জয়ের গোল। বেলজিয়ামের হয়ে ২-১ মার্টেন্সের। ছবি: এএফপি
আলজিরিয়া-১ (ফেগওউলি-পেনাল্টি)
বেলজিয়াম-২ (ফেলাইনি, মার্টেন্স)
বারো বছর পর বিশ্বকাপে আসা বেলজিয়ামের গায়ে চিরাচরিত ‘রেড ডেভিলস’-এর চেয়েও এ বার বড় তকমা ‘সোনালি প্রজন্মের দল’। এতটাই বেশি প্রতিভাবান ফুটবলারদের সমষ্টি!
গ্রুপের প্রথম ম্যাচে নেমেছিল সাত-সাত জন প্রিমিয়ার লিগের ফুটবলার নিয়ে। যাঁরা কিনা সব তাবড় বড় ক্লাবে এ মরসুমে ফাটিয়ে এসেছেন। চেলসির হ্যাজার্ড। এর্ভাটনের লুকাকু। ম্যাঞ্চেস্টার সিটির কম্পানি। টটেনহ্যামের ভারতঙ্গেন, ডেম্বেলে। এ ছাড়াও বায়ার্নের বুয়েতেন, অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের অল্ডারওয়েরেল্ড, গোলকিপার কুতোর্য়া।
এত হেভিওয়েট দল মার্ক উইলমটসের যে, ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের জানুজাজ, ফেলাইনি, আর্সেনালের ভার্মেলাইনের মতো প্লেয়ারকে রিজার্ভ বেঞ্চে বসে থাকতে হয়! মঙ্গলবারও ৬৯ মিনিট পর্যন্ত আলজিরিয়ার ফেগওউলির পেনাল্টি গোলে পিছিয়ে থাকার পর পেলের দেশের বিশ্বকাপের ‘কালো ঘোড়া’ বেলজিয়াম দশ মিনিটের মধ্যে যে দু’গোল মেরে পুরো তিন পয়েন্ট তুলে নিল, সেই দু’টোই তাদের দুই পরিবর্ত ফুটবলারের মাথা আর পা থেকে আসা। দুই ‘সুপার-সাব’ হয়ে উঠলেন নাপোলির মার্টেন্স আর ম্যান ইউয়ের ফেলাইনি। শেষ জন তো মাঠে ঢোকার পাঁচ মিনিটের মধ্যেই বিশ্বকাপের টেনশনে আচম্বিত জড়ভরত দেখানো বেলজিয়ামকে সমতায় ফিরিয়ে যেন টিমের মধ্যে নতুন প্রাণপ্রতিষ্ঠা করলেন! আর হ্যাজার্ডের মাপা পাস থেকে ৮০ মিনিটে জয়ের গোল করা মার্টেন্সকে কোচ হাফটাইমের পরেই নামিয়ে ৪-২-৩-১ ফমের্শন থেকে পরিচিত ৪-৪-২ ছকে চলে যাওয়ার পরেই বেলজিয়ামের অ্যাটাকিং দক্ষতা এই ম্যাচে প্রথম প্রকাশ পেতে থাকে।
আসলে বিরিয়ানির মশলা হাতে থাকলেই যে সব সময় বিরিয়ানি রান্না সম্ভব তা বোধহয় নয়। তার জন্য দরকার সঠিক রন্ধন প্রণালীও। শুরুতে দেম্বেলে আর উইটসেলকে ‘ডাবল পিভট’ রেখে ফরোয়ার্ডে একা লুকাকুকে নামিয়ে আলজিরিয়ার মতো পলকা দলের গায়েও কামড় বসাতে পারছিলেন না বেলজিয়াম কোচ উইলমটস। বারো বছর আগে ২০০২-এ বেলজিয়ামের শেষ বিশ্বকাপ গোলটি যদি রাশিয়া ম্যাচে তাঁরই পা থেকে এসে থাকে, তা হলে আলজিরিয়া এ দিন বিশ্বকাপে প্রথম গোল করল ৫০৪ মিনিট অভুক্ত থাকার পর। তবু এহেন প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধেও ম্যাচের প্রথম এক ঘণ্টা বেলজিয়ামকে দেখাল যেন আজই দুপুরে হরাইজন্তেতে তাদের ফুটবলারদের প্রথম সাক্ষাৎ ঘটেছে! বিন্দুমাত্র বোঝাপড়া দেখা যাচ্ছিল না। উইলমটসের বাহাদুরি তিনটে পরিবর্তই তিনি যথার্থ করতে পেরেছেন। নইলে হ্যাজার্ডদের মতোই তাঁদের কোচও তো এক যুগ পর দেশের বিশ্বকাপে প্রত্যাবর্তনের চাপে ছিলেন। না হলে আলজিরিয়ার সাদা জার্সি দেখেও উইলমটস-ও সাদা শার্ট পরে মাঠে নামেন! চতুর্থ রেফারি তাঁকে বাধ্য করেন ড্রেসিংরুম থেকে রঙিন জ্যাকেট আনিয়ে পরতে। বিশ্বকাপ বড়ই বালাই!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy