রাফায়েল নাদাল কি শেষ?
বৃহস্পতিবার উইম্বলডনের দ্বিতীয় রাউন্ডে অপ্রত্যাশিত হারের পর প্রশ্ন তুলছে টেনিসবিশ্ব। জিজ্ঞাসা করছে, সর্বোচ্চ স্তরের কি নাদালের আর না নামাই ভাল? না কি এটাই তাঁর শেষ উইম্বলডন? টেনিস কিংবদন্তি জন ম্যাকেনরো তো রেগেমেগে বলেই ফেলেছেন, ‘‘ওহে নাদাল, দয়া করে এ বার নতুন একজন কোচ আনো!’’
এক দশকেরও বেশি স্প্যানিশ এই তারকা ‘ম্যাটাডর’ হিসেবে অভিহিত। কারণ স্বদেশীয় বুল-ফাইটারদের মতোই অপ্রতিরোধ্য, দানবীয় ছিল তাঁর সেরা টেনিস। কিন্তু তাঁর ভীষণ পছন্দের ক্লে কোর্টে জঘন্য ইউরোপীয় দৌড়-উত্তর তাঁকে মোটেও দুর্নিবার দেখাচ্ছে না। বরং নাদালকে দেখাচ্ছে ক্লান্ত, অবসন্ন এক পথিকের মতো।
সমালোচকেরা তুলে ধরছেন দুটো ম্যাচ। এ বারের উইম্বলডনে একই দিনে, একই কোর্টে কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে ঘটা দুটো ম্যাচ। প্রথমটা তেত্রিশ বছরের রজার ফেডেরার জিতে নেন অনায়াসে, তাঁর ভক্তদের নতুন স্বপ্নের সন্ধান দিয়ে। মার্কিন প্রতিপক্ষ স্যাম কোয়েরিকে সাত বারের উইম্বলডন জয়ী ফেডেক্স যে শটটা মেরেছেন, ইন্টারনেট জুড়ে তার ছবি।
অন্য ম্যাচটা? রাফায়েল নাদাল বনাম ডাস্টিন ব্রাউন। যে নাদালকে ফেডেরারের ব্যক্তিগত ‘যমদূত’ বলে মনে করত টেনিসমহল, যে নাদাল ৩৩ ম্যাচে ফেডেরারকে হারিয়েছেন ২৩ বার, উইম্বলডনের সেন্টার কোর্ট কি আদৌ সেই নাদালকে দেখল? এই নাদালকে দেখে অপরাজেয় মনে হবে না। আর তিনি যে অপরাজেয় নন, সেটা প্রমাণ করে দিলেন এমন এক জন, বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ের প্রথম একশোয় যাঁর জায়গা নেই!
পরপর চারটে উইম্বলডনে এই নিয়ে চার বার এমন অঘটনের সাক্ষী থাকতে হল নাদালকে। লুকাস রসল, স্টিভ ডার্সিস আর নিক কিরগিওসের পরে নাদাল-ঘাতকের ক্রমবর্ধমান তালিকায় নাম লিখিয়ে ফেললেন অখ্যাত ব্রাউন। চার সেটে হারিয়ে দিলেন মায়োর্কার ম্যাটাডরকে।
কিন্তু এই ফলাফল কি আদৌ আর অঘটনের আখ্যা পাবে? নাদাল-নিন্দুকেরা তো বলতে শুরু করে দিয়েছেন, এটাই শেষের শুরু। অন্তত উইম্বলডনে তো বটেই। এই নাদাল কি সেই নাদাল, যিনি টানা পাঁচ বার উইম্বলডন ফাইনালে খেলেছেন? এই নাদাল কি সেই নাদাল, যিনি ২০০৮-এ তর্কযোগ্য ভাবে সর্বকালের সেরা ফাইনালে পাঁচ সেটে ফেডেরারকে হারিয়েছিলেন?
হলটা কী নাদালের? বিশেষজ্ঞদের মতে, তাঁর বর্তমান বিপর্যয়ের জন্য অনেকটাই দায়ী চোট-আঘাত। গত বছরই যেমন কবজির চোট আর অ্যাপেন্ডিক্স অস্ত্রোপচারের জন্য ছ’মাস কোনও টুর্নামেন্টেই খেলতে পারেননি নাদাল। তার পর নাদালকে দেখে অনেক প্রাক্তন তারকারই মনে হয়েছে, তাঁর খেলায় আগেকার ধারটা আর নেই। গত মাসে যার হাতেগরম প্রমাণও পাওয়া গিয়েছে। ফরাসি ওপেনের ক্লে কোর্ট, যে কোর্ট তাঁকে ন’টা গ্র্যান্ড স্ল্যাম খেতাব দিয়েছে, সেখানে কোয়ার্টার ফাইনালেই নাদাল হেরে গিয়েছেন নোভাক জকোভিচের কাছে।
অনেকে মনে করেন, জকোভিচের কাছে হারে কোনও লজ্জা নেই। কিন্তু ঘটনা হল, সেই ম্যাচে মাত্র দেড় ঘণ্টা লড়ার পরই মুছে গিয়েছিলেন নাদাল। শক্তি আর দাঁতে দাঁত চেপে পড়ে থাকার ক্ষমতা— নাদালের টেনিসের দুটো বৈশিষ্টই তাঁর প্রিয় সারফেসে বিশ্বাসঘাতকতা করে নাদালের সঙ্গে। এবং মনে রাখতে হবে, তখন কোনও চোট ছিল না নাদালের। পুর্ণ ফিটনেস নিয়ে নেমেছিলেন তিনি।
সব দেখেশুনে বিশেষজ্ঞদের মনে হচ্ছে, এ বছরটা আর বড় কোনও ট্রফি উঠবে না নাদালের হাতে। নাদাল নিজেও স্বীকার করে নিচ্ছেন, নিজের ভবিষ্যৎ মোটেও উজ্জ্বল দেখাচ্ছে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy