Advertisement
২৭ ডিসেম্বর ২০২৪
Christmas Travel

উত্তুরে হাওয়া, মিঠেকড়া রোদ গায়ে মেখে বেরিয়ে পড়তে পারেন কলকাতার আশপাশেই

শীতের দিনে কোথায় বেড়ানো যায়, তা নিয়ে ভাবনা? কলকাতার কাছেপিঠে এক দিনেই ঘুরে আসার ৫ ঠিকানা জেনে নিন।

শীতকালে ভ্রমণের স্বল্পচেনা ঠিকানা। ঘুরে আসতে পারেন অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বাগানবাড়ি।

শীতকালে ভ্রমণের স্বল্পচেনা ঠিকানা। ঘুরে আসতে পারেন অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বাগানবাড়ি। —নিজস্ব চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪ ১২:১৪
Share: Save:

শীতের কলকাতায় ঠান্ডার প্রাবল্য না থাক, মিঠেকড়া রোদে শরীরে উত্তুরে হাওয়ার ছোঁয়া মন্দ লাগে না। আর এমন সময়েই মনে চায় বেরিয়ে পড়তে। অনেকেই সন্ধান করেন শীতের মরসুমে নিত্যনতুন জায়গার। এমনই ৫ জায়গার হদিস জেনে নিন।

আলিপুর জেল মিউজ়িয়াম

বছর দুই হল মিউজ়িয়াম হয়েছে আলিপুরের পুরনো সংশোধনাগার।

বছর দুই হল মিউজ়িয়াম হয়েছে আলিপুরের পুরনো সংশোধনাগার। ছবি: সংগৃহীত।

ব্রিটিশ ভারতের প্রাচীনতম সংশোধনাগারগুলির মধ্যে একটি আলিপুর সেন্ট্রাল জেল।ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামীদের স্মৃতিবিজড়িত সেই স্থানই মিউজ়িয়ামের রূপ পেয়েছে বছর দুয়েক আগে। বিশাল ভবনের দেওয়ালে কান পাতলে আজও যেন শোনা যাবে স্বাধীনতা সংগ্রামীদের আত্মত্যাগের কাহিনি। সুভাষচন্দ্র বসু, চিত্তরঞ্জন দাস, জওহরলাল নেহরু, বিধানচন্দ্র রায়ের মতো ব্যক্তিত্বের স্মৃতিবিজড়িত আলিপুর জেল। স্বাধীনতা সংগ্রামীরা ছোট কুঠুরিতে কী ভাবে বন্দিজীবন কাটিয়েছেন, তা তুলে ধরা হয়েছে এখানে। প্রতি সন্ধ্যায় হয় লাইট-অ্যান্ড সাউন্ড শো। সেখানেই ধ্বনি-আলোর ব্যবহারে ফুটিয়ে তোলা হয় অতীতের সংগ্রামের ইতিহাস। খাওয়াদাওয়ার জন্য রয়েছে ক্যাফে থেকে শুরু করে ফুড জ়োন।

সময়: সোমবার ছাড়া সপ্তাহের অন্যান্য দিন খোলা থাকে। সকাল সাড়ে ১১টা সাড়ে ৫টা পর্যন্ত। সন্ধ্যা ৬টা থেকে শুরু হয় লাইট অ্যান্ড সাউন্ড শো। প্রবেশমূল্য ৩০ টাকা।

স্বামীনারায়ণ মন্দির

জোকার স্বামীনারায়ণ মন্দিরও এক দিনে ঘুরে আসার জন্য বেশ ভাল জায়গা।

জোকার স্বামীনারায়ণ মন্দিরও এক দিনে ঘুরে আসার জন্য বেশ ভাল জায়গা। ছবি: সংগৃহীত।

সাজানো বাগান, পাথরের সুবিশাল মন্দির। স্থানে স্থানে মার্বেলের সুদৃশ্য কারুকাজ। জোকার স্বামীনারায়ণ মন্দির দর্শনীয় স্থানের মধ্যেই পড়়ে। মন্দিরের খোলামেলা চত্বর শীতের মরসুমে ঘুরে বেড়ানোর জন্য আদর্শ। তবে, বাংলার মন্দির স্থাপত্যের সঙ্গে কোনও মিল নেই এর। বরং খুঁজলে সাযুজ্য পেতে পারেন পশ্চিম ভারতীয় স্থাপত্যশৈলীর সঙ্গে। স্বামীনারায়ণ সম্প্রদায়ের মন্দির রয়েছে গুজরাত-সহ ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে। তার মধ্যে এটিও একটি। জানা যায়, এই ভক্তিবাদী এই সম্প্রদায়ের সূচনা হয়েছিল যোগী সহজানন্দ স্বামীর হাত ধরে। তিনিই ‘স্বামীনারায়ণ’ নামে পরিচিত। রাধাকৃষ্ণ-সহ স্বামীনারায়ণ সম্প্রদায়ের বিভিন্ন সন্ন্যাসীর মূর্তি রয়েছে এখানে।

সময়: সকাল ৭টা থেকে ১২টা এবং বিকাল ৪টে থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত মন্দির খোলা থাকে। ভিতরে মোবাইলে নিয়ে যাওয়ার অনুমতি নেই। চামড়ার ব্যাগ, মোবাইল জমা রাখতে হয়। দিনে চার বার আরতি হয় মন্দিরে। ভিতরে ক্যান্টিনে নিরামিষ খাবারের ব্যবস্থাও আছে।

অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বাগানবাড়ি

হিন্দমোটর, কোন্নগর, রিষড়া, শ্রীরামপুর স্টেশনের নাম দেখেছেন হয়তো ট্রেনে যেতে যেতে। কিন্তু কখনও নামা হয়নি। তা হলে এবার ঘুরে আসতে পারেন অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বাগানবাড়ি থেকে। কোন্নগর স্টেশন থেকে টোটো বা অটো ধরে বাটা। তার পর মিনিট দশেকের হাঁটা। গঙ্গার তীরে অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতিবিজড়িত বাগানবাড়ি সেজে উঠেছে নতুন রূপে। পুরনো নকশা যথাসম্ভব অক্ষুণ্ণ রেখে সংস্কার কাজ হয়েছে।

‘ক্ষীরের পুতুল’, ‘বুড়ো আংলা’, ‘রাজকাহিনী’... মনে পড়ে কি ছেলেবেলায় পড়া বইগুলির কথা? সেই সব বইয়ের লেখক, চিত্রকর অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছেলেবেলার সঙ্গে জুড়ে রয়েছে বাগানবাড়িটি। স্মৃতিকথা বলছে, কোন্নগরের এই বাড়িতেই এক সময়ে সাঁতার, নৌকা, শিকারে স্বপ্নের মতো কেটেছে অবনীন্দ্রনাথের ছেলেবেলার কিছুটা। দেখেছেন বহুরপী, জীবনে প্রথম এঁকেছেন কুঁড়েঘর। গঙ্গার পারে অনাদরে পড়েছিল ঠাকুর পরিবারের সদস্য শিল্পী-সাহিত্যিক অবন ঠাকুরের স্মৃতিবিজড়িত বাগানবাড়ি। সেই ‘হেরিটেজ’ মর্যাদাপ্রাপ্ত সম্পত্তি বেহাত হতেও বসেছিল। তবে শেষ পর্যন্ত তা পুনরুদ্ধার করে নবরূপ দেওয়া সম্ভব হয়েছে।

সময়: সকাল ১০ টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত বাগানবাড়ি পর্যটকদের জন্য খোলা থাকে।

গান্ধী মিউজ়িয়াম

ব্যারাকপুরের গান্ধী মিউজ়িয়াম এখনও কি দেখা হয়নি? বেড়ানোর তালিকায় রাখতে পারেন।

ব্যারাকপুরের গান্ধী মিউজ়িয়াম এখনও কি দেখা হয়নি? বেড়ানোর তালিকায় রাখতে পারেন। ছবি: সংগৃহীত।

গঙ্গাতীরের আর এক শহর ব্যারাকপুর। মহাত্মা গান্ধীও একাধিক বার এই শহরে এসেছেন। ১৮৫৭-য় ব্যারাকপুরের সেনাছাউনিতেই মহাবিদ্রোহের সূচনা ঘটিয়েছিলেন মঙ্গল পাণ্ডে। নদীর পারে রয়েছে তাঁর নামাঙ্কিত উদ্যান। হাওড়ার দিক থেকে এলে শ্রীরামপুরে এসে, যুগল আঢ্য ফেরিঘাট থেকে নৌকায় গঙ্গা পেরিয়ে চলে আসতে পারেন ব্যারাকপুরের ধোবি ঘাটে। সেখান থেকে হেঁটেই পৌঁছনো যায় গান্ধী মিউজ়িয়াম। শিয়ালদহ থেকে এলে ব্যারাকপুর স্টেশন থেকে অটো ধরে এলে নামতে হবে মিস্ত্রি ঘাট। সেখান থেকেও হেঁটে যাওয়া যাবে মিউজ়িয়ামে। মহাত্মা গান্ধী, সুভাষচন্দ্র বসু-সহ একাধিক স্বাধীনতা সংগ্রামীর ছবি রয়েছে এখানে। প্রদর্শিত রয়েছে স্বাধীনতা সংগ্রামের নানা নথিপত্রও। এখান থেকে অটো ধরে চলে যেতে পারেন মঙ্গল পাণ্ডে উদ্যানে। নদীর পারে ছিমছাম সুন্দর পার্ক। রয়েছে মঙ্গল পাণ্ডের আবক্ষ মূর্তি। ঘুরে নেওয়া যায় গান্ধীঘাটও। এখানেই রয়েছে মহাত্মা গান্ধীর চিতাভস্ম। পাশেই রয়েছে সাজানো উদ্যান জওহর কুঞ্জ।

সময়: সকাল ১১টা বিকেল ৫টা পর্যন্ত মিউজ়িয়াম খোলা থাকে।

হরিণালয়

নিউটাউনের হরিণালয় ঘুরে নিতে পারেন এই শীতে।

নিউটাউনের হরিণালয় ঘুরে নিতে পারেন এই শীতে। ছবি: সংগৃহীত।

এ বছরের শীতে ঘুরে আসুন নিউ টাউন ইকো পার্কের মিনি জ়ু থেকে। নামে ‘হরিণালয়’ হলেও, এখানে রয়েছে কুমির, জ়েব্রা, জিরাফ, জলহস্তী থেকে শুরু করে দেশি-বিদেশি পশুপাখি। ১২.৫ হেক্টর জুড়ে ছড়ানো জায়গাটিতে প্রথমেই নজর কাড়বে এখানকার সুসজ্জিত আবহ। ঝকঝকে রাস্তা, ফুলের বাহার আর রয়েছে মানানসই ক্যাফে। পরবর্তী কালে এখানে বাঘ, সিংহ, চিতাবাঘও আনার পরিকল্পনা রয়েছে। ঘুরে নিতে পারেন ইকো পার্কের সাত আশ্চর্য, চাপতে পারেন টয় ট্রেনেও।

সময়: শীতকালে সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বিকাল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত খোলা থাকে। প্রবেশমূল্য প্রাপ্ত বয়স্কদের ৫০ টাকা।

অন্য বিষয়গুলি:

Travel Kolkata Alipur Jail
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy