দু’বছরের ব্যবধানে দুই জুলাইয়ের রবিবার। বিধানসভায় ছবিও দু’রকম! যাকে বলে এক যাত্রায় পৃথক ফল!
সে বার রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুর জন্মদিন পড়েছিল রবিবারে। বিধানসভার কর্মীরা ছুটির দিনে থাকবেন না বলে ২০১২ সালের সেই ৮ জুলাই লবিতে বামফ্রন্টের বিধায়কেরা বসুর জন্মদিন পালন করতে বাধা পেয়েছিলেন। শেষ পর্যন্ত আলিমুদ্দিন থেকে বসুর ছবি এনে বিধানসভার গেটে বেঁধে হাইকোর্টের দিকে রাস্তায় তাঁরা উদযাপন করেছিলেন জন্মদিন। আর ছুটির দিনের কারণ দেখিয়েই বিধানসভায় সরকারি ভাবে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর জন্মদিনের অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়েছিল দু’দিন আগে, ৬ জুলাই বিকালে! সরকার পক্ষের কাজে অসৌজন্যের অভিযোগ এনে ৬ তারিখের সেই অনুষ্ঠান বয়কট করেছিলেন বাম বিধায়কেরা। এ বার ৬ জুলাই রবিবার। সেই দিনই প্রথা মেনে বিধানসভার লবিতে সরকারি ভাবে পালিত হতে চলেছে নেহরু জমানার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এবং জনসঙ্ঘের প্রতিষ্ঠাতা শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের জন্মদিন! সকাল ১০টায় ওই অনুষ্ঠানের জন্য নোটিসও জারি হয়েছে।
দুই প্রয়াত রাজনীতিকের জন্মদিনে দু’রকমের সিদ্ধান্তে ‘দ্বিচারিতা’র অভিযোগ তুলছে বামেরা। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য রবীন দেবের বক্তব্য, “সে বার ছুটির দিন বলে বিধানসভায় জ্যোতিবাবুর জন্মদিন পালন করতেই দেওয়া হল না! প্রাক্তন স্পিকার হাসিম আব্দুল হালিম বিধানসভার বাইরে বেঞ্চে বসে বক্তৃতা করলেন। এ বার শুনছি রবিবারই জন্মদিন পালন হবে! তা হলে জ্যোতিবাবুর বেলায় বাধা দেওয়া হল কেন?” বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র এ নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি। তবে কলকাতার বাইরে থাকায় তিনি রবিবার বিধানসভার অনুষ্ঠানে থাকতে পারবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন।
বামেদের তরফেই কেউ কেউ বলছেন, পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে কেন্দ্রে এখন প্রবল প্রতাপশালী বিজেপি-র সরকার। বিধানসভায় জনসঙ্ঘের প্রতিষ্ঠাতার জন্মদিন পালনের সিদ্ধান্তে এই পরিস্থিতিরই প্রভাব পড়েছে। বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য রাজনৈতিক বিতর্কের মধ্যে ঢুকতে চাননি। শ্যামাপ্রসাদের জন্মদিন রবিবারেই হবে এবং তিনি নিজেও উপস্থিত থাকবেন বলে জানিয়েছেন। আর জ্যোতিবাবুর ক্ষেত্রে দু’বছর আগে যা হয়েছিল, তা স্পিকারের মতে ‘ক্লোজ্ড চ্যাপ্টার’।
বিধানসভার সিদ্ধান্তে বিজেপি অবশ্যই খুশি। বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহের কথায়, “কারও জন্মদিন নিজেদের সুবিধামতো পালন করা মোটেই শোভনীয় নয়। দেরিতে হলেও সরকার পক্ষের যে শুভবুদ্ধির উদয় হয়েছে, তার জন্য আমরা ধন্যবাদ জানাচ্ছি!” রাজ্য বিধানসভায় বিজেপি-র কোনও প্রতিনিধি নেই। বাইরে রেড রোডে শ্যামাপ্রসাদের মূর্তি চত্বরে সকালে এবং বিকালে শতবার্ষিকী হলে, আবার বিজেপি দফতরেও দিনভর একগুচ্ছ অনুষ্ঠান আছে সে দিন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy