নবদম্পতিদের মধুচন্দ্রিমায় যাওয়ার জন্য অসংখ্য সুন্দর জায়গা রয়েছে এ দেশেই।
খ্যাতনামীদের মলদ্বীপ বা মরিসাস যেতে দেখে অনেকের মন খারাপ হয়ে যায়। তাঁরা হয়তো স্বপ্নের মতো মধুচন্দ্রিমা কাটাতে চান। কিন্তু পকেটের তেমন জোর নেই। তবে মন খারাপ করার কোনও কারণ নেই। সদ্য বিবাহিত দম্পতিদের মধুচন্দ্রিমায় যাওয়ার জন্য অসংখ্য সুন্দর জায়গা রয়েছে এ দেশেই।
এক জন নতুন মানুষের সঙ্গে নতুন জীবনের শুরুটা বেশ অন্য রকম অনুভূতি। আর তারই প্রস্তুতি পর্ব হল মধুচন্দ্রিমা। কিন্তু একে অপরকে চেনার, জানার ও নিজেদের মুহূর্তগুলিকে স্মরণীয় করে তোলার জন্য কোথায় যাবেন তা ঠিক করাই হয়ে ওঠে বেশ কঠিন কাজ। জেনে নিন ভারতে পাঁচটি মধুচন্দ্রিমার জন্য সেরা ঠিকানা।
১. জয়সলমের, রাজস্থান
পাহাড় বা সমুদ্র ছেড়ে মধুচন্দ্রিমায় ঘুরে আসতে পারেন বালির দেশ থেকে। মরুভূমির এই শহরটি সংস্কৃতি এবং শিল্পকলায় পরিপূর্ণ। সূর্যাস্তের সময় উটের পিঠে চড়ে মরুভূমি ভ্রমণের আনন্দ, সে এক অনবদ্য স্মৃতি হয়ে থকবে আপনাদের জন্য। সেই সঙ্গে নব দম্পতির জন্য রয়েছে রাজকীয় ঘরানার অনুভূতি উপভোগের অনন্য সুযোগ। সন্ধেয় মরুশহরে তাঁবুর বাইরে গান-বাজনা, স্থানীয়দের অনুষ্ঠান নবদম্পতির মন ছুঁয়ে যাবে। এখানেই শেষ নয়, চাইলে শীতের মরসুমে বর্নফায়ারের আনন্দও নিতে পারেন। আপনি যদি ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারির মধ্যে মধুচন্দ্রিমার পরিকল্পনা করে থাকেন, তা হলে চোখ বুজে বেছে নিতে পারেন মরুশহর জয়সলমের।
২. উটি, তামিলনাড়ু
‘উদাগামণ্ডলম’ আদি নাম হলেও লোকের মুখে পরিচিত ‘উটি’ হিসেবেই। নীলগিরি পর্বতমালার কোলে তামিলনাড়ুর নীলগিরি জেলার ছোট্ট শহর উটি। দেশে থেকেও বিদেশ ভ্রমণের অভিজ্ঞতা নিতে চাইলে মধুচন্দ্রিমায় অবশ্যই যেতে পারেন উটি। বিষয়টা অনেকটা দুধের স্বাদ ঘোলে মেটানোর মতো হলেও উটি কিন্তু তেমন অভিজ্ঞতাই দেবে আপনাদের। একসঙ্গে হাতে হাত রেখে রাস্তায় হেঁটে যাওয়ার অনুভূতি মধুচন্দ্রিমার স্বাদই একেবারে নিয়ে যাবে এক অন্য মাত্রায়। ভ্রমণপ্রেমীদের কাছে জাদুকরী উপত্যকা নামে পরিচিত হয়েছে উটি। উটি সফরের এক অসাধারণ অংশ হিসেবে আপনি যেতে পারেন উটি হ্রদে। এই হ্রদটি বোটিংয়ের জন্যে বেশ বিখ্যাত। এ ছাড়াও বনভোজনের আদর্শ জায়গা হিসাবে এমারেল্ড হ্রদ আপনাদের জন্য আদর্শ। উটিতে গিয়ে ২৬২৩ মিটার উঁচু দোদাবেতা পাহাড়শীর্ষে ভালোবাসা উদ্যাপন করুন সঙ্গীর সঙ্গে।
৩. আন্দামান ও নিকোবর দীপপুঞ্জ
জলের নীচে রঙের বাহার নিয়ে বিরাজ করা আন্দামান-নিকোবর দীপপুঞ্জ ভারতের সেরা মধুচন্দ্রিমার স্থানগুলির মধ্যে অন্যতম। এখানে মধুচন্দ্রিমা করতে গেলে পরতে পরতে রোমাঞ্চকর অভিঞ্জতার অধিকারী হবেন আপনি। একান্তে সময় কাটানোর জন্য আন্দামান-দীপপুঞ্জ হতে পারে আপনার সেরা ঠিকানা। আন্দামান-নিকোবরের রয়েছে রোম্যান্সের ছোঁয়া এবং প্রশান্তির বিস্তার। যা আপনার মধুচন্দ্রিমাকে আরও স্মৃতিমধুর করে তুলবে।
৪. লেহ লাদাখ, জম্মু ও কাশ্মীর
হিমালয় ও কারাকোরাম পর্বতমালার মধ্যে অবস্থিত লেহ-লাদাখ যেন সাক্ষাৎ স্বর্গ। শীতল মরুভূমি, মেঘবিহীন নীল আকাশ, তুঁতে নীল রং জলের হ্রদ সবই পাবেন। এখানে আপনি দেখতে পাবেন প্যাংগং থেকে ভোরের সূর্যোদয়। আপনি যদি আপনার মধুচন্দ্রিমায় রোমাঞ্চের স্বাদ পেতে চান তা হলে প্যাংগং হ্রদের পাশে তাঁবু খাটিয়ে রাত্রিযাপনের ব্যবস্থা করেন তা হলে নিঃসন্দেহে সেটি আপনার নতুন বিবাহিত জীবনের সবচেয়ে স্মরণীয় অভিজ্ঞতা হতে পারে। যদি আপনি বাইকে চড়তে ভালোবাসেন তা হলে লাদাখে গিয়ে বাইক ভাড়া করে নিতে পারেন। রোমাঞ্চ ও রোম্যান্সে ভরপুর অভিজ্ঞতার সাক্ষী থাকতে পারবেন এখানে।
৫. লক্ষদ্বীপ
জনপ্রিয় মধুচন্দ্রিমার স্থানগুলি মধ্যে একটি অন্যতম স্থান হল লক্ষদ্বীপ। লক্ষদ্বীপের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ নীল সমুদ্র আর সমুদ্র তট। সোনালি রোদের ছটায় সমুদ্র সৈকতের ধারে নিজেদের সময় কাটানো হোক কিংবা কাঁচের মতো নীল রঙের জলের মধ্যে একসঙ্গে সাঁতার কাটা— লক্ষদ্বীপে গেলে এই সব অভিজ্ঞতাই আপনারা প্রাণ ভরে উপভোগ করতে পারবেন। এ ছাড়াও এখানে রয়েছে ৩৬টি প্রবাল প্রাচীরযুক্ত দ্বীপপুঞ্জ যা দেখে মুগ্ধ হয়ে যাবেন যে কোনও মানুষ। স্কুবা ডাইভিং থেকে সার্ফিং, আবার কায়াক রাইডের অভিজ্ঞতা অর্জন করা আপনার হানিমুনকে আলাদা স্তরে নিয়ে যাবে। তবে এ সবের ভিড় থেকে নিজেদের সরিয়ে নিভৃতে সময় কাটাতে চাইলে মিনিকয় আপনার জন্য আদর্শ জায়গা। এশিয়ান ডলফিন, ফ্রগফিশ, অক্টোপাস দেখতে হলে সেরা জায়গা হল বাঙ্গারাম দ্বীপ। লক্ষদ্বীপে মধুচন্দ্রিমার পরিকল্পনা করে থাকলে এই জায়গাগুলোয় অবশ্যই ঘুরে আসুন সঙ্গীকে নিয়ে। তবে এখানে যেতে গেলে প্রথমে কেরলের কোচি থেকে বিশেষ প্রবেশপত্র নিতে হবে পর্যটকদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy