প্রতীকী চিত্র।
দিনের ব্যস্ত সময়ে প্রায় একশো শতাংশ ট্রেন চালাতে সহমত হল রাজ্য এবং রেল। বৃহস্পতিবার ভবানী ভবনে মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় সহ-প্রশাসনের শীর্ষকর্তারা বৈঠক করেন রেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে। রেল জানায়, এ বার থেকে অফিসের ব্যস্ত সময় হাওড়া এবং শিয়ালদহ শাখায় ৯৫ শতাংশ, অথবা তেমন প্রয়োজনে একশো শতাংশের কাছাকাছি ট্রেন চালানো হবে। তবে কালীপুজো এবং জগদ্ধাত্রী পুজোয় ট্রেন বন্ধ রাখা হবে কি না, তা নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।
প্রায় আট মাস পরে বুধবার থেকে লোকাল ট্রেন চলাচল ফের শুরু হয়েছে। প্রশাসন এবং রেল-কর্তাদের বক্তব্য, পরিষেবার দিক থেকে প্রথম দিনের অভিজ্ঞতা মিশ্র। প্রসঙ্গত, বুধবারই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, “রেলকে আবারও বলব, বেশি করে ট্রেন চালান। যাতে গাদাগাদি করে মানুষ ট্রেনে না ওঠেন।” এ দিনের বৈঠকে তাই ট্রেনের সংখ্যা বাড়ানোর পাশাপাশি দু’টি ট্রেনের মধ্যে সময়ের ব্যবধান কমানোর ব্যাপারে রেলকে অনুরোধ করে রাজ্য। মুখ্যসচিব বলেন, “যথাসাধ্য ট্রেন সংখ্যা বাড়িয়ে যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্য নিশ্চিত করা এবং কোভিড সংক্রমণের আশঙ্কা কমাতে ঐকমত্য হয়েছে। রাজ্য সরকারও রেলকে সব ধরনের সহযোগিতা করবে।”
এ দিন পর্যন্ত ব্যস্ত সময়ে পূর্ব রেলে ৮৪% ট্রেন চলছে। রেলের দাবি, করোনা পর্বের আগে সাধারণ দিনে হাওড়া এবং শিয়ালদহ শাখায় প্রায় ৩০ লক্ষ মানুষ যাতায়াত করতেন। বুধবার, পরিষেবার শুরুর দিন সেই সংখ্যা ছিল প্রায় ১০ লক্ষ। প্রাক্ কোভিড-কালে যেখানে ট্রেনপিছু প্রায় ২২০০ যাত্রী যাতায়াত করতেন, সেখানে বুধবার সেই সংখ্যা ছিল কমবেশি ১২০০। তবুও কিছু ট্রেনে ভিড় হওয়ায় পরিষেবা আরও বাড়াতে রাজি হয়েছে রেল। রেলের এক কর্তা বলেন, “প্রাথমিক পরিকল্পনা ছিল, ৪৬% ট্রেন চালানো হবে। কিন্তু যাত্রীদের চাহিদার কথা মাথায় রেখেই ট্রেন সংখ্যা অনেক বাড়ানো হয়েছিল।”
প্রশাসনিক সূত্রের দাবি, কালীপুজো ও জগদ্ধাত্রী পুজোয় সাধারণ ভাবে রেল পরিষেবার উপরে কতটা চাপ থাকে, তা পর্যালোচনার কাজ চলছে। তবে কালীপুজো শনিবার। আধিকারিকদের অনেকের দাবি, শনিবার ছুটির দিন হওয়ায় এমনিতেই যাত্রীর চাপ কম থাকে।
বুধবারের মতো এ দিনও রাজ্যের অনেক স্টেশনে, লোকাল ট্রেনে উপচে উঠেছে যাত্রীদের ভিড়। বাগনান, উলুবেড়িয়া, আন্দুল স্টেশনে দেখা গিয়েছে, দূরত্ব-বিধি কার্যত উধাও। টিকিট কাউন্টারে ভিড় অনিয়ন্ত্রিত বলে অভিযোগ যাত্রীদের একাংশের। পুলিশের সংখ্যাও কম। একই ‘পরিস্থিতি’ হুগলির বিভিন্ন স্টেশনেও। ট্রেনের ভিতরে মুখোমুখি দু’টি সারির ছ’টি আসনে আট জনকেও বসতে দেখা গিয়েছে। বহু মানুষ ভিড় করে দাঁড়িয়ে গিয়েছেন। শান্তিপুর, কৃষ্ণনগর শাখার ট্রেনেও ছিল একই ছবি।বনগাঁ, নৈহাটি, ক্যানিং, হাসনাবাদ, ডায়মন্ড হারবার শাখাতেও যাত্রীদের ভিড়ে শিকেয় ওঠে দূরত্ব-বিধি। সকাল থেকে বহরমপুর-সহ বিভিন্ন স্টেশনে যাত্রীদের ভিড় ছিল। কিন্তু সকলের মুখে মাস্ক ছিল না। চোখে পড়েনি নজরদারিও।
খড়্গপুর স্টেশনে দেখা গেল, অধিকাংশ সময়ে থার্মাল স্ক্যানিং ছাড়া অবাধে ঢুকছেন যাত্রীরা। যাত্রীদের একাংশ মাস্ক ছাড়াই সফর করেছেন ট্রেনে। রেল পুলিশ বা সিভিক ভলান্টিয়ারদের যাত্রীদের তাপমাত্রা পরীক্ষা করতেদেখা যায়নি।
প্ল্যাটফর্মে ভিড় নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষেত্রেও শিথিলতা চোখে পড়েছে আর পি এফের। এ প্রসঙ্গে ডিআরএম মনোরঞ্জন প্রধান বলেন, ‘‘রেল এবং রাজ্য নির্দিষ্ট সমন্বয়ের ভিত্তিতে কাজ করছে। স্টেশনের বাইরে ভিড় নিয়ন্ত্রণ, থার্মাল স্ক্যানিং রাজ্যের দায়িত্ব। স্টেশনের ভিতর ভিড় সামলানো রেলের। কোথাও কোনও ফাঁকফোঁকর থাকলে খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
পূর্ব বর্ধমানে ট্রেনের ভিতরে মাস্ক খুলে গল্পগুজব করতে দেখা গিয়েছে অনেক যাত্রীকে। কাটোয়ার মিঠু সরকার, কালনার সুদীপ সামন্তদের বক্তব্য, ‘‘এ ভাবে চললে করোনা সংক্রমণ বাড়বে।’’আদ্রা ডিভিশনে ট্রেন না-চলার প্রতিবাদে বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরের রেল ফটকে শতাধিক মানুষ অবরোধ করেন। তার জেরে ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কে প্রায় দু’ঘণ্টা যান চলাচল ব্যাহত হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy