গোলাবাড়ি স্কুল রোডের আবাসনে বুধবার গভীর রাতের ঘটনা অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে কি না, তা জানতে আদালতের দ্বারস্থ হল হাওড়া সিটি পুলিশ। পুলিশের বক্তব্য, ওই ঘটনায় দু’পক্ষই থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে এবং তাতে এমন কিছু অপরাধের উল্লেখ নেই যা আদালতগ্রাহ্য। তাই আদালতের নির্দেশ না পাওয়া পর্যন্ত তদন্ত শুরু করা হবে না।
বুধবার রাতে গোলাবাড়ি স্কুল রোডে একটি আবাসনে লিফ্ট নিয়ে দু’টি পরিবারের মধ্যে গোলমাল হয়। অভিযোগ, ওই সময়ে তিনতলার বাসিন্দা বেদপ্রকাশ তিওয়ারি তাঁর আত্মীয়স্বজন ও লোকজনকে নিয়ে চারতলার বাসিন্দা চিকিৎসক নগেন্দ্র রাই ও তাঁর ছেলে নীতেশকে মারধর করেন। এই ঘটনার পরে রাত দেড়টা নাগাদ ওই আবাসনে লাল বাতি লাগানো গাড়িতে এসে পৌঁছন বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার তথা তৃণমূল বিধায়ক সোনালি গুহ। অভিযোগ, তিনি আবাসনের তিনতলার বেদপ্রকাশের পক্ষ নিয়ে ওই চিকিৎসককে রীতিমতো হুমকি দেন। বলেন, “আই অ্যাম দ্য ম্যান অব সিএম। আই অ্যাম দ্য গভর্নমেন্ট।” অভিযোগ, তিনি চিকিৎসকের ফ্ল্যাটে লাগানো সিসিটিভি ক্যামেরা খুলে নেওয়ার হুমকি দেন ও চিকিৎসকের ফ্ল্যাটে তালা ঝুলিয়ে দেবেন বলেও শাসান। বেদপ্রকাশের দাবি, তিনি সোনালির ‘রাখি ভাই’। তাই ভাইয়ের কাছে দিদি এসেছিলেন।
রাতের ওই ঘটনা নিয়ে দু’পক্ষই গোলাবাড়ি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তবে চিকিৎসকের পরিবার সোনালি-সহ বেদপ্রকাশ ও তাঁর সঙ্গীদের বিরুদ্ধে হুমকি-মারধরের লিখিত অভিযোগ করেন। কিন্তু অভিযোগ, প্রায় দু’দিন কেটে গেলেও শুক্রবার রাত পর্যন্ত পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেওয়া দূর অস্ৎ, তদন্তই শুরু করেনি। এফআইআর-ও হয়নি।
ঘটনায় শাসক দলের বিধায়ক তথা বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার জড়িত বলেই কি এফআইআর করে তদন্ত শুরু হল না, প্রশ্ন উঠছে। এ প্রসঙ্গে হাওড়া সিটি পুলিশের এক পদস্থ কর্তা বলেন, “যেহেতু দু’পক্ষই অভিযোগ করেছে এবং অভিযোগগুলির মধ্যে এমন কিছু নেই যা আদালতগ্রাহ্য (কগনিজিব্ল) অপরাধ, তাই এ দিন আদালতের কাছে ঘটনাটির তদন্তের অনুমতি চেয়ে আবেদন করা হয়।”
শুক্রবার সোনালি গুহ-সহ তাঁর সঙ্গীদের গ্রেফতার ও ডেপুটি স্পিকারের ভূমিকা থেকে সোনালির পদত্যাগের দাবিতে বিজেপির পক্ষ থেকে গোলাবাড়ি থানার সামনে অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখানো হয়। বিকেল ৩টে নাগাদ শ’পাঁচেক বিজেপি কর্মী পিলখানা থেকে মিছিল করে থানার সামনে গিয়ে বসে পড়েন। বিক্ষোভে উপস্থিত ছিলেন বিজেপি-র রাজ্য সহ-সভাপতি সুভাষ সরকার, দলের প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি অসীম ঘোষ, জয়প্রকাশ মজুমদার-সহ জেলা নেতৃত্ব। পরে সুভাষবাবু বলেন, “রাজ্য জুড়ে চলা তৃণমূল সন্ত্রাসের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে বুধবার রাতে। মমতার মতো তাঁর প্রিয়পাত্রী সোনালি একই আচরণ করেছেন। আমাদের দাবি, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সোনালি ইস্তফা দিন এবং পুলিশ এই ঘটনার তদন্ত শুরু করুক।” বিক্ষোভের পরে বিজেপি-র একটি প্রতিনিধি দল আক্রান্ত চিকিৎসকের বাড়িতে গিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy