মাস কয়েক আগেই হোায়াইট হাউসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে আপ্যায়ন করার জন্য বাজরার তৈরি এই পদ প্রস্তুত করেছিলেন রাঁধুনীরা। —ফাইল চিত্র।
পদের নাম ‘মিলেট তাবোলেহ্’। খাবার ডেলিভারি অ্যাপে তার অর্ডার দিতে দেখা গেল দাম ৩২৩ টাকা ৮১ পয়সা। মিলেট অর্থাৎ বাজরা। সেই বাজরা দিয়েই তৈরি স্যালাড জাতীয় পদ এই ‘তাবোলেহ্’। থাকার মধ্যে রয়েছে, কিছু লেটুস পাতা, ফল, মূল, জল ঝরানো দই, চিজ আর বাজরা। তারই ওই দাম! প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে এই বাজরারই পদ খাইয়েছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো-বাইডেন-সহ সমস্ত দেশের রাষ্ট্রনেতাদের। যা দেশ গাঁয়ের সাধারণ খাবার হলেও শহরের রেস্তরাঁয় সাধারণ মানুষের পকেট কামড়ােনো ‘বিষম বস্তু’।
মাস কয়েক আগেই হোয়াইট হাউসে আমন্ত্রণ পেয়ে আমেরিকায় গিয়েছিলেন মোদী। সেখানেও তাঁকে বাজরার নানা পদে আপ্যায়ন করেছিলেন বাইডেন। শনিবার জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনের নৈশভোজেও ভারতে আসা বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রনায়ককেও আপ্যায়ন করা হল বাজরা দিয়ে তৈরি পদেই। ভারতে অপ্রতুল এই বাজরা দিয়ে তৈরি মোটা রুটি খেয়েই ক্ষেতে লাঙল ঠেলতে নামেন পঞ্জাবের কৃষকেরা। সেই বাজরা এখন রাজ বাড়ির টেবলেও। বিরিয়ানি-পোলাও-কালিয়া ছেড়ে নিরামিষ বাজরা খেয়েছেন বাইডেন থেকে শুরু করে কানাডার প্রেসিডেন্ট জাস্টিন ট্রুডো এমনকি, আমিষাশী বলে পরিচিত দেশের প্রধানেরাও।
কেন্দ্র জানিয়েছে, এ বছর বাজরা বর্ষ পালন করছে দেশ। সেই সূ্ত্রেই ভারতের প্রাচীন দানাশস্য বাজরার তৈরি খাবার বিশ্বের আঙিনায় তুলে ধরার সিদ্ধান্ত। বাজরাও যে রান্নার গুণে পোলাও-কালিয়ার সমগোত্রীয় স্তরে পৌঁছতে পারে, সেই ধারণাকেই প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছে কেন্দ্রের মোদী সরকার। আর সম্ভবত সেই চেষ্টায় সফলও হয়েছে। কারণ জি-২০ সম্মেলনের নৈশভোজের মেনু কার্ড প্রকাশ্য়ে আসতেই ইন্টারনেটে ভাইরাল হতে শুরু করেছে বাজরার তৈরি নানা পদের রেসিপি। ফুড ডেলিভারি অ্যাপে খোঁজ বেড়েছে বাজরার পদের।
জি-২০ দেশগুলির রাষ্ট্রনায়কদের জন্য রাষ্ট্রপতি ভবনের নৈশভোজের রেসিপিতে ছিল বাজরার তৈরি স্টার্টার থেকে শুরু করে কুড়মুড়ে ভাজা বাজরা ছড়ানো কেরলের লাল ভাত। এমনকি, ছোট এলাচের সুগন্ধী দেওয়া বাজরার পুডিংও। ইন্টারনেটে অবশ্য আরও রকমারি বাজরার রেসিপি উঠে এসেছে।
কেউ রেঁধেছেন বাজরার টিক্কি চাট। কেউ আবার বাজরা দিয়ে বানিয়েছেন পোলাও। বাজরা আর কুমড়ো দিয়ে স্যুপ, বাজরার পিৎজা এমনকি বাজরা দিয়ে তৈরি পানীয়ও নজর কেড়েছে নেটাগরিকদের। শেষ পাতে আবার রয়েছে লাড্ডু-হালুয়াও।
সোজা কথায় স্টার্টার থেকে শুরু করে মেন কোর্স হয়ে ডেজার্ট বা মিষ্টি মুখ পর্যন্ত সবই বাজরা দিয়ে রাঁধতে পারেন এই সব রেসিপি দেখে। বাড়িতে আসা অতিথিদের চমকে দিতে পারেন, নতুন পদ খাইয়ে।
বর্ষাকালে অনেকেই ইলিশ উৎসব পালন করেন ইলিশের নানা পদ এক সঙ্গে রেঁধে। তা দিয়ে মধ্যাহ্ণভোজ সেরে। ইলিশের তেল, ভাজা, ভাপা, সরষে কালো জিরের ঝোল, পাতুরি, ইলিশের টক— কত পদই থাকে তাতে! তেমনই বাজরা উৎসব হতেই বা আপত্তি কোথায়?
রাষ্ট্রপতি ভবনের নৈশভোজের মেনুকার্ডে লেখা ছিল, ভারত এই জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে শরতের আবাহন করছে। শারদীয়ার উদযাপন করছে। বাজরা সেই শরতেরই ফসল।
সামনে দুর্গোৎসব। পুজো মানেই খাওয়া দাওয়াও। তবে কি মোদী-বাইডেন-ট্রুডোদের থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে এই পুজোয় বাজরার পদেই শারদোৎসব পালন করবেন? ইন্টারনেটে ক্রমশ ভিউ বাড়তে থাকা বাজরার রেসিপি দেখে অন্তত তা-ই মনে হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy