বেড়াতে যাওয়ার সময় নগদ কী ভাবে সুরক্ষিত রাখবেন? ছবি: সংগৃহীত।
বেড়াতে যেতে গেলে হাতে নগদ থাকা আবশ্যক। কিন্তু লম্বা ট্রেনযাত্রা, বাসযাত্রার মাধ্যমে গন্তব্যে পৌঁছনোর সময় সেই টাকা চোট যাওয়ার ঝুঁকিও থাকে। দেশ হোক বা বিদেশ, চুরি, ছিনতাইয়ের ভয় আছেই। তাই টাকা ও মূল্যবান জিনিস নিজেকেই সুরক্ষিত রাখতে হবে। বিশেষত কেউ যদি একলা ভ্রমণ করেন, তাঁর দায়িত্বও বহু গুণ বেড়ে যায়। কী ভাবে নগদ ও মূল্যবান জিনিস নিয়ে নিরাপদে ভ্রমণ করতে পারেন রইল তারই কিছু পরামর্শ।
১. ভ্রমণের জন্য যতটা নগদ হাতে রাখা প্রয়োজন, ততটাই রাখুন। বাইরে গিয়ে টাকার প্রয়োজন হলে ডেবিড কার্ড, ডিজিটাল পেমেন্ট পদ্ধতির সাহায্য নিতে পারেন। তবে অনেক জায়গাতেই ইন্টারনেট কাজ করে না। প্রত্যান্ত পাহাড়ি এলাকায় হাতের কাছে এটিএম-ও থাকে না। এই সমস্ত জায়গায় যেতে হলে নগদ থাকা দরকার। সে ক্ষেত্রে লম্বা ট্রেন বা বাস যাত্রার সময় সঙ্গে থোক টাকা না রেখে, গন্তব্যে যে বড় স্টেশন বা শহর থাকবে, সেখানকার এটিএম থেকে টাকা তুলে নিতে পারেন।
২. নগদ সুরক্ষিত রাখতে প্যান্টের বা পোশাকের ভিতরে চোরা পকেট ব্যবহার করতে পারেন। প্রয়োজনে দর্জিকে দিয়ে আগে থেকে সালোয়ার-কামিজের কোনও অংশে গুপ্ত পকেট তৈরি করিয়ে নিতে পারেন। ছেলেদের প্যান্টের ভিতর দিকেও এমনটা করিয়ে নেওয়া যায়। বড় অঙ্কের নোট রাখলে, অল্প জায়গায় বেশি টাকা ধরে যাবে। তবে সমস্ত টাকা এক জায়গায় না নিয়ে, একাধিক ব্যাগ থাকলে ভাগ করে নিতে পারেন। চশমার বাক্স, খাবারের কৌটোয় টাকা ভরে নিতে পারেন, যাতে চট করে কেউ বুঝতে না পারে।
৩. পুরুষদের প্যান্টের পিছনের পকেটে পার্স না রাখাই ভাল। ট্রেন, বাস বা রাস্তাঘাটের ভিড়ভাট্টায় যে কেউ অতি সহজে পার্স চুরি করতে পারে। আবার অনেক সময় পিছন পকেটে পার্স রেখে ট্রেনে বা বাসে রাতে ঘুমোতে গেলে অসাবধানতায় তা হারিয়েও যেতে পারে।
৪. একলা ভ্রমণার্থী হলে নগদ পোশাকের মধ্যে চোরা পকেটে রাখতে পারেন। সঙ্গে একটি ছোট ব্যাগ রাখতে পারেন যা কোনও অবস্থাতেই কাছছাড়া করবেন না। ফিতে দেওয়া কোনও ব্যাগ বুকের কাছে বা কোমরের কাছে থাকবে, এমন কিছু বেছে নিলে সুবিধা। তাতেই জরুরি সমস্ত নথি, মোবাইল রাখুন। এমনকি শৌচালয়ে গেলেও তা হাতছাড়া করা যাবে না।
৫. চোরকে ধোঁকা দিতে বিশেষ ধরনের ব্যাগ পাওয়া যায়। যে ব্যাগটিতে সমস্ত চেনই এমন ভাবে থাকে যে চট করে খুঁজে পাওয়া মুশকিল। ছোটখাটো খাপ-খোপ সমস্তই ব্যাগের ভিতরে থাকে। এমন ধরনের ব্যাগ কিনতে টাকা খরচ করলে, নগদ সুরক্ষিত থাকার সম্ভাবনা বেশি। বিভিন্ন সংস্থা এই ধরনের ব্যাকপ্যাক তৈরি করে চুরি রুখতে।
৬. যে গন্তব্যে যাচ্ছেন, সেই জায়গাটি সম্পর্কে আগাম খোঁজখবর থাকা আবশ্যক। দেখা গেল, যখন সেখানে পৌঁছলেন তখন সন্ধে বা রাত। জায়গাটি কতটা নিরাপদ খোঁজ নিয়ে সেই মতো ব্যবস্থা করা দরকার। যদি সেই জায়গায় চুরিচামারির ভয় থাকে তা হলে সতর্কতার সঙ্গে পরিবহণের গাড়ি নির্বাচন করতে হবে। অবশ্যই চা খেয়ে বা কোনও কিছু কেনার সময় টাকা দেওয়ার জন্য পকেট থেকে থোক টাকা বার করবেন না। অনেকেই যে নজর রাখতে পারে, এ বিষয়ে সতর্ক হওয়া দরকার।
৭. হোটেল বা থাকার জায়গা নির্বাচনের বিষয়ে সতর্কতা প্রয়োজন। বিশেষত সঙ্গে যদি ল্যাপটপ, দামি ক্যামেরা ও আনুষঙ্গিক জিনিস থাকে। ভ্রমণে সুরক্ষা কিন্তু বড় ব্যাপার। তাই হোটেলের বিষয়ে সতর্কতা প্রয়োজন। হোটেলের ঘরেও দামি জিনিসপত্র যেমন ক্যামেরা, ল্যাপটপ ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রাখা অনুচিত। আন্তজার্তিক ভ্রমণে পাসপোর্ট খুব গুরুত্বপূর্ণ, পাসপোর্ট বেহাত হলে দেশে ফিরতে গিয়ে ঝক্কির শেষ থাকবে না। তাই পাসপোর্ট হোক বা ল্যাপটপ, হোটেলের ঘরে রাখলে তা অত্যন্ত নিরাপদে রাখতে হবে।
৮. দামি অলঙ্কার পরে বেড়াতে না যাওয়াই ভাল। চোখে পড়ার মতো, হার-কানের দুল বা আংটি থাকলে কারও নজর যে খারাপ উদ্দেশ্যে সে দিকে পড়বে না, তা বলা যায় না। তাই নিজের স্বার্থেই বেড়ানোর সময় সোনা, হিরের বহুমূল্য অলঙ্কার না পরাই ভাল।
৯. নগদের ব্যবহার কমাতে পারলে বেশি টাকা নিয়ে যাওয়ার ঝুঁকি কমে যায়। সে ক্ষেত্রে হোটেল থেকে বিভিন্ন জায়গা পরিদর্শনের টিকিট অনলাইনে কাটা যায় কি না, দেখে নিন। ডিজিটাল পদ্ধতিতে লেনদেন হলে, অনেকটাই সুবিধা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy