বয়স্কদের সংক্রামক রোগ থেকে বাঁচাতে কী কী নিয়ম মানতে হবে তা জানালেন চিকিৎসকেরা। ছবি: ফ্রিপিক।
শীত এলেই দূষণের মাত্রা বাড়ে। সেই সঙ্গে বিভিন্ন ভাইরাস-ব্যাক্টেরিয়াও সক্রিয় হয়ে ওঠে। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, সংক্রমণের ফলে সাধারণ সর্দিকাশি তো বটেই, শ্বাসের সমস্যাও দেখা দিচ্ছে অনেকের। হাঁপানি ও সিওপিডির সমস্যা আগের থেকে বেড়েছে। কোভিড না হলেও তেমনই সব লক্ষণ দেখা দিচ্ছে অনেকের। শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যাঁদের কম বা অন্যান্য অসুখবিসুখ রয়েছে, তাঁরাই আক্রান্ত হচ্ছেন বেশি। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে শিশু ও বয়স্কেরাই রয়েছেন সেই তালিকায়। তাই এই সময়টায় বাড়ির প্রবীণ সদস্যদের বিশেষ খেয়াল রাখা জরুরি।
জনস্বাস্থ্য বিষয়ক চিকিৎসক অনির্বাণ দলুইয়ের কথায়, “বয়সকালে এমনিতেই উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবিটিস-সহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হন অনেকে। ওই সমস্ত কো মর্বিডিটির কারণেই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে। তাই জীবাণুঘটিত রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও বেশি থাকে। অনেক সময়ে সিওপিডি-তে আক্রান্ত বয়স্কেরা নিউমোনিয়া নিয়ে ভর্তি হচ্ছেন। আবার ইনফ্লুয়েঞ্জার উপসর্গও দেখা যাচ্ছে অনেকের। তাতে শারীরিক অবস্থা মারাত্মক জায়গায় গিয়ে পৌঁছচ্ছে।”
কোভিডের পর থেকে শ্বাসজনিত নানা রোগের প্রকোপ বেড়েছে। চিকিৎসক জানাচ্ছেন, করোনায় আক্রান্ত হয়ে বা প্রতিষেধক নিয়ে শরীরে যে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছিল, তার কার্যকারিতা এখন প্রায় চলে গিয়েছে। কিন্তু কমবয়সিরা সংক্রমিত হলেও তাঁদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তা প্রতিহত করতে পারছে, যেটা বয়স্কদের পক্ষে একেবারেই সম্ভব হচ্ছে না। তা ছাড়া জ্বর, সর্দিকাশি হলে কেউই তেমন বিধি মানছেন না। কোভিডের সময়ে মাস্ক পরার যে অভ্যাস ছিল, তা এখন আর নেই। ফলে বাতাসের দূষিত কণা যেমন নাসারন্ধ্র বা মুখ দিয়ে ঢুকে শ্বাসনালিতে প্রদাহ তৈরি করছে তেমনই নানা ভাইরাস ও ব্যাক্টেরিয়াও সহজেই শরীরে ঢুকে সংখ্যায় বাড়ছে।
বয়স্কদের সাবধানে রাখতে গেলে সেই আগের মতোই বিধিনিষেধ মানতে হবে বলেই মত চিকিৎসক অরুণাংশু তালুকদারের। কী কী নিয়ম মানতে হবে?
১) বয়স্কেরা ওষুধপত্র সময়মতো খাচ্ছেন কি না দেখুন। প্রয়োজনে তাঁদের ওষুধের ডোজ় বাড়া-কমা নিয়ে চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলুন।
২) হার্টের রোগ, ডায়াবিটিস, কিডনির অসুখ বা অন্যান্য রোগ থাকলে সময়ান্তরে তার চেকআপ করাতে হবে। সাবধানে থাকতে নিউমোনিয়া, ইনফ্লুয়েঞ্জার প্রতিষেধক নিয়ে রাখা ভাল।
৩) রাস্তায় বেরোলে মাস্ক পরতেই হবে। হাত ভাল করে ধোয়া ও স্যানিটাইজ় করা জরুরি।
৪) হাঁপানি বা শ্বাসকষ্ট থাকলে হাতের কাছে প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র ও ইনহেলার রাখুন। কোনও ক্রনিক অসুখ থাকলে তার চিকিৎসা বন্ধ করা যাবে না।
৫) গরম জলে স্নান করতে হবে বয়স্কদের। তাঁদের খাবারে আদা-দারচিনি-হলুদের মতো মশলা— যাতে পর্যাপ্ত পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট রয়েছে— সে সব ব্যবহার করুন। আদা, গোলমরিচ, দারচিনি, লবঙ্গ, কাঁচা হলুদ ফুটিয়ে পানীয় তৈরি করে লেবু মিশিয়ে চায়ের মতো খাওয়াতে পারেন।
৬) হালকা শরীরচর্চা ও যোগব্যায়াম করলে শরীর ভাল থাকবে। শ্বাসের ব্যায়াম নিয়মিত করা ভাল। কোন ধরনের ব্যায়াম উপযুক্ত হবে, তা শিখে নিন।
৭) বাড়ির বয়স্ক সদস্যের নিয়মিত ভাবে শারীরিক পরীক্ষা করানো উচিত, প্রয়োজনে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতে হতে পারে। রক্তচাপ, রক্তে শর্করার পরিমাণ, ট্রাইগ্লিসারাইড প্রভৃতি যেন সঠিক মাত্রায় থাকে, সে দিকে নজর দিন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy