Advertisement
১৮ জানুয়ারি ২০২৫

জঙ্গি অর্থের খোঁজে ইডি হেফাজতে পাচারকারী

এক দিকে সারদা কেলেঙ্কারি আর অন্য দিকে খাগড়াগড় বিস্ফোরণ। বসিরহাটের এক তৃণমূল নেতার ভাই আব্দুল বারিক বিশ্বাসকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে এই দুই ঘটনায় তাঁর যোগ খতিয়ে দেখছেন এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-এর অফিসারেরা। তদন্তকারীরা মনে করছেন, এই দুই ঘটনায় গুরুত্বপূর্ণ যোগসূত্র হতে পারে বসিরহাটের পাচারকারী দলের অন্যতম মাথা হিসেবে পরিচিত এই আব্দুল বারিক বিশ্বাস।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০৩:২৬
Share: Save:

এক দিকে সারদা কেলেঙ্কারি আর অন্য দিকে খাগড়াগড় বিস্ফোরণ। বসিরহাটের এক তৃণমূল নেতার ভাই আব্দুল বারিক বিশ্বাসকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে এই দুই ঘটনায় তাঁর যোগ খতিয়ে দেখছেন এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-এর অফিসারেরা। তদন্তকারীরা মনে করছেন, এই দুই ঘটনায় গুরুত্বপূর্ণ যোগসূত্র হতে পারে বসিরহাটের পাচারকারী দলের অন্যতম মাথা হিসেবে পরিচিত এই আব্দুল বারিক বিশ্বাস।

আব্দুল বারিককে ২০১৪ সালের ৯ মার্চ বিপুল পরিমাণ সোনা-সহ দেগঙ্গা থেকে গ্রেফতার করেন কেন্দ্রীয় রাজস্ব গোয়েন্দা দফতরের অফিসারেরা। তাঁর বিরুদ্ধে বাংলাদেশে সোনা পাচারের অভিযোগ ওঠে। ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, ধরা পড়ার পরে তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ১২০ কোটি টাকার হিসাব পাওয়া গিয়েছিল। পরে দেখা যায়, ওই টাকার বেশির ভাগটাই তুলে নেওয়া হয়েছে।

আব্দুল কোথা থেকে এত টাকা পেলেন, আর কোথায়ই বা গেল সেই টাকা? আব্দুলকে হেফাজতে নিয়ে তারই উত্তর খুঁজছেন ইডি-র অফিসারেরা। ইডি সূত্রের খবর, শুক্রবার রাত পর্যন্ত এ ব্যাপারে কোনও সন্তোষজনক জবাব তদন্তকারীদের দিতে পারেননি আব্দুল।

ইডি সূত্রের খবর, বিপুল অঙ্কের টাকা লেনদেন হয়েছে। গোয়েন্দাদের মতে, তত দিনে বাজার থেকে যা টাকা তোলার তুলে নিয়েছেন সারদাকর্তা সুদীপ্ত সেনও। অভিযোগ উঠেছে, সেই টাকার একাংশ দেশের বাইরেও পাচার করা হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, তা হলে কি আব্দুল বারিকের মাধ্যমে সেই সময় বাংলাদেশে টাকা পাঠানো হয়েছে? ইডি সূত্রের খবর, তার কিছু প্রাথমিক প্রমাণও পেয়েছেন তাঁরা। পাচারকারীদের মাথা হিসেবে পরিচিত এই আব্দুল বারিক বিশ্বাসের বিরুদ্ধে সীমান্তে গরু-টাকা-সোনা পাচার করার অভিযোগ রয়েছে।

সারদার মতো খাগড়াগড় বিস্ফোরণে যুক্ত জেএমবি জঙ্গিদের সঙ্গে আব্দুল বারিকের যোগাযোগ নিয়েও খোঁজ চালাচ্ছেন তদন্তকারীরা। জানা গিয়েছে, জঙ্গিদের জন্য নিয়মিত বাংলাদেশ থেকে টাকা আসত। সেই টাকা পাঠানো হতো বর্ধমান, মুর্শিদাবাদ-সহ রাজ্যের বিভিন্ন জঙ্গি ডেরায়। গোয়েন্দারা জানাচ্ছেন, সব সময় যে সরাসরি বাংলাদেশ থেকেই টাকা আসত তা নয়। হাওয়ালা-র মাধ্যমে এ দেশের কোনও ব্যবসায়ীর কাছেও এই টাকা আসত। সেই টাকাও পাঠানো হতো জঙ্গিদের কাছে। সেই টাকার উৎস সন্ধানে ইডি-ও তদন্তে নেমেছে। এর মধ্যে তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সদস্য, জঙ্গি সংগঠন সিমি-র অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা আহমেদ হাসান ইমরানের বিরুদ্ধে বাংলাদেশে মৌলবাদী ও জঙ্গিদের কাছে টাকা পাচারের অভিযোগ উঠেছে। বারিক সেই চক্রে যুক্ত কি না, তা-ও খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।

শুক্রবার ইডি-র দফতরে ডেকে পাঠানো হয়েছিল রূপেন্দ্রনাথ সিংহ-কে। ইডি জানিয়েছে, আদতে বিহারের বাসিন্দা রূপেন্দ্র সারদাকাণ্ডে গ্রেফতার হওয়া প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মাতঙ্গ সিংহের জ্ঞাতিভাই। সূত্রের খবর, মাতঙ্গের মালিকানাধীন প্রায় ১৬টি সংস্থার ডিরেক্টর ছিলেন রূপেন্দ্র।

এ দিন সকাল থেকে কয়েক ঘণ্টা জেরা করা হয় তাঁকে। জেরা শেষে ইডি অফিসারেরা জানান, ডিরেক্টর থাকলেও সংস্থাগুলির টাকাপয়সা লেনদেন নিয়ে খুব একটা ওয়াকিবহাল নন রূপেন্দ্র। তাঁকে শিখণ্ডি খাড়া করে ব্যবসা চালাতেন মাতঙ্গ নিজেই।

অন্য বিষয়গুলি:

ED
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy