Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

কোহালির ব্যঙ্গবাণ

অস্ট্রেলিয়ার মাঙ্কিগেটের পরে এ বার বেঙ্গালুরুতে কি ডিআরএসগেট? চিন্নাস্বামীতে ম্যাচ জিতেই অস্ট্রেলিয়াকে ছেড়ে দেয়নি বিরাট কোহালির ভারত। প্রশ্ন তুলে দিয়েছে তাঁদের সততা নিয়েও।

স্মিথদের আসল শক্তিশেলটা ছুড়লেন সেই কোহালিই। ছবি: সংগৃহীত।

স্মিথদের আসল শক্তিশেলটা ছুড়লেন সেই কোহালিই। ছবি: সংগৃহীত।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ মার্চ ২০১৭ ০৪:১৯
Share: Save:

অস্ট্রেলিয়ার মাঙ্কিগেটের পরে এ বার বেঙ্গালুরুতে কি ডিআরএসগেট?

চিন্নাস্বামীতে ম্যাচ জিতেই অস্ট্রেলিয়াকে ছেড়ে দেয়নি বিরাট কোহালির ভারত। প্রশ্ন তুলে দিয়েছে তাঁদের সততা নিয়েও। ডিআরএস নিয়ে স্মিথ-রা অন্যায় সুবিধে নেওয়ার চেষ্টা করছিলেন বলে গুরুতর অভিযোগ করেছেন কোহালি।

ঘটনার সূত্রপাত মঙ্গলবার স্টিভ স্মিথের আউট নিয়ে। এলবিডব্লিউ হওয়ার পরে স্মিথকে দেখা যায় পার্টনার পিটার হ্যান্ডসকম্বের দিকে এগিয়ে আসছেন। এর মধ্যে নাটকীয়তা কিছু নেই। যে কোনও ব্যাটসম্যানই আউট হলে অন্য প্রান্তে দাঁড়ানো সঙ্গীকে জিজ্ঞেস করেন, ডিআরএস নেবেন কি না।

সমস্যা হচ্ছে, এ ক্ষেত্রে হ্যান্ডসকম্বকে দেখা গিয়েছে স্মিথকে পরামর্শ দিচ্ছেন ওপরের দিকে ড্রেসিংরুমের দিকে তাকাতে। ঠোঁট নাড়ার ভঙ্গি দেখে মনে হয়েছে, হ্যান্ডসকম্ব তাঁর অধিনায়ককে বলতে চেয়েছেন ‘লুক আপ’। এর পর সত্যিই দু’জনে চেয়ে থাকেন অস্ট্রেলীয় ড্রেসিংরুমের দিকে।

ডিআরএস অর্থাৎ ডিসিশন রিভিউ সিস্টেম নিয়ে নিয়ম হচ্ছে, মাঠের মধ্যে দাঁড়িয়ে আউট হওয়া ব্যাটসম্যানকে ১৫ সেকেন্ডের মধ্যে সিদ্ধান্ত নিতে হয়, ‘রিভিউ’ নেবেন কি না। তিনি নন-স্ট্রাইকারের সঙ্গে পরামর্শ করতে পারেন। কিন্তু ড্রেসিংরুমের সাহায্য নেওয়া অবৈধ।

স্মিথ ড্রেসিংরুমের দিকে তাকাচ্ছেন দেখে দৌড়ে আসেন কোহালি। আম্পায়ার নাইজেল লং-এর দৃষ্টি আকর্ষণ করান সে দিকে। আম্পায়ার হস্তক্ষেপ করে স্মিথকে চলে যেতে বলেন। কোহালি বরাবরই আগ্রাসী প্রকৃতির। তাঁর মেজাজ হারানোর মধ্যে বিস্ময়ের কিছু নেই। কিন্তু স্মিথের কারবার দেখে চেতেশ্বর পূজারাকেও ক্ষিপ্ত দেখায়। হাত নেড়ে বলতে থাকেন, এটা কী হচ্ছে?

জয়োল্লাস: অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে দ্বিতীয় টেস্ট ম্যাচ জয়ের পরে মাঠে কোহালি বাহিনী । মঙ্গলবার বেঙ্গালুরুর চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে। রয়টার্স

ম্যাচ জেতার পরে সাংবাদিক সম্মেলনে এসে কোহালি ডিআরএস বিতর্কে ঘি ঢেলে আরও দাউদাউ করে আগুন জ্বালিয়ে দেন। অস্ট্রেলীয় অধিনায়ক স্মিথ জানিয়েছিলেন, আউট হয়ে তাঁর মাথা কাজ করছিল না। ‘‘এটা আমার করা উচিত হয়নি,’’ কিন্তু কোহালি তাঁর এই ব্যাখ্যা মানতে নারাজ। স্মিথের পরে সাংবাদিক সম্মেলনে এসে তিনি বলেন, ‘‘কীসের মাথা কাজ করছিল না? এটা তো ওরা করেই চলেছিল। আমি ব্যাট করার সময় দু’বার ওদের দেখেছি ড্রেসিংরুমের দিকে তাকাচ্ছে।’’

আরও পড়ুন:

লিয়েন্ডারকে আমি যতটা চিনি, কেউ তা চেনে না

কোহালি বুঝিয়ে দেন যে, তাঁরা তক্কে তক্কে ছিলেন। অস্ট্রেলীয়দের এই ফন্দি ধরবেন বলে। এটাকে কি জোচ্চুরি বলবেন? কোহালির জবাব, ‘‘এই শব্দটা কিন্তু আপনি বলছেন। আমি বলিনি।’’ ঘটনা আরও বেড়েছে ভারতীয় বোর্ডের সরকারি ওয়েবসাইটের সৌজন্যে। এই ঘটনার ভিডিও তুলে দিয়ে সেখানে শিরোনাম দেওয়া হয়েছে, ডিআরএস— ড্রেসিংরুম রিভিউ সিস্টেম?

কারও কারও মনে হচ্ছে, বাকি দুই টেস্টে ‘মাঙ্কিগেট’-এর সেই হরভজন-সাইমন্ডস অধ্যায়ের মতোই না অপ্রীতিকর হাওয়া এসে পড়ে। বেঙ্গালুরুতে অশ্বিন যতই দ্বিতীয় ইনিংসে ছয় উইকেট নিন। যতই কে এল রাহুল দুই ইনিংসে হাফ সেঞ্চুরি করে ম্যাচের সেরা হোন। স্মিথদের আসল শক্তিশেলটা ছুড়লেন সেই কোহালিই। ৭৫ রানে হারিয়ে সিরিজ ১-১। সঙ্গে সততা নিয়ে প্রশ্নের চাবুক। নাও অস্ট্রেলিয়া, খেলো এবার!

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE