Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

ভাগাভাগির রাজনীতি, সরব অধীর-মানস-সূর্য

তৃণমূল এবং বিজেপি-র দৌলতে মেরুকরণের রাজনীতি মাথাচাড়া দিয়েছে এ রাজ্যে। এই পরিস্থিতিতে নিজেদের রাজনৈতিক জমি ধরে রাখতে খাগড়াগড় বিস্ফোরণ-কাণ্ডকেই হাতিয়ার করছে দুই বিরোধী দল সিপিএম এবং কংগ্রেস। খাগড়াগড়-কাণ্ডে দোষীদের কড়া শাস্তির দাবিতে বুধবার বর্ধমান শহরে মিছিল করেছে কংগ্রেস।

মোবাইলে চলছে অধীর চৌধুরীর বক্তৃতা।

মোবাইলে চলছে অধীর চৌধুরীর বক্তৃতা।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৬ অক্টোবর ২০১৪ ০২:৫৯
Share: Save:

তৃণমূল এবং বিজেপি-র দৌলতে মেরুকরণের রাজনীতি মাথাচাড়া দিয়েছে এ রাজ্যে। এই পরিস্থিতিতে নিজেদের রাজনৈতিক জমি ধরে রাখতে খাগড়াগড় বিস্ফোরণ-কাণ্ডকেই হাতিয়ার করছে দুই বিরোধী দল সিপিএম এবং কংগ্রেস।

খাগড়াগড়-কাণ্ডে দোষীদের কড়া শাস্তির দাবিতে বুধবার বর্ধমান শহরে মিছিল করেছে কংগ্রেস। মিছিল শেষে সভা করে এই ঘটনার জন্য তৃণমূল, সিপিএমদু’দলকেই দায়ী করেছেন প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি মানস ভুঁইয়া। আবার এই পরিস্থিতিকে কাজে লাগিয়ে বিজেপি তাদের উদ্দেশ্যসিদ্ধি করতে চাইছে বলেও দাবি করেন তিনি। ধর্মনিরপেক্ষ মানুষের সেরা ভরসা কংগ্রেসই, এই বার্তাই দিতে চেয়েছেন মানসবাবু। আবার এ দিনই বীরভূমে বিরোধী দলনেতা, সিপিএমের সূর্যকান্ত মিশ্র খাগড়াগড়-কাণ্ডের তদন্ত নিয়ে তৃণমূল-বিজেপি ‘গড়াপেটা’র অভিযোগ তুলেছেন।

বিস্ফোরণের কয়েক দিনের মধ্যে বর্ধমান শহরে মিছিল করেছিল সিপিএম। পর দিন পাল্টা মিছিল করে তৃণমূল। তার পরে মিছিল হয়েছে বিজেপি-রও। জেলা যুব কংগ্রেস ময়দানে নামলেও দল হিসাবে কংগ্রেসের মিছিল হল একটু দেরিতেই। তবে এ দিন বর্ধমান স্টেশন থেকে বিজয়তোরণ পর্যন্ত মিছিলে মানসবাবু ছাড়াও কাটোয়ার নেতা রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়, কংগ্রেসের পরিষদীয় দলনেতা মহম্মদ সোহরাব-সহ ১১ জন বিধায়ক যোগ দিয়ে ঘটনার গুরুত্ব বোঝানোর চেষ্টা করেছেন। উপস্থিত থাকতে না-পারলেও বিধায়ক মনোজ চক্রবর্তীর মোবাইল থেকে মিছিল শেষের সভায় মাইক্রফোনে শোনানো হয় প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর বক্তব্য। তিনি বলেন, “খগড়াগড়ে জঙ্গিরা ঘাঁটি তৈরি করে বসেছিল। মঙ্গলকোট থেকে বেলডাঙা, কীর্ণাহার পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছিল, বিস্ফোরক তৈরি করে নাশকতার ছক কষছিল। অথচ সে কথা সরকার জানতে পারেনি, তা হতে পারে না। বাংলার মানুষকে বিজেপি ও তৃণমূল বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। বাংলার মানুষের মধ্যে সম্প্রীতি রক্ষা করতে হবে।”

খাগড়াগড়-কাণ্ডের প্রতিবাদে কংগ্রেসের মিছিল বর্ধমানের কার্জন গেট এলাকায়।

দলের অবস্থান স্পষ্ট করে দিয়ে মানসবাবু বলেন, “বর্ধমানে যা ঘটেছে, তা দেশের বিপদ। কোন পার্টি এগোল, কে পিছিয়ে পড়ল, এখন সেটা বিচারের সময় নয়! তৃণমূল দুর্নীতি থেকে দেশদ্রোহিতায় জড়িয়ে পড়ছে। সিপিএম এক সময়ে ওই জঙ্গিদের সীমান্ত পার করে এই বাংলায় থাকার সুযোগ করে দিয়েছে। আর বিজেপি রাজ্যের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে এই জঙ্গি কাজকর্মের জন্য চিহ্নিত করার চেষ্টা করছে। যা মোটেই ঠিক নয়।” তাঁর প্রশ্ন, “খাগড়াগড়-কাণ্ডের পরে দিদিমনি চুপ কেন?”

সিপিএমের কৃষক সভার জাঠায় যোগ দিয়ে এ দিনই সাইথিঁয়ায় দলের পলিটব্যুরো সদস্য সূর্যবাবুর মন্তব্য, “বিস্ফোরণের পরেই আমরা এনআইএ দাবি করেছিলাম। কিন্তু তা পাঠাতে সাত দিন সময় লাগল কেন? এর মধ্যে পুলিশ অফিসারেরা সকালে-রাতে সব বার করে নিয়ে গেল!” সেই সব অফিসারদের শাস্তির দাবি জানিয়ে বিরোধী দলনেতা আরও বলেন, “সিবিআই, এনআইএ কাউকে বিশ্বাস করি না! বোঝাপড়ার জন্য কেন্দ্র এ সব চাপ সৃষ্টি করছে। ব্রিগেডে মোদী এক বছর আগে দো লাড্ডু, দো ফায়দার কথা বলেছিলেন। এই দো লাড্ডু, দো ফায়দা হল, আমি হিন্দু-হিন্দু করব, তুমি মুসলিম-মুসলিম করবে! এ ভাবে তোমরা মুরগি লড়াই করে মরো আর আমরা ফায়দা লুঠব!” বোলপুরে এক পদযাত্রায় গিয়ে ফের তিনি বলেন, “খাগড়াগড়ের বাড়ির নীচে তৃণমূলের যে কার্যালয় ছিল, তা চুনকাম দিয়ে মুছে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছিল। মুখ্যমন্ত্রী, তৃণমূল এদের আশ্রয় দিচ্ছেন!”

বুধবার তোলা নিজস্ব চিত্র।

অন্য বিষয়গুলি:

tmc bjp polarization politics mutuality
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE