কলকাতার একটি পিক্লবল কোর্টে চলছে মিক্সড ডাবলসের খেলা। ছবি: সংগৃহীত।
আশিস জয়সওয়াল, অনিমেষ গান্ধী, অঙ্কিত ঝুনঝুনওয়ালা ও গৌরব গুপ্ত। চার জনের বন্ধুত্ব ছোটবেলা থেকে। স্কুল, কলেজের গণ্ডি পার হওয়ার পরেও সেই বন্ধুত্ব রয়েছে। কর্মক্ষেত্রে ঢুকে পড়ার পর কাজের চাপে দেখা কম হত। কিন্তু গত কয়েক মাসে তা আবার বেড়েছে। বাড়িয়ে দিয়েছে একটি খেলা। পিক্লবল। এই খেলার মধ্যে দিয়েই প্রতি সপ্তাহে অন্তত এক বার দেখা করেন তাঁরা। নেমে পড়েন কলকাতার পার্ক স্ট্রিটের একটি কোর্টে। খেলার পাশাপাশি চলে হাসিঠাট্টা, গল্প। অনেকটা একই গল্প সুরানা পরিবারের। সপ্তাহান্তে শনি বা রবিবার সন্ধ্যায় পরিবারের তিন প্রজন্মকে একসঙ্গে দেখা যায় মাঝেরহাটের একটি কোর্টে। সেখানে খেলার নিয়ম ততটা গুরুত্ব পায় না। যা পায় তা হল নিখাদ আনন্দ। মজা করে সময় কাটানো। আর সেই কারণেই কলকাতায় ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে পিক্লবল। এই খেলা অনেকটা টেনিসের মতো। শুধু টেনিস নয়, মিল রয়েছে ব্যাডমিন্টনের সঙ্গেও। একেবারে অন্য রকমের একটা খেলা। যে খেলা শুধু খেলা নয়, খেলার বাইরে বিনোদনের একটি মাধ্যম হয়ে উঠছে।
খেলতে পারে আট থেকে আশি
সাধারণত প্রতিটি খেলার একটা নির্দিষ্ট বয়স থাকে। সে ক্রিকেট, ফুটবল থেকে শুরু করে টেনিস বা ব্যাডমিন্টনই হোক না কেন। কিন্তু পিক্লবল খেলার কোনও বয়স নেই। যে হেতু এখনও সে ভাবে পেশাদার হয়ে ওঠেনি এই খেলা, তাই যে কোনও বয়সের মানুষ হাতে প্যাডল তুলে নিচ্ছেন। টিশার্ট, শর্টস আর পায়ে স্নিকার থাকলেই চলবে। আর কিছু দরকার নেই। ৭২ বছরের প্রবীণ প্রশান্ত সুরানা বললেন, “প্রথম বার ইউটিউবে দেখেছিলাম এই খেলা। বেশ ভাল লেগেছিল। কয়েক মাস আগেও কলকাতায় খেলার তেমন কোর্ট ছিল না। এখন আছে। প্রথমে একাই আসতাম। ধীরে ধীরে ছেলে, নাতি-নাতনিরাও আসা শুরু করল। এখন সকলে মিলে খেলি। শনি বা রবিবার আমরা খেলবই। যতই কাজ থাকুক, একটা সময় ঠিক বার করি।”
কোর্ট জুড়ে দৌড়ে বেড়াচ্ছিল ছোট্ট অনন্যা ও রোহন। ভাইবোন। বাবার সঙ্গে খেলতে চলে আসে। এখনও খেলায় পোক্ত হয়নি। তাতে কী? বাবা দীপক বেরা সরকারি চাকুরে। তাই ছুটির দিন ছাড়া ছেলেমেয়েকে আনতে পারেন না। অনন্যা ও রোহনও অপেক্ষা করে থাকে কবে খেলতে যাবে। দীপক বললেন, “ওরা মজা করে। দৌড়দৌড়ি করে। এখন তো মাঠ কমে যাচ্ছে। কোর্টেই ওরা খেলে। ওদের দেখে আমার ভাল লাগে।”
স্কোয়াশ, ক্রিকেটের জায়গায় হাতে উঠছে প্যাডল
অনিমেষ আগে স্কোয়াশ খেলতেন। তবে গত তিন মাস ধরে তিনি পিক্লবল খেলছেন। এই সহজ খেলা মনে ধরেছে তাঁর। অনিমেষ বললেন, “আগে নিয়মিত স্কোয়াশ খেলতাম। কিন্তু ওই খেলায় অনেক নিয়ম। চাইলেই যে কেউ খেলতে পারে না। খরচও বেশি। তাই এখন বন্ধুদের সঙ্গে পিক্লবল খেলি।” ক্রিকেটপ্রেমী অঙ্কিত আবার পছন্দ করেন প্যাডল দিয়ে বল মারার শব্দ। তিনি বললেন, “যখন বল মারি তখন মনে হয় যেন ব্যাট দিয়ে শট মারছি। ঠিক একই রকম আওয়াজ হয়। এখন অনেক কিছু শিখছি। কী ভাবে বলে স্পিন আনতে হয়, কী ভাবে ভলি বা ড্রপ শট খেলা যায়, সেই চেষ্টা করছি। যখন সেগুলো মারতে পারি, খুব ভাল লাগে।”
বদলাচ্ছে বিনোদনের মাধ্যম?
সকলে মিলে সপ্তাহান্তে সিনেমা দেখতে যাওয়া বা রেস্তরাঁয় খেতে যাওয়ার চল কি কিছুটা হলেও বদলেছে? প্রশান্ত জানালেন, আগে মাধেমধ্যেই পরিবারের সকলে মিলে রেস্তরাঁয় খেতে যেতেন। কখনও আবার সিনেমা দেখতে যেতেন। কিন্তু এখন নাকি পরিবারের কেউ আর সে কথা বলে না। সকলে মিলে খেলতে যান। প্রশান্ত বললেন, “আসলে নতুন কিছুর আনন্দ আলাদা। এই খেলাটা আমাদের সেই আনন্দ দিয়েছে। এক দিকে মজা হচ্ছে, আবার সামান্য শরীরচর্চাও হচ্ছে। তাই আরও ভাল লাগছে।” এই খেলা যে কোর্টে হয় তার আকার টেনিসের থেকে কম হওয়ায় এক জায়গায় অনেকে খেলতে পারেন। তা হলে কি টেনিসের পক্ষে এই খেলা অশনি সঙ্কেত? তেমনটা মনে করেন না প্রাক্তন গ্র্যান্ড স্ল্যাম খেলোয়াড় তথা ডেভিস কাপার বাংলার জয়দীপ মুখোপাধ্যায়। তিনি বললেন, “পিক্লবল কখনওই টেনিসের বিকল্প হতে পারে না। কোনও সম্ভাবনাই নেই। পিক্লবল জনপ্রিয় হচ্ছে। পরিবার নিয়ে সকলে একসঙ্গে খেলতে পারছে। মজা করছে। এই খেলায় বিনোদন আছে। কিন্তু টেনিসের বিকল্প হতে পারে না। আমার মনে হয় আগামী ১০০ বছরেও পিক্লবল টেনিসের বিকল্প হতে পারবে না।”
কলকাতায় বাজার বাড়ছে পিক্লবলের, বাড়ছে বিনিয়োগ
কলকাতায় পিক্লবলের বাজার বাড়ছে। পঞ্জাব ক্লাব, স্ট্যাডেল, আরসিটিসি, আরসিজিসি, কসমোপলিটন ক্লাবের মতো ক্লাবে পিক্লবলের কোর্ট হয়েছে। তা ছাড়া পার্ক স্ট্রিটে দ্য পিক্ল কোর্ট, ভবানীপুর ও মাঝেরহাটে স্কোরিনা পিক্লবল এরিনা রয়েছে। দ্য পিক্ল কোর্টের মালিক আরিয়ান বাজোরিয়া ও অমৃতা বাঙুর বাজোরিয়া জানালেন তাঁরা এমন একটি খেলায় বিনিয়োগ করতে চেয়েছিলেন যেটি বয়সভিত্তিক নয়। সব বয়সের লোকেরা খেলতে পারেন। সেই ভাবনা থেকেই এই কোর্ট চালু করেছেন। আপাতত পার্ক স্ট্রিটে একটি কোর্ট রয়েছে। আরিয়ান বললেন, “কলকাতায় এই খেলার জনপ্রিয়তা বাড়ছে। আসলে সব বয়সের মানুষ খেলতে পারেন এমন খেলার সংখ্যা তো কম। সেই কারণেই হয়তো এই খেলার দিকে মানুষ ঝুঁকছেন। আমাদের এই কোর্ট নতুন। এক মাস শুরু হয়েছে। কিন্তু এর মধ্যেই সকলে চিনে ফেলেছেন। প্রতি দিন খেলতে আসেন।”
স্কোরিনা পিক্লবল এরিনার মালিক প্রদীপ চুড়িওয়াল। বহু বাংলা ছবির প্রযোজক তিনি। পাশাপাশি খেলাধুলোতেও উৎসাহ রয়েছে। তিনি বললেন, “আমিই কলকাতায় এই খেলা শুরু করেছি। দুবাইয়ে পিক্লবল দেখেছিলাম। গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে কলকাতায় শুরু করি। মাঝেরহাটে প্রথমে দুটো কোর্ট ছিল। বাংলায় পিক্লবল সংস্থার সঙ্গেও আমি যুক্ত। আরও ছ’টা কোর্ট খুব তাড়াতাড়ি শুরু হবে। আউটডোর, ইন্ডোর দুই রকমের কোর্টই রয়েছে। ভবানীপুরেও আমার একটা কোর্ট আছে। আরও কোর্ট বাড়বে।”
কী ভাবে খেলা যাবে কলকাতার এই সব কোর্টে?
দ্য পিক্ল কোর্ট বা স্কোরিনা পিক্লবল এরিনার ওয়েবসাইটে গিয়ে অনলাইনে বুক করা যায়। কখন খেলতে চান সেই সময় বুক করতে হয়। এক বার বুক করা হয়ে গেলে নির্দিষ্ট সময় সেখানে পৌঁছে গেলেই নেমে পড়তে পারবেন কোর্টে।
খরচ কত?
ঘণ্টা প্রতি টাকা দিতে হয়। তবে খরচের তারতম্য রয়েছে। দ্য পিক্ল কোর্টে এক ঘণ্টায় খেলার সবচেয়ে কম খরচ ১২০০ টাকা। সবচেয়ে বেশি ২০০০ টাকা। ভোর ৫টা থেকে রাত ২টো পর্যন্ত খেলা হয়। আরিয়ান বললেন, “সারা দিন ধরে খেলা হলেও সন্ধ্যা ও রাতেই বেশি লোক আসেন।” স্কোরিনা এরিনায় সময়ের পাশাপাশি কোর্টের উপরেও দাম নির্ভর করছে। প্রদীপ বললেন, “প্রতি ঘণ্টায় সবচেয়ে কম খরচ ১০০০ টাকা। ১৫০০, ১৮০০, ২২০০ টাকার কোর্টও আছে। পাশাপাশি অনেকগুলো কোর্ট আছে। মাঝের কোর্টের খরচ বেশি। পাশের দিকের কোর্টের খরচ কম। অনেকে আবার ইন্ডোরে এসি চালিয়েও খেলতে চান। সে ক্ষেত্রে ঘণ্টায় ২২০০ টাকা দিতে হবে।” সারা দিন ধরেই খেলা চলে। তবে সকাল ৬টা থেকে ৯টা ও বিকাল ৫টা থেকে রাত ২টো অবধি খেলা বেশি হয়।
বল কোর্ট থেকে দেওয়া হলেও বেশির ভাগ খেলোয়াড় নিজেদের প্যাডল নিয়ে আসেন। কলকাতার প্রায় সব খেলার সরঞ্জাম বিক্রির দোকানে এই প্যাডল পাওয়া যায়। দাম ৮০০ টাকা থেকে শুরু। ১৫০০ টাকার মধ্যে ভাল প্যাডল পাওয়া যায়। তবে তার থেকে বেশি দামেরও প্যাডল রয়েছে। কোন সংস্থার প্যাডল কিনবেন তার উপর দাম নির্ভর করছে।
কারা খেলতে আসেন?
প্যাডল কোর্টগুলিতে গিয়ে অবাঙালিদের দেখা বেশি মিললেও মালিকেরা বলছেন, বাঙালিদের মধ্যেও এই খেলার জনপ্রিয়তা বাড়ছে। অমৃতা বলেন, “বাঙালি, অবাঙালি ভাগ করব না। তবে বলতে পারি, শিক্ষিত ও কর্মজীবী তরুণ-তরুণীদের মধ্যে এই খেলার জনপ্রিয়তা বেশি। আমাদের কোর্টে দিনে ৩০ থেকে ৪০ জন গড়ে খেলতে আসেন। ছুটির দিনে সংখ্যাটা বাড়ে।”
প্রদীপ জানালেন, তাঁর কোর্টে শিল্পপতি, আমলা ও বেসরকারি সংস্থার কর্মীরাও অনেকে খেলতে আসেন। এমন অনেক আসেন যাঁরা আগে টেনিস বা স্কোয়াশ খেলতেন। প্রদীপের কথায়, “এই খেলার প্রধান সুবিধা হল কোর্ট। টেনিসের থেকে ছোট। ফলে শরীরের উপর ধকল কম পড়ে। এখন অনেক প্রতিযোগিতা আয়োজন করা হচ্ছে। আমাদের মাঝেরহাটের অ্যাকাডেমিতেও প্রতিযোগিতা হবে এই মাসে। খেলোয়াড় বাড়ছে বলেই এটা হচ্ছে।”
কলকাতায় পিক্লবলের ভবিষ্যৎ
যে হারে জনপ্রিয়তা বাড়ছে তাতে আগামী দিনে এই খেলায় আরও অনেকে ঝুঁকবেন বলেই মনে করছেন অমৃতা, প্রদীপেরা। সেই কারণে তাঁরাও ভবিষ্যতের কথা ভাবছেন। অমৃতা বললেন, “আমরা আরও কয়েকটা কোর্ট তৈরি করব। কথা এগিয়েছে। ইন্টারনেটের যুগে এই খেলার বিষয়ে সকলে জানতে পারছে। প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। আশা করছি আগামী দিনে সব ধরনের মানুষ এই খেলা শুরু করবেন।” প্রদীপও সেটাই মনে করেন। তিনি বললেন, “এই খেলা অনেক সহজ হওয়ায় মানুষ বেশি করে খেলতে আসছে। যে ভাবে কলকাতায় প্রতিযোগিতা বাড়ছে তাতে এই খেলার ভবিষ্যৎ ভাল। আমরা শুরু থেকেই এই খেলার সঙ্গে যুক্ত। আগামী দিনেও পথ দেখাব।”
কলকাতার পাশাপাশি ভারতেও জনপ্রিয় এই খেলা
কলকাতার পাশাপাশি গোটা দেশে এই খেলার জনপ্রিয়তা বাড়ছে। ২০১৯ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে এই খেলায় যোগ দেওয়া খেলোয়াড়ের সংখ্যা ১৫৯ শতাংশ বেড়েছে। ক্রীড়াপ্রযুক্তি সংস্থা ‘হাডল’-এর প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও সুহেল নারাইন বলেন, “পিক্লবলের যা জনপ্রিয়তা দেখছি তাতে আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে এই খেলা প্রতিটি বাড়িতে ছড়িয়ে পড়বে। শুধু বড় শহর নয়, ছোট শহরেও এই খেলার জনপ্রিয়তা বাড়ছে।” চলতি বছর ভারতে পিক্লবলের প্রথম পেশাদার প্রতিযোগিতা শুরু হচ্ছে। নাম ‘ওয়ার্ল্ড পিক্লবল লিগ’। প্রাক্তন ডেভিস কাপার গৌরব নাটেকর ও সোনি এন্টারটেনমেন্টের উদ্যোগে এই প্রতিযোগিতা শুরু হচ্ছে। ছ’টি দল খেলবে এই প্রতিযোগিতায়। প্রতি দলে পাঁচ থেকে আট জন থাকবেন। ভারতীয় প্রতিযোগীর পাশাপাশি বিদেশি প্রতিযোগীদেরও দেখা যাবে।
৫৯ বছরের পুরনো খেলা এই পিক্লবল
১৯৬৫ সালে আমেরিকার বেনব্রিজ আইল্যান্ডে বিল বেল ও জোয়েল প্রিচার্ড নামের দুই ব্যক্তি এই খেলা শুরু করেন। সন্তানদের আনন্দের জন্য এই অদ্ভুত খেলা শুরু করেছিলেন তাঁরা। কিন্তু তখন তাঁদের কাছে ভাল প্যাডল ছিল না। সেখানকারই এক বাসিন্দা বার্নে ম্যাককুলাম এই প্যাডল তৈরি করে তাঁদের দেন। সেই থেকে এই খেলা শুরু। তার নাম পিক্লবল হওয়ার পিছনেও একটি মজার গল্প রয়েছে। বিল ও জোয়েলের একটি পোষ্য সারমেয় ছিল। তার নাম পিক্ল। খেলার মাঝে যখনই বল কোর্টের বাইরে চলে যেত সেই সারমেয় বল মুখে করে নিয়ে আসত। সেই থেকে এই খেলার নাম পিক্লবল। সেই সময় আমেরিকার কয়েকটি প্রদেশেই এই খেলা সীমাবদ্ধ ছিল। এত নিয়মও ছিল না। ধীরে ধীরে তা জনপ্রিয় হয়েছে।
খেলার নিয়ম
পিক্লবল এক ধরনের খেলা যা র্যাকেটের বদলে প্যাডল দিয়ে খেলা হয়। টেনিসের সঙ্গে তার মিল রয়েছে। কারণ, খেলাটি হয় কোর্টে। তবে টেনিস কোর্টের থেকে আকার ও আয়তনে ছোট হয় পিক্লবল কোর্ট। এই খেলায় যে বল ব্যবহার করা হয় তা পিংপং বলের থেকে কিছুটা বড়। তাতে অজস্র ফুটো থাকে।
দু’জন বা চার জন এই খেলা খেলতে পারেন। এ ক্ষেত্রে সার্ভিস করতে হয় আন্ডারহ্যান্ড। অর্থাৎ, হাত কোমরের উপরে ওঠানো যাবে না। সার্ভিসের সময় কেউ চাইলে কোর্টে এক বার ড্রপ খাইয়ে সার্ভিস করতে পারেন। কেউ চাইলে সরাসরি করতে পারেন। সার্ভিস করার পর বল যেন প্রতিপক্ষ খেলোয়াড়ের কোর্টেই পড়ে। এ ক্ষেত্রে সাইডলাইনে একটিই লাইন থাকে। টেনিস বা ব্যাডমিন্টনের মতো দু’টি লাইন থাকে না। সার্ভিস রিটার্নের ক্ষেত্রে প্রথম বার বল যেন দুই কোর্টেই অন্তত এক বার করে ড্রপ খায়।
এই খেলায় সার্ভিস করা খেলোয়াড় বা দল যদি পয়েন্ট না পায় তা হলে সার্ভিস প্রতিপক্ষের হাতে যায়। কিন্তু যে দল সার্ভিস করছে তারাই একমাত্র পয়েন্ট পাবে। প্রতিপক্ষ দল সেই র্যালি জিতলেও পয়েন্ট পাবে না। সার্ভিস হাত বদল হবে শুধু। ১১ পয়েন্টের খেলা হয়। জিততে হলে ২ পয়েন্টের ব্যবধান থাকতে হবে। সিঙ্গলসের ক্ষেত্রে পাঁচ ও ডাবলসের ক্ষেত্রে সাত গেমের ম্যাচ হয়।
র্যালি চলাকালীন ভলি, ড্রপ শট, স্ম্যাশ সব মারা যাবে। কিন্তু নেটের দু’ধারে কিছুটা জায়গা লাইন করা থাকে। তাকে বলে ‘কিচেন’। সেই এলাকায় পা দিয়ে ফেললে ফাউল। সেই লাইনের কাছে দাঁড়িয়ে খেলতে হলে এমন ভাবে মারতে হবে যাতে বল প্রতিপক্ষের কোর্টে এক বার অন্তত ড্রপ খায়। অর্থাৎ, সেখানে দাঁড়িয়ে খুব জোরে শট খেলা যায় না। এই খেলায় গতি বা শক্তির থেকে বুদ্ধির প্রয়োজন বেশি। ফলে যে কোনও বয়সের লোকই পিক্লবল খেলতে পারেন।
পিক্লবলের জনপ্রিয়তা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন নোভাক জোকোভিচ। ২৪ গ্র্যান্ড স্ল্যামের মালিকের ভয়, কোনও দিন না এই খেলা টেনিসের জায়গা নিয়ে নেয়। অবশ্য তিনি নিজেও গত বছর একটি প্রতিযোগিতায় প্যাডল হাতে নিয়েছিলেন। ভারতের রোহন বোপান্না, সানিয়া মির্জ়ারাও এই খেলা খেলেছেন। তারকারাও কোর্টে নামছেন। অর্থাৎ, এই খেলার একটি টান রয়েছে। কলকাতাতেও সেটাই দেখা যাচ্ছে। ১২ বছরের অনন্যা, ২৮ বছরের অঙ্কিত বা ৭২ বছরের প্রশান্তেরা কোর্টে নেমে সেই জনপ্রিয়তায় সিলমোহর দিচ্ছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy