেন খুনিরা। আরও তথ্যের জন্য ধৃত দু’জনকে জেরা করা হচ্ছে।

Trolley case Crime Murder Case arrest

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}