গত সপ্তাহে তাঁর ভবিষ্যদ্বাণী ছিল, ‘কয়েক দিনের মধ্যেই গ্রেফতার হবেন মদন মিত্র।’ ঘটনাচক্রে তা মিলে গিয়েছে অক্ষরে অক্ষরে। খুশিতে তাই ডগমগ প্রাক্তন তৃণমূল নেতা আসিফ খান। বারাসত আদালত চত্বরে দাঁড়িয়ে ঠোঁটে মুচকি হাসি নিয়ে মঙ্গলবার ফের এক দফা ভবিষ্যদ্বাণী করে গেলেন তিনি।
প্রশ্ন ছিল, এ বার কার পালা?
হাসিমুখে আসিফ বলেছেন, “মদনের পরে এ বার তো মুকুলদা, ইমরান আর ভাই।’’ কে ভাই? কার ভাই? এই প্রশ্নের জবাবে রহস্যময় হাসি ঠোঁটে ঝুলিয়ে রাখলেন আসিফ। কিছু ক্ষণ হেসে অর্থপূর্ণ ভাবে বললেন, “যা বলছি মিলছে তো? লাইন আছে, পরপর লাইন। মমতা এখন না, পরে হবে। পরে, পরে...।”
সারদা গোষ্ঠীর আর্থিক কেলেঙ্কারি নিয়ে এর আগে দলের শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে একাধিক বার মুখ খুলেছেন আসিফ। পুজোর সময় তাঁর বক্তব্য ছিল, সারাদা কাণ্ড প্রকাশ্যে আসার পরে ওই সংস্থার কর্ণধার সুদীপ্ত সেন যখন গা-ঢাকা দিয়ে বেড়াচ্ছেন, তখন রীতিমতো পরিকল্পনা করে তাঁর সংবাদমাধ্যমগুলি দখল করেছিলেন তৃণমূলের শীর্ষ নেতারা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করে আসিফের বক্তব্য ছিল, তিনি (মমতা) বাংলা নববর্ষের আগে সারদা কাণ্ডের কথা জানতেন না বলে যা বলেছেন, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। পরবর্তী কালে একটি প্রতারণার মামলায় রাজ্য পুলিশ আসিফকে গ্রেফতার করে। তখন তিনি বলেছিলেন, “ওঁরা সবাই ডাকাত। মমতা হচ্ছেন ডাকাতরানি।” আর গত সপ্তাহে আদালত-চত্বরে দাঁড়িয়ে তিনি বলেন, কয়েক দিনের মধ্যেই গ্রেফতার হবেন মদন মিত্র।
মুখ্যমন্ত্রী সম্পর্কে এ দিনও অবশ্য চোখা বাক্যবাণ শানিয়ে গিয়েছেন তাঁর দলেরই প্রাক্তন নেতা আসিফ। তিনি বলেন, “এত বছর সাংসদ থাকার পরে যিনি নিজের বাড়ির পাশে কালীঘাট বস্তির উন্নয়ন করতে পারেন না, তিনি কী করে রাজ্যের উন্নয়ন করবেন?” আসিফের এই বক্তব্যের ব্যাপারে কোনও তৃণমূল নেতাই মুখ খুলতে রাজি হননি। এসএমএস করেও জবাব মেলেনি।
বারাসত আদালতের এক আইনজীবীর মৃত্যুতে এ দিন অবশ্য আসিফ মামলার শুনানি হয়নি। ২৩ ডিসেম্বর মামলাটি তোলা হবে বলে জানান মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট মধুমিতা রায়। তবে আজ, বুধবার ওই আদালতেই আসিফের বিরুদ্ধে অন্য একটি মামলার শুনানি রয়েছে। এ দিন বারাসত আদালতের লক-আপে অন্য কয়েদিরা আসিফকে হেনস্থা করে বলে অভিযোগ তুলেছেন তাঁর আইনজীবী লোকেশ শর্মা। তিনি বলেন, “আমার মক্কেলকে নানা প্ররোচনায় আটকে রাখার চক্রান্ত চলছে।” আদালতে গোলমালের অভিযোগ অস্বীকার করেছে উত্তর ২৪ পরগনা পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy