Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

বাহিনী তোলা নিয়ে অন্ধকারে কেন্দ্র, সরব তৃণমূল

পাহাড় ও জঙ্গলমহল থেকে আধাসেনা প্রত্যাহার করা নিয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়াল তৃণমূল। তৃণমূলের অভিযোগ, রাজ্যের সঙ্গে কোনও রকম আলোচনা না করেই একতরফা ভাবে বাহিনী সরানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। বিষয়টি নিয়ে বুধবার সংসদের উভয় কক্ষে সরব হন তৃণমূলের সাংসদরা। এ দিন লোকসভায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহের উপস্থিতিতেই বিষয়টি তোলেন তৃণমূলের লোকসভার দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০১৪ ০২:৫২
Share: Save:

পাহাড় ও জঙ্গলমহল থেকে আধাসেনা প্রত্যাহার করা নিয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়াল তৃণমূল।

তৃণমূলের অভিযোগ, রাজ্যের সঙ্গে কোনও রকম আলোচনা না করেই একতরফা ভাবে বাহিনী সরানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। বিষয়টি নিয়ে বুধবার সংসদের উভয় কক্ষে সরব হন তৃণমূলের সাংসদরা।

এ দিন লোকসভায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহের উপস্থিতিতেই বিষয়টি তোলেন তৃণমূলের লোকসভার দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁদের দাবি, ১৪ জুলাই একতরফা ভাবে রাজ্যকে নোটিস পাঠিয়ে চলতি মাসের ২৪ ও ৩১ তারিখ ১৩ কোম্পানি আধাসামরিক বাহিনী প্রত্যাহার করার কথা জানানো হয়েছে। কাল বেলপাহাড়ি থেকে ২ কোম্পানি ও জলপাইগুড়ি ও দার্জিলিং থেকে ৩ কোম্পানি আধাসামরিক বাহিনী প্রত্যাহার করার কথাও বলা হয়েছে নোটিসে। দ্বিতীয় দফায় বাকি এলাকাগুলি থেকে ৮ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী প্রত্যাহার করা হবে।

যদিও লোকসভায় রাজনাথ সিংহ এবং রাজ্যসভায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কিরেণ রিজিজু জানান, তাঁরা কেউই এ বিষয়ে কিছু জানেন না। খোঁজ নিয়ে দেখা হবে।

বিষয়টি নিয়ে এর আগেও লোকসবায় সোচ্চার হয়েছিল তৃণমূল। তখন রাজনাথ আশ্বাস দিয়েছিলেন, রাজ্যের সঙ্গে কথা না-বলে এ বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে না। কিন্তু রাজ্যের সঙ্গে কোনও রকম আলোচনা ছাড়ায় এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র।

সুদীপ বলেন, “এর আগেও আমরা জানিয়েছি যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা না-বলে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় না। যে এলাকাগুলি থেকে আধা-সেনা ফেরাতে চাইছে কেন্দ্র, সেখানে এখনও মাওবাদীরা রয়েছে। কিছু এলাকার সঙ্গে আন্তর্জাতিক সীমান্তও রয়েছে। এখন ওই সব এলাকায় শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বাহিনী তুলে নিলে তা বিঘ্নিত হবে।” রাজ্যসভাতেও ডেরেক ও’ব্রায়েন অবিলম্বে এই সিদ্ধান্ত ফিরিয়ে নেওয়ার দাবি জানান।

শুধু রাজনাথ বা রিজিজু নন, নবান্নের এক কর্তাও জানান, “কোনও কেন্দ্রীয় বাহিনী প্রত্যাহারের খবর তাঁদের কাছে নেই।” সরকারের এক মুখপাত্র জানান, কেন্দ্রীয় বাহিনী অস্থায়ী ভাবে মোতায়েন করা হয়। ফলে তিন মাস বা ছ’মাসের জন্য কেন্দ্র এই বাহিনী পাঠাচ্ছে বলে বিজ্ঞপ্তি জারি করে। সেই সময়সীমা শেষ হওয়ার মুখে প্রতি বারই কেন্দ্র বাহিনী প্রত্যাহার করতে চায়। বরাবর রাজ্য সেই সময়সীমা বাড়িয়ে দেওয়ার আর্জি জানান। কেন্দ্র সময়সীমা বাড়িয়ে দেয়। এ বারও তাই হয়েছিল।

তা হলে শাসক দলের সাংসদরা কেন এই দাবিতে সরব হলেন? এ নিয়ে কোনও মন্তব্যে নারাজ সরকারি কর্তারা। যদিও বিজেপির আসানসোলের সাংসদ মনে করছেন, এ সবই কেন্দ্রের উপর চাপ বাড়ানোর কৌশল। তৃণমূল এই সব দাবি এমন সময় করছে, যখন সিবিআইয়ের ডিরেক্টর সারদা কেলেঙ্কারিতে যুক্ত নেতাদের জেরা করার কথা বলেছেন। তবে এই চাপে কোনও কাজ হবে না।

এ দিকে দার্জিলিং থেকে কেন্দ্রীয় বাহিনী তোলার খবরে খুশি গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। মোর্চার সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরি বলেন, “আমরা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে গত মাসেই চিঠি পাঠিয়েছিলাম। তাতে কেন্দ্রীয় বাহিনী প্রত্যাহার থেকে শুরু করে মোর্চা নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলাগুলি তোলার কথা বলেছিলাম। তার জেরেই এই সিদ্ধান্ত বলে মনে হচ্ছে। খুবই ভাল সিদ্ধান্ত।” যদিও সরকারি ভাবে বাহিনী সরানোর নির্দেশ তাঁরা এখনও পাননি বলে এ দিন জানান দার্জিলিঙের পুলিশ সুপার অখিলেশ চতুর্বেদী।

অন্য বিষয়গুলি:

paramilitary force withdrawl centre tmc
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE