“শুনেছেন, আমাকে ওরা বখাটে বলে ডাকছে?”
অস্ট্রেলিয়ায় ভারতের যে সব গৌরবের ইনিংস আছে, বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই মহানায়করা মাঠের জবাব মাঠেই ছেড়ে এসেছেন। বিরাট কোহলি সেখানে রবিবার মাঠের পর প্রেস কনফারেন্সেও একটা ঝোড়ো ইনিংস খেলে গেলেন।
বলে দিলেন, মিচেল জনসনকে সম্মান করার কোনও কারণ দেখছেন না। “ওকে সম্মান করব কেন? যারা মাঠে আমাকে সম্মান করে না, আমিও তাদের সম্মান করি না,” বলে দেন কোহলি। মাঠের মধ্যে মাঝে মাঝেই জনসন-কোহলির টুকটাক লাগছিল। যেটা চরমে ওঠে যখন কোহলিকে রান আউট করার চেষ্টায় জনসন ফলো-থ্রু থেকে বল তুলে স্টাম্প তাক করে ছোড়েন। কোহলির যা নিয়ে মনে হয়েছে, বলটা তাঁকে আঘাত করার জন্য তাঁর দিকেই ছোড়া হয়েছিল। এর পর দু’জনের কথা কাটাকাটি শুরু হয়। আম্পায়ারদের এসে যা মেটাতে হয়।
“খুব বিরক্ত হয়েছিলাম। যে ভাবে আমাকে বল দিয়ে মারা হল। ওকে বলি, এটা ঠিক হচ্ছে না। পরের বার থেকে স্টাম্পে মারার চেষ্টা কোরো, আমার শরীরে নয়,” বলে কোহলির সংযোজন, “কারও গালাগাল খাওয়ার জন্য মাঠে যাই না। ঝগড়া করতেও না। যাই ক্রিকেট খেলতে, আর তাই আমাকে সম্মান না করলে আমিও করব না।” কোহলির মনে হচ্ছে, অস্ট্রেলিয়ার এই মনোভাবই তাদের বিরুদ্ধে তাঁর পাঁচটা সেঞ্চুরির কারণ। “ওরা সারা দিন এ সব চালায়। আজই তো বলল, তুমি একটা বখাটে ছেলে। আমি বললাম আমি এ রকমই। তোমরা যত আমাকে ঘৃণা করবে, আমার তত ভাল লাগবে। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে খেলতে বরাবরই ভাল লাগে, কারণ ওরা মাঠে শান্ত থাকতে পারে না। আর ঝামেলা করা নিয়ে আমার সমস্যাও নেই। ওটা আমাকে তাতায়, উত্তেজিত করে, আমার সেরাটা বার করে আনে। তবুও তো অস্ট্রেলিয়াকে শিখতে দেখি না!”
জনসনদের মতো কাউকে কাউকে যে তিনি আলাদা টার্গেট করে নেন, সেটাও বলে দিয়েছেন কোহলি। তাঁর ব্যঙ্গ, “সব টিমেই দু’একজন থাকে যারা শান্ত থাকতে জানে না। ওরাই আমার টার্গেট।” কোহলিকে মনে করিয়ে দেওয়া হয়, ভারত সম্পর্কে স্টিভ স্মিথ কী মন্তব্য করেছেন এই টেস্টটা শুরুর আগে। “ওদের সেই অধিকারটা আছে। ২-০ এগিয়ে। ১-১ হলে দেখতাম একই কথাগুলো বলতে পারত কি না। যখন তুমি চড়ে বসেছ, তখন অনেক কিছুই বলতে পারো। কিন্তু যখন তুমি শাসিত হচ্ছো, তখন উঠে দাঁড়ানোটাই আসল। যখন ওরা ভারতে খেলতে এসেছিল, তখন তো কিছু বলতে শুনিনি। অবাক ব্যাপার না? আমরা ০-২ পিছিয়ে, তার পরেও ওদের দেখাচ্ছি ব্যাট হাতে আমরা কী করতে পারি, দেখাচ্ছি ভারতীয় টিমের আসল চরিত্রটা কী।”
কিন্তু জনসনকে তো ব্যাটিংয়ের সময় ব্রিসবেনে স্লেজ করতে গিয়েছিল ভারত। কাজ তো হয়ইনি, উল্টে জনসন ম্যাচ বের করে নিয়েছিলেন। “ও যখন ব্যাট করছিল তখন কোনও চাপ ওকে নিতে হয়নি। কারণ ওটা ওর কাজ না। ওর কাজ উইকেট নেওয়া। আর আজ কিন্তু ও ওভারপিছু সাড়ে চারের উপর দিয়েছে! আমি ঠিকই করেছিলাম, জনসন বল করতে এলে ওর বারোটা বাজাব।”
অস্ট্রেলীয়দের এমন আগুনের বদলে আগুন শেষ কোন ভারতীয় দিয়েছেন? স্টিভ ওয় ভাল বলতে পারবেন!
অস্ট্রেলিয়া প্রথম ইনিংস: ৫৩০
ভারত প্রথম ইনিংস (আগের দিন ১০৮-১)
বিজয় ক মার্শ বো ওয়াটসন ৬৮
পূজারা ক হাডিন বো হ্যারিস ২৫
কোহলি ক হাডিন বো জনসন ১৬৯
রাহানে এলবিডব্লিউ লিয়ঁ ১৪৭
রাহুল ক হ্যাজলউড বো লিয়ঁ ৩
ধোনি ক হাডিন বো হ্যারিস ১১
অশ্বিন ক ও বো হ্যারিস ০
শামি নঃআঃ ৯
অতিরিক্ত ২
মোট ৪৬২-৮
পতন: ৫৫, ১০৮, ১৪৭, ৪০৯, ৪১৫, ৪৩০, ৪৩৪, ৪৬২
বোলিং: জনসন ২৯.২-৫-১৩৩-১, হ্যারিস ২৫-৭-৬৯-৪, হ্যাজলউড ২৫-৬-৭৫-০, ওয়াটসন ১৬-৩-৬৫-১, লিয়ঁ ২৯-৩-১০৮-২, স্মিথ ২-০-১১-০।
• সুনীল গাওস্করের (১৯৭৭) পর অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে অস্ট্রেলিয়ায় এক সিরিজে তিনটে সেঞ্চুরি হল কোহলির।
• এক ক্যালেন্ডার বর্ষে লর্ডস আর এমসিজিতে সেঞ্চুরি করা প্রথম এশীয় ক্রিকেটার রাহানে।
• বিরাট-রাহানের ২৬২ রান দশ বছরে এশিয়ার বাইরে ভারতের সর্বোচ্চ পার্টনারশিপ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy