Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪

পঁয়ত্রিশ ডিগ্রি তাপমাত্রায় নন-এসি রুমে বিরাটদের সাদর অভ্যর্থনা!

যে হোটেলে প্রথমে ভারতীয় দলকে তোলা হয়েছিল, সেখানে এমনকি ছিল না কোনও এয়ারকন্ডিশনের ব্যবস্থাও। ইংল্যান্ডে ঠান্ডা থাকলে হয়তো এসি ছাড়াও চালিয়ে দেওয়া যায়। কিন্তু এ বারে কার্যত দাবদাহ চলছে গোটা ইংল্যান্ড জুড়ে।

প্রস্তুতি ম্যাচ খেলতে গিয়ে অব্যবস্থার মুখে বিরাট বাহিনী। —ফাইল চিত্র।

প্রস্তুতি ম্যাচ খেলতে গিয়ে অব্যবস্থার মুখে বিরাট বাহিনী। —ফাইল চিত্র।

সুমিত ঘোষ
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ জুলাই ২০১৮ ০৪:১৪
Share: Save:

পাড়ার মাঠের মতো এবড়োখেবড়ো আউটফিল্ড আর পুরু সবুজ ঘাসে মোড়া পিচ দিয়েই শুধু নয়। চেমসফোর্ডে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলতে যাওয়া বিরাট বাহিনীর জন্য অপেক্ষা করছিল আরও অনেক ‘সাদর অভ্যর্থনা’।

যে হোটেলে প্রথমে ভারতীয় দলকে তোলা হয়েছিল, সেখানে এমনকি ছিল না কোনও এয়ারকন্ডিশনের ব্যবস্থাও। ইংল্যান্ডে ঠান্ডা থাকলে হয়তো এসি ছাড়াও চালিয়ে দেওয়া যায়। কিন্তু এ বারে কার্যত দাবদাহ চলছে গোটা ইংল্যান্ড জুড়ে। পঁয়ত্রিশ ডিগ্রি তাপমাত্রায় অনেক জায়গাতেই মনে হচ্ছে ‘ইন্ডিয়ান সামার’ চলছে।

এ রকম পরিবেশে নন-এসি রুমে থাকার ব্যবস্থা হয়েছে দেখে আঁতকে ওঠেন ক্রিকেটারেরা। বিশেষ করে ছ’ঘণ্টা ধরে মাঠে খেলার পরে হোটেলে ফিরে এই গরমের মধ্যে যদি নন-এসি রুমে থাকতে হয়, তা হলে কী গলদঘর্ম অবস্থা হতে পারে, সেই কথা ভেবে আঁতকে ওঠেন সকলে। ভারতীয় বোর্ডের তরফে যোগাযোগ করা হয় ইংল্যান্ড এবং ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে। তড়িঘড়ি হোটেল পাল্টানোর ব্যবস্থা হয়।

কিন্তু তাতেও খুব বেশি সুরাহা হয়নি কারণ, বিরাটদের এ বার ঠেলে দেওয়া হয় দূরের এক হোটেলে। চেমসফোর্ডের যে মাঠে এসেক্সের বিরুদ্ধে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলতে হবে, হোটেল থেকে সেখানে আসতে লাগবে এক ঘণ্টা মতো। মানে বাসে এক ঘণ্টা ধরে যাত্রা করে প্র্যাক্টিস ম্যাচ খেলতে যাও, তার পর প্রায় আট ঘণ্টা মাঠে কাটিয়ে আবার এক ঘণ্টা ধরে বাসে করে ফেরো। ভারতীয় বোর্ড সূত্রে খবর, দূরের এই হোটেলে তবু থাকতে রাজি হন ভারতীয় ক্রিকেটারেরা। তার পরেই বোর্ড থেকে ইংল্যান্ড বোর্ডকে জানানো হয়, ঠিক আছে, এখানে থাকতে আপত্তি নেই। বোর্ডের এক কর্তার কথায়, ‘‘আমাদের ক্রিকেট দল থাকতে না চাইলেও ওদের কিছু বলার ছিল না। অন্য ব্যবস্থা করে দিতেই হত। কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকাতে গিয়ে যেমন বিরাটরা সবুজ পিচ নিয়ে কখনও প্রশ্ন তোলেনি, এখানেও বেশি হইহল্লা বাধাতে চায় না।’’ তিনি যোগ করেন, ‘‘ওই গরমের মধ্যে নন-এসি রুমে থাকা একেবারে সম্ভব নয় বলেই ওরা আপত্তি তুলেছিল। না হলে সেটাও করত না।’’ শোনা গেল, নন-এসি রুমের সেই হোটেলের কর্তৃপক্ষ নাকি ক্রিকেটারদের বলে, ‘‘আপনারা থাকুন। ফ্যান লাগিয়ে দিচ্ছি।’’ পঁয়ত্রিশ ডিগ্রি গরমে ফ্যান লাগিয়েও যে কিছু হবে না, সেটা তৎক্ষণাৎ হোটেল কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দেওয়া হয়।

তবু ক্রিকেটারেরা মনে করেছিলেন, যা হয়েছে, হয়েছে। খেলতে এসেছি, খেলার জায়গাটা ঠিক থাকলেই হবে। ভারতীয় দলের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে যায় মঙ্গলবার চেমসফোর্ডের মাঠের পরিস্থিতি দেখে। আউটফিল্ডে চাপড়া-চাপড়া ঘাস ওঠা। এক বার পড়লেই চোট-আঘাতের আশঙ্কা রয়েছে। এমনিতেই ভুবনেশ্বর কুমার, যশপ্রীত বুমরা চোট পেয়ে বাইরে। আবার নতুন করে কেউ আঘাত পেলে টেস্ট সিরিজ শুরুর আগেই পিছিয়ে পড়বেন কোহালিরা। সেই ঝুঁকি কেউ নিতে চাননি। পরিষ্কার বলে দেওয়া হয়, এ রকম আয়োজন আর পরিস্থিতির মধ্যে চার দিনের ম্যাচ খেলা যাবে না। প্রস্তুতি ম্যাচকে তিন দিনের করতে হবে। দুই বোর্ডের মধ্যে আলোচনা হওয়ার পরে একটা দিন বাতিল করা হয়। সেই অতিরিক্ত দিনটাকে কাজে লাগিয়ে বার্মিংহামে প্রথম টেস্টের প্রস্তুতি সারতে চান বিরাটরা। রাতের দিকে এসেক্সের পক্ষ থেকে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়, প্রস্তুতি ম্যাচ চার দিনের জায়গায় তিন দিনের করা হচ্ছে।

বিরাটদের জন্য এমন অতিথি বরণের আয়োজন হয়েছে শুনে ভারতীয় বোর্ড মহলে কেউ কেউ বলে ফেলছেন, ‘‘ইংল্যান্ড যখন আমাদের দেশে খেলতে এসেছিল, আমরা লাল কার্পেট বিছিয়ে দিয়েছিলাম। ব্রেবোর্নে ক্রিকেট ক্লাব অব ইন্ডিয়ার পৃষ্টপোষকতায় ওদের তৈরি হওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। এ সব এ বার বন্ধ হওয়া দরকার।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Cricket Virat Kohli India-England
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE