ফুরফুরে: ব্রাজিল শিবিরে হালকা মেজাজে নেমার। টটেনহ্যামে চলছে বিশ্বকাপের প্রস্তুতি। বুধবার। ছবি: এএফপি
রাশিয়া বিশ্বকাপে খেলার জন্য প্রথম যোগ্যতা অর্জন করলেও ব্রাজিলে আসল পরীক্ষা মূলপর্বে। চার বছর আগে জার্মানির কাছে হারের দুঃস্বপ্ন কাটাতে ব্রাজিলের সামনে দারুণ কিছু করা ছাড়া রাস্তা নেই। দারুণ কিছু করা মানে বিশ্বকাপটাই নিয়ে যাওয়া। ব্রাজিল কোচ তিতে তো বলেই রেখেছেন, ‘‘আমরা এমন একটা দেশে ফুটবল খেলি যেখানে দ্বিতীয়-তৃতীয় স্থানেরও মূল্য নেই।’’
ইউরোপে ব্রাজিল শেষ বিশ্বকাপ জিতেছিল ১৯৫৮ সালে সুইডেনে। অর্ধ শতাব্দীর বেশি হয়ে গেল, ইউরোপ থেকে খালি হাতে ফিরছে পেলের দেশ। এ বার কি অন্য কিছু হলেও হতে পারে?
এমন প্রশ্ন কিন্তু এড়িয়েই গেলেন রাশিয়ায় ব্রাজিল দলের অভিজ্ঞ ডিফেন্ডার থিয়াগো সিলভা, ‘‘আমরা এত দিন তো বিশ্বকাপের জন্যই তৈরি হয়েছি। প্রথম দুঙ্গার কাছে। এখন তিতে কোচ। নতুন কোচিংয়ে গত দু’বছরে দল প্রচুর উন্নতি করেছে। করেছে বলেই বিশ্বকাপের মতো মঞ্চে এত সহজে পৌঁছেছি।’’ থিয়াগোর আরও মন্তব্য, ‘‘বিশ্বকাপে নতুন ইতিহাস রচনার সুযোগ সামনে। কিন্তু কাপ জিততে পারব কি না নিশ্চয়তা দেওয়া সম্ভব নয়। এটুকু বলতে পারি, রবিবার ক্রোয়েশিয়ার বিরুদ্ধে আমাদের আপনারা ভাল খেলতে দেখবেন। রাশিয়াতেও দারুণ খেলব।’’
কিন্তু নেমার দ্য সিলভা স্যান্টোস জুনিয়র কতটা তৈরি? সিলভার আশ্বাস, ‘‘ভালই তো অনুশীলন করছে। এমনিতে ওর মাথা অসম্ভব ঠান্ডা। ওকে সব সময় বলি, জীবনে কঠিন সময় থাকবেই। জানবে কঠিন সময় কেটে গেলেই আসবে ভাল সময়। ও নিজে আত্মবিশ্বাসী। বিশ্বকাপে প্রথম ম্যাচের আগেই নিজেকে তৈরি করে ফেলতে চায়। আমার বিশ্বাস নেমার পারবে।’’
বিশ্ব ফুটবলে ব্রাজিলীয় ঘরানার বিশেষত্ব নিয়ে নতুন কিছু বলার থাকতে পারে না। তিতের এখনকার দলেও প্রতিভার সমাহার। নেমার, ফিলিপে কুটিনহো, গ্যাব্রিয়েল জেসুসদের হাতেই পেলের দেশের ফুটবল ঘরানার ব্যাটন। যদিও থিয়াগোর বক্তব্য, ‘‘অতীতে আমাদের যা সাফল্য তাকে ছাপিয়ে যেতে অনেকটা রাস্তা যেতে হবে। যদিও প্রত্যেকে প্রজন্মের নিজস্ব স্টাইল থাকে। আমাদের এই দলটারও আছে। সে দিক থেকে দেখলে আমাদের সঙ্গে অতীতের সেরা দলগুলোকে মিলিয়ে ফেলা যায় না।’’ সঙ্গে যোগ করলেন, ‘‘তুলনায় বিশ্বাস করি না। প্রতিটি প্রজন্ম আলাদা। এখন এই দলটার একটাই লক্ষ্য। ব্রাজিল ফুটবলের ইতিহাসে নতুন কিছু করে দেখানো।’’
‘নতুন কিছু’ মানে কি বিশ্বকাপ জেতা নয়? থিয়াগোর জবাব, ‘‘হ্যাঁ বিশ্বকাপ জেতা লক্ষ্য। চেষ্টাও করছি। কিন্তু পারব কি না কথা দেওয়া অসম্ভব। এটা বলতে পারি যে লক্ষ্য থেকে আমরা খুব বেশি দূরে নই।’’
বিশ্বকাপের আগে ব্রাজিল আরও দু’টি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে। সিলভার ধারণা, এই সব ম্যাচ প্রস্তুতিকে পূর্ণতা দেবে। ‘‘বছরের পর বছর ধরে উন্নতি করছি। বাড়ছে অভিজ্ঞতাও। আমি নিজে যেমন, জীবনের সেরা ফর্মে আছি। আমার বয়স ৩৩। কিন্তু নিজেকে এখনও শিশু ভাবি। আসলে তিতে আসার পরই মানসিকতা পাল্টে গিয়েছে। বলতে গেলে সব ম্যাচেই দারুণ খেলছি। অসাধারণ খেলাটাই আমাদের এত প্রস্তুতির লক্ষ্য।’’ ইংল্যান্ডে ব্রাজিলের প্রস্তুতি শিবিরে বসে বললেন থিয়াগো সিলভা।
এ দিকে, বিশ্বকাপের সময় ব্রাজিল থাকবে সোচিতে। নিরাপত্তায় সাঙঘাতিক কড়াকড়ি সেখানে। এখানেই সোভিয়েত জমানায় রাষ্ট্রনায়করা ছুটি কাটাতেন। ভ্লাদিমির পুতিন সরকার অবশ্য ব্রাজিলের ফুটবলারদের স্ত্রী ও বান্ধবীদের কাছাকাছিই থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছে। অবশ্য স্ত্রী-বান্ধবী ও তাঁদের ছেলেমেয়েদের বিমান যাত্রা থেকে শুরু করে বাকি সব কিছু খরচ ভাগাভাগি হচ্ছে। অর্ধেক দিচ্ছে ব্রাজিলের ফুটবল ফেডারেশন। বাকিটা ফুটবলারদের নিজেদের পকেট থেকে খরচ করতে হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy