সিবিআইয়ের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় যুগ্ম অধিকর্তার নেতৃত্বে গঠিত এক বিশেষ তদন্তকারী দল (স্পেশ্যাল ইনভেস্টিগেশন টিম, সংক্ষেপে সিট) সারদা-কাণ্ডের তদন্ত করবে। সোমবার দিল্লিতে সিবিআই কর্তৃপক্ষ ওই দল গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সিট সারদা’র সঙ্গে আরও ৪৩টি অর্থলগ্নি সংস্থার বিরুদ্ধে তদন্ত চালাবে। খুব শিগগিরই, বস্তুত চলতি সপ্তাহেই তারা কাজে নামবে বলে জানা গিয়েছে।
সিবিআই-সূত্রের খবর: সারদা-তদন্তকারী বিশেষ দলটিতে রয়েছেন ৩০ জন অফিসার, যাঁদের অনেকে বিহার, ওড়িশা, উত্তর-পূর্ব ও পশ্চিমবঙ্গে কর্মরত। ব্যুরোর আর্থিক দুর্নীতি দমন শাখার অফিসারদের পাশাপাশি আর্থিক বিশেষজ্ঞ, বিভিন্ন ব্যাঙ্ক ও সরকারি আর্থিক সংস্থার প্রতিনিধিকে দলে রাখা হয়েছে। রয়েছেন এক সরকারি প্রতিনিধিও। এ দিন দিল্লি থেকে সিবিআইয়ের এক কর্তা জানিয়েছেন, তদন্তে নামার আগে সিবিআই নিজে এফআইআর দায়ের করবে। ক’টি এফআইআর দায়ের হবে একটি না দু’টি, তা স্থির হবে আইনজ্ঞদের পরামর্শের ভিত্তিতে। তদন্তের প্রস্তুতিপর্বে বিহার, ওড়িশা, ঝাড়খণ্ড, পশ্চিমবঙ্গ ও উত্তর-পূর্বের বিভিন্ন রাজ্যের পুলিশের থেকে প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করবে সিবিআইয়ের আঞ্চলিক দফতরগুলি। আমানতকারীদের অর্থ অন্যত্র বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সেবি ও রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ভূমিকা কী ছিল, খতিয়ে দেখা হবে তা-ও।
সুপ্রিম কোর্ট সারদা-কাণ্ডকে একটি ‘বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের’ অংশ হিসেবে অভিহিত করেছে। সিবিআই-সূত্রের বক্তব্য, সেই বৃহত্তর ষড়যন্ত্রটির শিকড় সন্ধানই হবে কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থাটির অন্যতম মুখ্য উদ্দেশ্য। ষড়যন্ত্রের নেপথ্যে কারা রয়েছে, তাদের চিহ্নিত করার চেষ্টা হবে। “সুপ্রিম কোর্টের প্রশ্ন, সারদা-সহ বিভিন্ন লগ্নিসংস্থায় আত্মসাৎ হওয়া বিপুল আমানত কোথায় গেল? ওই টাকায় কারা লাভবান হলেন, বিচারপতিরা তা-ও জানতে চেয়েছেন। সর্বোচ্চ আদালতের প্রশ্নগুলোর জবাব খোঁজার চেষ্টা করব আমরা।” এ দিন বলেন দিল্লির ওই সিবিআই-কর্তা। গত শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট সারদায় সিবিআই-তদন্তের নির্দেশ দেওয়ার পরে ওই দিনই দিল্লির সিবিআই সদরে উচ্চপদস্থ অফিসারদের নিয়ে বৈঠকে বসেছিলেন ব্যুরোর ডিরেক্টর রঞ্জিত সিংহ। কোন কোন বিভাগের কোন কোন অফিসার নিয়ে দল তৈরি হবে, সে ব্যাপারে আলোচনা হয়। এ দিন আনুষ্ঠানিক ভাবে সিট গঠনের ঘোষণা হয়, যার মাথায় রাখা হয়েছে সিবিআইয়ের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের যুগ্ম-অধিকর্তা রাজীব সিংহকে।
প্রসঙ্গত, পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা, ঝাড়খণ্ড, অসম ও ত্রিপুরা পাঁচ রাজ্যে ছড়িয়ে রয়েছে সারদা সংক্রান্ত বিভিন্ন মামলা। শুধু তা-ই নয়, সারদা-কেলেঙ্কারির আন্তর্জাতিক ব্যাপ্তিও রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা, অসম ও ত্রিপুরার সরকার, কেন্দ্রীয় ইডি ও সেবি’র তরফে সুপ্রিম কোর্টে জমা দেওয়া বিভিন্ন হলফনামার ভিত্তিতে সিবিআই ইতিমধ্যে প্রাথমিক কর্মপদ্ধতিও তৈরি করে ফেলেছে।
সিবিআইয়ের সদ্যগঠিত সারদা-সিট চলতি সপ্তাহেই কাজকর্ম শুরু করে দেবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy