দুর্গাপুজো ছাড়া, কলকাতার কাছেই এমন স্বাদে-ঘ্রাণে ভরপুর ভোগ কোথায় পাওয়া যাবে? ছবি- সংগৃহীত
কলকাতায় ঠান্ডাটা এ বছর বেশ জাঁকিয়েই পড়েছে। স্বাস্থ্য সচেতন হয়েও শীতকালে কেন যে নানা রকম খাবার খেতে ইচ্ছা করে, কে জানে!বাজারে নানা রকম সব্জি দেখে হঠাৎ সে দিন খিচুড়ি খেতে ইচ্ছা করল। আলু, ফুলকপি, কড়াইশুঁটি দিয়ে গোবিন্দভোগ চালের খিচুড়ি বানিয়েও ফেলেছেন। কিন্তু কোথায়? পুজোর ভোগের মতো স্বাদ বা গন্ধ কিছুই তো হয়নি। নিদেনপক্ষে পাড়ার মন্দিরে সপ্তাহে এক দিন যে ভোগ হয়, তেমন হলেও চলত। তা-ও হয়নি। রান্না করে, খেয়ে বা খাইয়ে মন ভরল না। মনে মনে ঠিক করলেন, একাই বেরিয়ে পড়বেন এবং ঝোলা কাঁধে একটা গোটা দিন শুধু ভোগের সন্ধানে ঘুরে বেড়াবেন। কিন্তু দুর্গাপুজো ছাড়া, কলকাতার কাছেই এমন স্বাদে-ঘ্রাণে ভরপুর ভোগ কোথায় পাওয়া যাবে? যেখানে গেলে একটু বেড়ানো হবে আবার ভক্তিভরে ভোগও খাওয়া যাবে?
কলকাতার থেকে বেশি দূর নয়, যেখানে প্রতি দিন হাজার মানুষ ভোগ খান, এমন সাতটি জায়গার হদিস রইল এখানে।
১) দক্ষিণেশ্বর মন্দির
ট্রেনে হাওড়া থেকে দক্ষিণেশ্বর যেতে গেলে নামতে হবে বালিঘাট স্টেশনে। সময় লাগবে ৩০ মিনিট মতো। আর সড়কপথে পৌঁছতে গেলে এসপ্ল্যানেড থেকে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন রকম বাস রয়েছে। বাস বা গাড়িতে গেলে সময় বেশি লাগা স্বাভাবিক। দক্ষিণেশ্বরে ভোগ খেতে গেলে সকাল সকাল পৌঁছে যেতে হবে। সকাল ৯টা থেকে ১০টার মধ্যে গিয়ে কুপন কেটে নিতে হবে। মূল্য ১০০ টাকা। তবে কুপন ছাড়া কোনও জায়গাতেই ভোগ পাবেন না। মন্দির খোলা থাকে সকাল সাড়ে ৬টা থেকে সাড়ে ১২টা এবং বিকেলে ৩টে থেকে রাত সাড়ে ৮টা। তবে এই সময়সূচি শুধু শীতকালের জন্য। দুপুর ১২টা থেকে ভোগ খাওয়া শুরু হয়।
২) আদ্যাপীঠ
দক্ষিণেশ্বর থেকে হেঁটে বা টোটো করে চলে যেতে পারেন আদ্যাপীঠ। সকাল সকাল ৬০ টাকা দিয়ে কুপন কেটে আশপাশের শান্ত পরিবেশে একটু ঘোরাঘুরি করতে পারেন। অথবা গঙ্গার ঘাটে বসে থাকতে থাকতেই দেখবেন, খাওয়ার সময় হয়ে গিয়েছে। এখানে খাওয়া শুরু হয় দুপুর ১২টা থেকে।
৩) বেলুড় মঠ
চলে আসতে পারেন বেলুড়ের রামকৃষ্ণ মিশন মঠ ও মন্দিরেও। এখানে আপনার যতটুকু সামর্থ্য বা যতটুকু ইচ্ছা, তার বিনিময়ে ভোগ খাওয়ার কুপন কেটে নিতে পারেন। এখানকার বিশাল ঘরে একসঙ্গে প্রায় দু’হাজার জন খেতে বসতে পারেন। দিনে দু’বার খিচুড়ি, সব্জি, চাটনি, পায়েসের ভোগ খেতে বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ আসেন এখানে।
৪) কামারপুকুর
কলকাতা থেকে সড়কপথে কামারবাটি পৌঁছতে সময় লাগে প্রায় ৪ ঘণ্টার। এসপ্ল্যানেড থেকে প্রতি দিনই বাস ছাড়ে। এখানে সকাল ৯টা থেকে দেওয়া মহাভোগ। গিয়ে কুপন কেটে নেওয়া যায়। সকাল ৬টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা এবং বিকেল সাড়ে ৩টে থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকে মন্দির।
৫) জয়রামবাটি
কামারপুকুর, জয়রামবাটির ব্যবস্থা প্রায় একই ধরনের। সকাল ৬টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা এবং বিকেল সাড়ে ৩টে থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকে মন্দির। একই ভাবে সকাল সকাল কুপন কেটে রাখলে তবেই ভোগ পাওয়া যাবে।
৬) মায়াপুরের ইস্কন
হাওড়া থেকে ট্রেনে মায়াপুর পৌঁছতে সময় লাগে ঘণ্টা দুয়েক। সেখান থেকে ইস্কন মন্দির যেতে আরও আধ ঘণ্টা। এখানেও দু’বেলা থাকা এবং খাওয়ার সুন্দর ব্যবস্থা রয়েছে। দু’বেলা ৫০ থেকে ৬০ টাকার বিনিময়ে ভরপেট খাওয়া যায়। বাচ্চাদের জন্য কুপনের দাম অর্ধেক।
৭) নারায়ণস্বামী মন্দির
গাড়িতে ডায়মন্ড হারবার রোড ধরে জোকা পৌঁছতে সময় লাগে ঘণ্টাখানেক। দিনের বিভিন্ন সময়ে খেপে খেপে মন্দির খোলা থাকে। রাজভোগ দেওয়া হয় সকাল ১০টা থেকে ১১টা এবং বিকেলে ৬টা থেকে ৭টা পর্যন্ত। কুপন কেটে দু’বেলাই ভোগ প্রসাদ খেতে পারেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy