এক দিকে, ভারতীয় টিমের নৈতিকতা নিয়ে কিংবদন্তি সুনীল গাওস্করের প্রশ্ন তুলে দেওয়া। অন্য দিকে, শাহিদ আফ্রিদির সমালোচকদের আব্দুল কাদিরের একহাত নিয়ে রাখা।
এশিয়া কাপে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের চব্বিশ ঘণ্টা পর ওয়াঘার এপার-ওপারে কত তফাত!
রবিবার মীরপুরের যুদ্ধে ভারত শেষ ওভারে পর্যুদস্ত হওয়ার পরপরই এক টিভি চ্যানেলে গাওস্কর প্রায় তুলোধোনা করেছেন ভারতীয় টিমকে। বলে দিয়েছেন, “ভারতীয় টিমের মনোভাব অত্যন্ত শোচনীয়। এতে টিমেরই খারাপ হচ্ছে। ওরা ঠিক মতো প্র্যাকটিসও করেনি। আর ওই অপশনাল প্র্যাকটিস বলে কিছু হতে পারে না। শিখর ধবন আর বিরাট কোহলি বাদে বাকিদের প্র্যাকটিসে না আসার কোনও অজুহাত হতে পারে না।” এখানেই না থেমে ভারতের সর্বকালের সেরা ওপেনার ভারতের টপ অর্ডারকে একহাত নিয়ে আরও বলে রেখেছেন, “অহেতুক ভাবে কয়েকটা উইকেট ছুড়ে আসা হল। হালফিলে পাকিস্তানকে যত বার আড়াইশোও তাড়া করতে হয়েছে, তত বার ওরা হেরেছে। এশিয়া কাপে আমাদের সামান্য কিছু রান কম হয়েছে।” তবে ভারতীয় দলের মনোভাবের কঠোর সমালোচনা করলেও বিরাট কোহলির অধিনায়কত্ব মনে ধরেছে গাওস্করের। বলে দিয়েছেন, “এত বড় একটা টুর্নামেন্টে বিরাট এই প্রথম অধিনায়কত্ব করছে। সে দিক থেকে ও ভালই করেছে। যথেষ্ট সম্ভাবনাও দেখিয়েছে। এটা মনে রাখতে হবে যে, শ্রীলঙ্কা এবং পাকিস্তান, দু’টো টিমের বিরুদ্ধেই ভারত হেরেছে কিন্তু শেষ ওভারে।”
গাওস্কর যখন আক্রমণ করছেন ভারতীয় ব্যাটিংকে, ওয়াঘার ওপার থেকে কিংবদন্তি স্পিনার আব্দুল কাদির তখন ডুবে আফ্রিদিতে। পরিষ্কার শুনিয়ে দিয়েছেন যে, গোটা ক্রিকেটজীবন সমালোচনা শুনেই কাটাতে হয়েছে আফ্রিদিকে। ভারতের বিরুদ্ধে ম্যাচ জেতানো পারফরম্যান্সের পর যা চিরকালের জন্য বন্ধ হওয়া উচিত বলে মনে করেন কাদির। “আমি বরাবরই বলে এসেছি যে, আফ্রিদি থ্রি ইন ওয়ান প্লেয়ার। যে ব্যাট, বল, ফিল্ডিং তিনটেই ভাল ভাবে করতে পারে। ওকে নিয়ে অহেতুক কথা বলা হয়েছে। যেটা ওর মতো সিনিয়র ক্রিকেটারের প্রাপ্য নয়। বরং সম্মানটা প্রাপ্য।” শুধু তাই নয়, আফ্রিদিকে ক্যাপ্টেন করে দেওয়ারও সওয়াল করেছেন কাদির। বলেছেন, “ওকেই অধিনায়কত্ব দেওয়া উচিত। ২০১৫ বিশ্বকাপ অনেক দূরের ব্যাপার। দল নির্বাচন করা হোক ক্রিকেটারদের বর্তমান ফর্ম আর ফিটনেসের ভিত্তিতে।”
পাশাপাশি কাদির অবাক হয়ে গিয়েছেন ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের মনোভাব দেখে। “ম্যাচটা শুরু হওয়ার আগে ভেবেছিলাম, ভারতের ব্যাটিং পাকিস্তানের চেয়ে ভাল হবে। দেখে অবাক হয়ে গেলাম যে, বেশ কিছু ক্রিকেটার দায়িত্বজ্ঞানহীনের মতো শট খেলে ফিরে এল। ক্রিকেটে এখন বিরাট কোহলি সেরা ব্যাটসম্যানদের অন্যতম। কিন্তু যে ভাবে ও আউট হল খুব হতাশজনক।” প্রাক্তন পাকিস্তান পেসার শোয়েব আখতারের আবার মনে হচ্ছে, ব্যাটিং নয়, বোলিং জিতিয়েছে পাকিস্তানকে। বলেছেন, “ও রকম ব্যাটিং ট্র্যাকে ভারতকে অল্প রানে আটকে রাখাটা বড় ব্যাপার। ম্যাচটা বোলাররাই জিতিয়েছে। আর বিরাটের উচিত ছিল শামির জন্য শেষ দিকে দু’টো ওভার বাঁচিয়ে রাখা।”
ভারত কী ভাবে টিকে
সোমবার জিতে তিন ম্যাচে ১৩ পয়েন্ট নিয়ে এশিয়া কাপ ফাইনালে চলে গেল শ্রীলঙ্কা। দু’নম্বরে পাকিস্তান (তিন ম্যাচে ৯)। ভারত তিনে (তিন ম্যাচে ৪)। শ্রীলঙ্কা এ দিন জিতে যাওয়ায় ভারতের পক্ষে ফাইনালে ওঠা আরও কঠিন হল। বাংলাদেশ যদি শেষ দুটো ম্যাচ (পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে) জেতে এবং একটায় বোনাস পয়েন্ট পায়, এবং ভারতও যদি আফগানিস্তানকে বোনাস পয়েন্ট নিয়ে হারায়, তা হলে ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ সমান পয়েন্টে চলে যাবে। মুখোমুখি জয়ের হিসেব তখন হবে না। চলে আসবে রানরেট। তখন ভারতের ফাইনালে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও থাকতে পারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy