কালিম্পঙের স্বল্পচেনা ঠিকানা, চিসাং। ছবি: সংগৃহীত।
মানুষের কোলাহল নেই, পাখির কলকতান আছে। আর আছে পাহাড়, নদী, সবুজের সমারোহ।
দৃষ্টি যত দূর যায়, শুধু চোখে পড়ে প্রকৃতির ভুবন ভোলানো রূপ। এমন রূপে হারিয়ে যেতে চাইলে পাড়ি দিতে হবে চিসাংয়ে। ভারত-ভুটান সীমান্তের নির্জন এক পাহাড়ি গ্রাম চিসাং। কালিম্পঙের অজানা এই জায়গার নাম অনেকেই শোনেননি। তবে এক বার যাঁরা গিয়েছেন, তাঁরা প্রেমে পড়েছেন চিসাংয়ের।
না, এখানে কেনাকাটার জন্য বাহারি বাজার নেই। ঝাঁ-চকচকে হোটেলও নেই। তবে আছে নির্ভেজাল প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। একেবারে শান্ত, নিরিবিলি স্থান যাঁদের পছন্দ, তাঁদের জন্যেই এই জায়গা।
গ্রামে রয়েছে হাতেগোনা বাড়ি। আর সেই বাড়িগুলিই সেজে উঠেছে রকমারি ফুলে। কোথাও যত্নে ফোটানো ফুল, কোথাও অযত্নে বেড়ে ওঠা। গ্রাম্য রাস্তার ধারে, পাহাড়ি উপত্যকায় এলাচের ক্ষেত। কোথাও আবার পাহাড়ের ধাপে ধাপে চাষের জমি। আর আছে পাখিদের গান। এ ব্যাপারে অকৃপণ তারা। ভোর থেকে সন্ধে, ডেকেই চলে অবিরাম।
এই গ্রাম তাঁদের জন্য, যাঁরা কোলাহল নয়, প্রকৃতির সান্নিধ্যে নিজেকে খুঁজে পেতে চান। এই গ্রাম তাঁদের জন্য, যাঁরা কোথাও চুপচাপ বসে মেঘের খেলা দেখতে চান।
মেঘলা দিনে চিসাং এক রকম। তবে যদি মেঘ-কুয়াশার চাদর সরে যায়, সূয্যিমামার ঘুম ভাঙা দেখা যায়, সে রূপ আর এক রকম। রোদ ঝলমলে দিনে চিসাং থেকেই দেখা যায় ভুটানের পাহাড়, নাথুলার একাংশ।
এখান থেকেই ঘুরে নিতে পারেন দাওয়াইপানি, তোদে বাজার, সীমানাখোলা। ঘুরে নেওয়া যায় ঝালং, বিন্দু, পারেনও। তবে দু’রাত যদি কেউ চিসাংয়ে থাকেন, একটা দিন গ্রামটাই হেঁটে ঘুরে দেখতে পারেন। ঘণ্টা তিনেক সময় হাতে নিয়ে গাড়ি ভাড়া করে ঘুরে আসতে পারেন দাওয়াইপানি, তোদে বাজার।
তোদে বাজারে রয়েছে বেশ পুরনো একটি গির্জা। বয়স ১০০ বছরের উপর। আর যেতে পারেন দাওয়াইপানি। পাহাড়ের মাঝখান দিয়ে বুকে গিয়েছে দাওয়াই খোলা। 'খোলা' শব্দের অর্থ 'নদী'। শোনা যায়, এই নদীর জলে অনেক রোগ সারে। তাই লোকে বলে 'দাওয়াইপানি'। দাওয়াই মানে ওষুধ। অনেকে বলেন, নদীর জলে সালফার মিশে রয়েছে। সে কারণেই ওই জলে ছোটখাটো চর্মরোগ সেরে যায়।
দাওয়াইপানি, তোদে বাজার ঘুরে পৌঁছে যেতে পারেন সীমানাখোলায়। এক পাশে ভারত, অন্য পাশে ভুটান। মাঝে বইছে সীমানা নদী। চারদিকে শুধু প্রকৃতির শব্দ। জম কল থাকলে, পাথুরে খরস্রোতা নদী পেরিয়ে দিব্যি ভুটানের মাটিতেও পা রাখা যায়। চাইলে খাবার নিয়ে এসে এখানে খেতেও পারেন। নদীর কোলে চড়ুইভাতির দিন ফিরে আসবে।
পাহাড়ি পথে কোথাও জলধারা, কোথাও মেঘ-রোদ্দুরের খেলা মন কাড়তে বাধ্য।
কী ভাবে যাবেন?
নিউ মাল জংশন স্টেশন থেকে চিসাং যাওয়া সুবিধাজনক। এখান থেকে গাড়ি ভাড়া করে যেতে হবে চিসাং। সময় লাগবে ৩ ঘণ্টার মতো। এনজেপি স্টেশন থেকে চিসাং যেতে অনেকটা সময় লাগে। এনজেপি থেকে গাড়ি নিয়ে চালসা, খুনিয়া মোড় থেকে ঝালং, বিন্দু যাওয়ার রাস্তা ধরে পৌঁছতে হবে চিসাং। পথে পড়বে চাপড়ামারির জঙ্গল, জালঢাকা নদী।
থাকার জায়গা
চিসাংয়ে থাকার জন্য বেশ কয়েকটি হোম স্টে রয়েছে। হোম স্টে গুলিতেই খাবারের ব্যবস্থা থাকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy