ভারতীয় ক্রিকেট প্রশাসনের সর্বোচ্চ আসনে বসেই বাউন্সারের সামনে পড়লেন সুনীল গাওস্কর। কেন আইপিএলের ম্যাচের দায়িত্ব তাদের দেওয়া হল না এই প্রশ্ন তুলে ক্ষুব্ধ রাজস্থান ক্রিকেট সংস্থা (আরসিএ) চিঠি পাঠাল ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্টকে।
এখানেই শেষ নয়। আরও একটা ‘বাউন্সার’ এসেছে সরকারের তরফেও। বোর্ডকে রীতিমতো অস্বস্তিতে ফেলে গিয়ে চিঠি পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় ক্রীড়া মন্ত্রকও। কেন আরব আমিরশাহির মতো অনিয়মিত জায়গায় আইপিএলের ম্যাচ নিয়ে যাওয়া হল, চিঠিতে বোর্ডের কাছে তার ব্যাখ্যা চেয়েছে ক্রীড়া মন্ত্রক।
আরসিএ চিঠিতে অভিযোগ জানানোর পাশাপাশি আবার দাবিও তুলেছে। রাজস্থান রয়্যালসের হোম ম্যাচগুলি যাতে নরেন্দ্র মোদীর রাজ্য থেকে ললিত মোদীর ক্রিকেট সাম্রাজ্যে ফিরিয়ে দেওয়া হয়, সেই দাবিও জানানো হয়েছে এই চিঠিতে। অভিযোগও করা হয়েছে, এই ব্যাপারে তাদের সঙ্গে আলোচনা না করে অন্যায় ভাবে রাজস্থান রয়্যালসের হোম ম্যাচ আমদাবাদকে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আইপিএল গভর্নিং কাউন্সিল।
গাওস্কর অবশ্য আরসিএ-র এই দাবি কার্যত নস্যাৎ করে দিয়েছেন। তবে এতে আরসিএ-র হবু প্রেসিডেন্ট ললিত মোদীর সঙ্গে বোর্ডের সঙ্ঘাতের রাস্তা আরও পরিষ্কার হল বলেই ধারণা ওয়াকিবহাল মহলের। আরসিএ-র নির্বাচনের ফল এখনও সুপ্রিম কোর্ট না জানালেও রাজস্থান ক্রিকেট মহলে বিশ্বাস ললিত মোদীই এই সংস্থার প্রেসিডেন্ট হিসেবে ফের ভারতীয় ক্রিকেট রাজনীতিতে ফিরে আসছেন। সেই কারণেই এই বঞ্চনা, ধারণা সে রাজ্যের ক্রিকেট প্রশাসকদের।
আরসিএ-র ভারপ্রাপ্ত সচিব কে কে শর্মা গাওস্করকে দেওয়া চিঠিতে লিখেছেন, “আমাদের সঙ্গে কথা না বলে আমদাবাদকে ম্যাচ দেওয়া হল। এতে আমাদের সংস্থার যেমন আর্থিক ক্ষতি হবে, শহরের ক্রিকেটপ্রেমীরাও বঞ্চিত হবেন। তাই রাজস্থানের হোম ম্যাচগুলো জয়পুরে ফিরিয়ে দেওয়া হোক।” মে-র প্রথম দিকে আইপিএল ম্যাচের জন্য যথেষ্ট নিরাপত্তার বন্দোবস্ত নিয়ে সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারের কাছ থেকে যে অনুমতি চাওয়া হয়েছিল, তাও রাজস্থান সরকার দিয়েছে, দাবি করেছেন শর্মা। উত্তরে আইপিএলের জন্য ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট গাওস্কর বলেন, “বিভিন্ন রাজ্য সংস্থার কাছে বোর্ড জানতে চেয়েছিল, নির্বাচনের সময় তাদের শহরে ম্যাচ করা সম্ভব কি না। তাদের জবাবের ভিত্তিতেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। জয়পুরের ক্ষেত্রে ব্যাপারটা অনিশ্চিত ছিল। তা ছাড়া শুধু জয়পুর নয়, আরও কয়েকটি শহরে আইপিএল ম্যাচ করা যাচ্ছে না। তার মানে এই নয় যে, আগামী বছরও আইপিএলের ম্যাচ ওখানে হবে না। এ বার অবস্থা বুঝে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।”
বোর্ড সচিব সঞ্জয় পটেলও বলেন, “রাজস্থান রয়্যালস কর্তৃপক্ষই আমাদের জানিয়েছিল, অনিশ্চয়তা এড়াতে ওরা আমদাবাদেই হোম ম্যাচ খেলতে রাজি। নানা দিক খতিয়ে দেখে সেই সব বিষয়ে নিশ্চিত হয়ে তবেই আইপিএলের মতো টুর্নামেন্টের পরিকল্পনা করা হয়। এক্ষেত্রেও তা-ই করা হয়েছে।”
কেন্দ্রীয় ক্রীড়া মন্ত্রক আবার ২০০০ সালের গড়াপেটা কেলেঙ্কারির জেরে শারজা কেন্দ্রের উপর ভারত নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল মনে করিয়ে বোর্ডের কাছে জানতে চেয়েছে, সেই শারজাতেই এখন আইপিএল হচ্ছে কী করে। চিঠিতে লেখা হয়েছে, “আমিরশাহিতে খেলার ছাড়পত্রের জন্য বোর্ডকে সরাসরি বিদেশ ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে যেতে হবে। তবে শারজার মতো কলঙ্কিত কেন্দ্রে গড়াপেটা রুখতে বোর্ড কী ব্যবস্থা নিচ্ছে সেটা আমাদের স্পষ্ট করে জানানো হোক।” সঙ্গে সতর্ক করে দেওয়ার সুরে আরও বলা হয়েছে, “২০১৪ আইপিএলে বেটিং এবং গড়াপেটা মোকাবিলা করার সব দায় কিন্তু বোর্ডের উপরেই বর্তাবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy