বাঙালি ভ্রমণপিপাসু। সারা বছর বাড়িতে বসে থাকা তাদের অভিধানে নেই। দেশে বা বিদেশে ঘুরতে গিয়ে নতুন জায়গায় নানা সমস্যা আসতে পারে। সম্প্রতি কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে জঙ্গিহানার পর পর্যটকেদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। তবে আগাম কিছু সতর্কতা এবং পরামর্শ মাথায় রাখলে অনেক সময়েই ঘুরতে গিয়ে আপৎকালীন পরিস্থিতিতে উপকার পাওয়া যেতে পারে।
আরও পড়ুন:
১) আতঙ্কিত হবেন না
বিপদ কখনও আগাম জানান দিয়ে আসে না। তাই ঘুরতে গিয়ে পরিস্থিতি প্রতিকূল হলে মাথা ঠান্ডা রাখা উচিত। অযথা আতঙ্কিত হবেন না। চট জলদি কোনও সিদ্ধান্ত না নিয়ে প্রয়োজনে শান্ত মনে পরবর্তী পদক্ষেপ ভেবে নেওয়া যেতে পারে। সঙ্গে যাঁরা রয়েছেন, তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করেও সমস্যার সমাধান হতে পারে।
২) মনের কথা শুনুন
হতেই পারে কোনও বিপদের আগাম আঁচ পেয়েছেন। নিজের মন এবং বুদ্ধি দিয়ে পরিস্থিতি যাচাই করুন। তার ফলে বিপদ উপস্থিত হলেও আপনি সহজেই তার মোকাবিলা করতে পারবেন।
৩) টাকা এবং নথি
নতুন জায়গায় যে কোনও রকম বিপদ হতে পারে। তাই টাকা-পয়সা একটি নির্দিষ্ট ব্যাগে রাখা উচিত নয়। পরিবর্তে বিভিন্ন জায়গায় অল্প অল্প করে টাকা-পয়সা ভাগ করে রাখা উচিত। প্রয়োজনীয় সরকারি পরিচয়পত্র (যেমন পোসপোর্ট এবং আধার কার্ড) এবং ভ্রমণ সংক্রান্ত কাগজপত্রের (যেমন হোটেল বা গাড়ির বুকিংয়ের কাগজ) একাধিক প্রিন্টআউট নিজের সঙ্গে রাখা উচিত।

— প্রতীকী চিত্র। ছবি: সংগৃহীত।
৪) আপনি নায়ক নন!
নতুন জায়গায় বিপদে পড়লে অনেক সময়েই নিজেকে সকলের মাঝে প্রমাণ করার তাগিদ থাকতে পারে। কিন্তু নিজে সাঁতার না জেনে অন্যকে জল থেকে বাঁচাতে যাওয়া অর্থহীন। ঘুরতে গিয়ে অপরিচিত ব্যক্তি বা কোনও দুষ্কৃতীর সঙ্গে বচসায় না জড়ানোই শ্রেয়। কোনও ‘নায়কোচিত’ পদক্ষেপ না করাই ভাল।
৫) দেখনদারি নয়
ঘুরতে গিয়ে অযথা গয়না বা সঙ্গের দামি জিনিস প্রকাশ্যে আনার দরকার নেই। সব সময়েই ভ্রমণের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র এবং অন্যান্য মূল্যবান জিনিসের ক্ষেত্রে গোপনীয়তা বজায় রাখা উচিত।

— প্রতীকী চিত্র। ছবি: সংগৃহীত।
৬) ভিড়ের মাঝেই সুরক্ষা
সমস্যায় পড়লে ঘটনাস্থলে বাকি পর্যটকেদের সঙ্গেই মিশে থাকা উচিত। তাঁরা কী করছেন, আলোচনা করে একসঙ্গে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। কোনও বিপদ উপস্থিত হলে ভিড় ছেড়ে একা অন্য কোনও পথে পা না বাড়ানোই ভাল। একসঙ্গে থাকলে সমস্যার মোকাবিলা করা অনেক সহজ হয়ে যায়।
৭) স্থানীয় আপৎকালীন নম্বর
গন্তব্যে পৌঁছনোর আগে সেখানকার সরকারি আপৎকালীন নম্বর (যেমন কলকাতায় ‘১০০’) জেনে রাখা ভাল। তা হলে সমস্যায় পড়লে সহজেই সাহায্য পাওয়া যেতে পারে। মোবাইলের চার্জ যে কোনও সময়ে শেষ হয়ে যেতে পারে। তাই পরিবারের সদস্যদের ফোন নম্বর এবং হোটেলের নাম ঠিকানা কোনও ছোট নোটবুকে লিখে রাখলে সুবিধা হবে।
৮) বিকল্প পরিকল্পনার প্রয়োজন
ঘুরতে গিয়ে ‘প্ল্যান বি’ ভাবা থাকলে সুবিধা হয়। সে ক্ষেত্রে কোনও সমস্যায় পরলে নিকটবর্তী হাসপাতাল, অন্য কোনও হোটেল, সরকারি তথ্যকেন্দ্রের ফোন নম্বর এবং ঠিকানা জেনে রাখুন।

— প্রতীকী চিত্র। ছবি: সংগৃহীত।
৯) ভাষা জানার সুবিধা
দেশ হোক বা বিদেশ, গন্তব্য স্থানের স্থানীয় ভাষায় আপতকালীন কিছু শব্দ (যেমন ‘বিপদ’,‘হাসপাতাল’, ‘পুলিশ’, ‘সাহায্য চাই’) জেনে রাখা উচিত। বিপদে পরলে উপকার পাওয়া যেতে পারে।
১০) তর্ক থেকে দূরে
কোথাও ঘুরতে গিয়ে স্থানীয় প্রশাসন বা আধিকারিকদের সঙ্গে কোনও রকম তর্কে না জড়ানোই ভাল। হতেই পারে তাঁরা আপনার সমস্যা বুঝতে পারছেন না। সে ক্ষেত্রে মাথা ঠান্ডা করে তাঁদের সমস্যা বোঝানো উচিত। অন্যথায় আপনি নিজে বড় বিপদ ডেকে আনতে পারেন।