দুই নিহত। আজাহার আলি (বাঁ দিকে) ও নাসিম আলি।
এক জন স্কুল পড়ুয়া কিশোর। সে মুদি দোকান থেকে ফিরছিল। অন্য জন যুবক। তিনি নমাজ শেষে ফেরার পথে মসজিদের সামনে দাঁড়িয়েছিলেন।
বৃহস্পতিবার রাতে দু’জনেরই আর বাড়ি ফেরা হয়নি। অভিযোগ, তৃণমূলের গোষ্ঠী সংঘর্ষ আর বোমাবাজির মাঝে পড়েই মারা গিয়েছেন কেশপুরের ধলহারার দামোদরচকের বাসিন্দা আজাহার আলি (১৩) ও নাসিম আলি (৪২)।
আজাহার শাঁকপুর হাইস্কুলের সপ্তম শ্রেণিতে পড়ত। আর নাসিমের ভাই সেলিম আলি তৃণমূলের স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য হলেও নাসিম মুম্বইয়ে জরির কাজ করতেন। মাসখানেক আগে ফিরেছিলেন। রাজনীতির যোগ-শূন্য দু’টি তরতাজা প্রাণের এই পরিণতিতে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। সাইদুল আলি, মনজুরা বিবিরা বলছেন, ‘‘রাজনীতির ফায়দা পেতে কিছু মানুষ গোলমাল পাকাচ্ছে। আর তার ফল ভুগতে হচ্ছে নিরীহদের।’’
তৃণমূলের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি অজিত মাইতির অভিযোগ, ‘‘এর পিছনে বিজেপি-আশ্রিত দুষ্কৃতীরা আছে।’’ তবে তিনি মানছেন, মৃত দু’জনই নিরীহ মানুষ। বিজেপির ঘাটাল সাংগঠনিক জেলা সভানেত্রী অন্তরা ভট্টাচার্যের অভিযোগ, ‘‘থানার অদূরেই ঘটনাস্থল। পুলিশ যথাযথ ভূমিকা নিলে এমন ঘটনা ঘটত না।’’ মৃত আজাহারের বাবা পেশায় ফেরিওয়ালা শুকরত আলিও বলেন, ‘‘পুলিশ দাঁড়িয়ে থাকল। ছেলেটাকে তুলল না। রক্তাক্ত ছেলেকে ধরে আমি এক ঘণ্টা গ্রামের এ মাথা, সে মাথা ঘুরেছি।’’ আজাহারের মা আর্জিয়া বিবিরও হাহাকার, ‘‘বিনা চিকিৎসায় ছেলেটা মারা গেল।’’ ঘটনায় ১২ জনকে গ্রেফতার ও ৪ জনকে আটক করা হয়েছে। জেলার এসপি দীনেশ কুমার বলেন, ‘‘কারা ‘‘গোলমালের পিছনে দেখা হচ্ছে।’’
স্থানীয় সূত্রের খবর, দামোদরচকে তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি শেখ বসিরউদ্দিনের অনুগামীদের সঙ্গে পঞ্চায়েত সদস্য সেলিম আলির অনুগামীদের বিরোধ আছে। তার মূলে বিভিন্ন প্রকল্পের টাকার বখরা। বৃহস্পতিবার রাতে যাঁর নেতৃত্বে হামলা হয় বলে অভিযোগ, সেই এক্তার আলি বসিরউদ্দিনের অনুগামী। বিকেলে দুই গোষ্ঠীর এক দফা গোলমাল পুলিশের হস্তক্ষেপে মিটেছিল। রাতে ফের খেজুরবনি, শাঁকপুর, গরগজপোতা, পঞ্চমীর মতো এলাকা থেকে লোকজন এনে হামলা চালায় এক্তার ও তাঁর দলবল। হয় বোমাবাজি।
সেলিমের অভিযোগ, ‘‘গোলমাল সবটা এক্তারের নেতৃত্বে হয়েছে। ও আগে সিপিএম করত। এখন দিনে তৃণমূল, রাতে বিজেপি করে।’’ যদিও অন্তরার দাবি, ‘‘পুরোটাই তৃণমূলের নিজস্ব গোলমাল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy